আব্বাস-হাসান রাঙালেন কুকের রেকর্ডের দিন
ডিটেকটিভ স্পোর্টস ডেস্ক
অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতার প্রতিদান অসাধারণ মাইলফলকে। টানা সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলার রেকর্ড স্পর্শ করলেন অ্যালেস্টার কুক। রেকর্ডের দিনে ব্যাট হাতেও তিনি উজ্জ্বল। তবে লড়াইয়ে সঙ্গী পেলেন না তেমন কাউকে। ইংলিশ ওপেনারকে ছাপিয়ে প্রথম দিনের নায়ক দুই পাকিস্তানী পেসার মোহাম্মদ আব্বাস ও হাসান আলি।
অনভিজ্ঞ পাকিস্তান দলের বিপক্ষে ফেভারিট হয়েই সিরিজ শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু প্রথম দিনে দাপুটে ছিল পাকিস্তানই। বৃহস্পতিবার লর্ডস টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৮৪ রানেই গুটিয়ে গেছে ইংল্যান্ড। পাকিস্তান দিন শেষ করেছে ১ উইকেটে ৫০ রান নিয়ে।
এই ম্যাচের একাদশে থেকেই কুক নাম লিখিয়েছেন রেকর্ড বইয়ে। ছুঁয়েছেন অ্যালান বোর্ডারের টানা ১৫৩ টেস্ট খেলার রেকর্ড। দলের বিপর্যয়ে এক প্রান্ত আগলে খেলেছেন ৭০ রানের ইনিংস। কিন্তু আব্বাস ও হাসানের দারুণ বোলিংয়ে ধুঁকেছেন ইংল্যান্ডের বাকিরা।
লর্ডসের উইকেটে আছে ঘাসের ছোঁয়া। দিনের শুরুতে আকাশ ছিল ধূসর। টস জিতে এই চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশনেই ব্যাটিং নেওয়ার সাহস দেখিয়েছিলেন জো রুট। কিন্তু সেই সাহসের প্রতিফলন পড়েনি ইংলিশদের ব্যাটিংয়ে।
নতুন বলে মোহাম্মদ আমির ও আব্বাস নাড়িয়ে দেন ইংলিশ ব্যাটিং। বিশেষ করে আব্বাস ছিলেন দুর্দান্ত। ছোট ছোট সুইংয়ে তার বোলিং এই কন্ডিশনের জন্য ছিল আদর্শ। সঙ্গে এই পেসারের লাইন-লেংথও ছিল নিখুঁত। মার্ক স্টোনম্যানকে ফেরান তিনি বেশ এক চোট ভোগানোর পর।
প্রথম পরিবর্তন হিসেবে বোলিংয়ে এসে হাসান শুরুতে লাইন-লেংথ খুব ভালো রাখতে পারেননি। তবে বরাবরই উইকেট শিকারী এই পেসার ঠিকই দলকে এনে দেন দ্রুত দুটি উইকেট। বাইরের বল তাড়া করে ফেরেন রুট। দাভিদ মালানকে আউট করেছেন দারুণ এক ডেলিভারিতে।
৩ উইকেটে ৪৩ থেকে ইংল্যান্ডকে টেনে নেন কুক ও জনি বেয়ারস্টো। কুক খেলেছেন নিজের মতোই। রক্ষণে আঁটসাঁট, সুযোগ পেলে খেলেছেন শট। ব্যাটিং অর্ডারে নতুন পজিশন পাঁচ নম্বরে দারুণ খেলছিলেন বেয়ারস্টো।
জমে ওঠা এই জুটি ভাঙেন অলরাউন্ডার ফাহিম আশরাফ। ২৭ রান করা বেয়ারস্টোকে বোল্ড করে এই পেসার জুটি থামান ৫৭ রানে।
কুকের সঙ্গে বেন স্টোকসের জুটিও আশা দেখাচ্ছিল ইংল্যান্ডকে। পাকিস্তানকে তখন কাক্সিক্ষত উইকেটটি এনে দেন আমির। দর্দুান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড করেন কুককে। ১৪৮ বলে ৭০ রানের ইনিংসে আছে ১৪টি চার।
বাকি ৫ উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়ে ইংল্যান্ডের ইনিংস শেষ করেছেন আব্বাস ও হাসান। স্টোকসকে ৩৮ রানে থামিয়েছেন আব্বাস। দলে ফেরা জস বাটলার ১৪ রানে শিকার হাসানের।
৩৫ রানের মধ্যে ইংল্যান্ড হারায় শেষ ৬ উইকেট। আব্বাস ও হাসান নিয়েছেন চারটি করে উইকেট।
ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তানও উইকেট হারিয়েছিল শুরুতে। আগের টেস্টে অভিষেকে আলো ছড়ানো ইমাম-উল-হককে ফেরান স্টুয়ার্ট ব্রড। তবে দ্বিতীয় উইকেটে দারুণ লড়াইয়ে জুটি গড়েছেন আজহার আলি ও হারিস সোহেল। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আর উইকেট হারায়নি পাকিস্তান। দিনটাও তাই পুরোপুরি হয়ে উঠেছে তাদেররই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫৮.২ ওভারে ১৮৪ (কুক ৭০, স্টোনম্যান ৪, রুট ৪, মালান ৬, বেয়ারস্টো ২৭, স্টোকস ৩৮, বাটলার ১৪, বেস ৫, উড ৭, ব্রড ০, অ্যান্ডারসন ০*; আমির ১/৪১, আব্বাস ৪/২৩, হাসান ৪/৫১, ফাহিম ১/২৮, শাদাব ০/৩৪)
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ২৩ ওভারে ৫০/১ (আজহার ১৮*, ইমাম ৪, সোহেল ২১*; অ্যান্ডারসন ০/১১, ব্রড ১/১০, উড ০/৯, স্টোকস ০/৯, বেস ০/৪