December 2, 2024, 3:34 am

সংবাদ শিরোনাম
৩ আগস্ট মৌলভীবাজারে কর্মসূচি ছিল না, এদিনের ঘটনায়ও মামলা! যশোরে বাংলাদেশ ক্যাডেট সেফটি ফাউন্ডেশনের শুভ উদ্ভোদন ফুলছড়া চা বাগান মাঠে গারোদের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান ওয়ানগালা উৎসব পালিত নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড মৌলভীবাজারে সাধারণ মানুষের মধ্যে মামলা ভীতি : স্বস্তির বদলে আতঙ্ক কালিয়াকৈর উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে কারওয়ান বাজার থেকে সাংবাদিক মুন্নী সাহাকে গ্রেপ্তার কুড়িগ্রামে পরিবার পরিকল্পনা অফিসে থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে সার্বভৌমত্ব-সরকারের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে শক্তিশালী না করলে দেশবাসী নিরাপত্তাহীনতা ভুগবে .লে. কর্ণেল (অব.) খন্দকার ফরিদুল আকবর নবী সা. এর সীরাত-ই আমাদের জীবনের পাথেয়: শায়খুল হাদীস আতাউর রহমান

মিয়ানমার থেকে আসা একদল হিন্দু রোহিঙ্গা বলছেন সেনাবাহিনী নয় মুসলমানরাই তাদের ওপরে নির্যাতন চালিয়েছে

মিয়ানমার থেকে আসা একদল হিন্দু রোহিঙ্গা বলছেন সেনাবাহিনী নয় মুসলমানরাই তাদের ওপরে নির্যাতন চালিয়েছে

 ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক       

রোহিঙ্গাএখনো রোহিঙ্গারা আসছেন হাজারে হাজারে।

হিন্দু রোহিঙ্গারা এতদিন তাদের উপর হামলাকারী হিসেবে একদল ‘মুখ ঢাকা কালো পোশাকধারী’ এবং ‘বাংলা ভাষাভাষী’র বর্ণনা দিয়ে আসছিলেন, যাদেরকে তারা চেনেন না বলে জানিয়েছিলেন।

তারও আগে তারা বলেছিলেন, তারা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের কারণে মুসলমানদের সাথে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন।

কিন্তু মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে যে কয়েকশো হিন্দু রোহিঙ্গা এসেছে তাদের কেউ কেউ এখন তাদের উপর নির্যাতনকারী হিসেবে সরাসরি রোহিঙ্গা মুসলমানদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছেন।

উখিয়ার হিন্দু রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরটির একাধিক বাসিন্দা আমাকে বললেন, তাদের উপর হামলাকারী ‘কালো পোশাকধারীরা’ ছিল মুসলমান।

এদের সাথে দেখা করবার জন্য আমি গিয়েছিলাম উখিয়ার কুতুপালং পশ্চিমপাড়ায়।

এখানে ১০৮টি পরিবারের ৪৪০ জন হিন্দু রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। জায়গাটা পাহাড়ি নয়, সমতল।

স্থানীয় এক হিন্দু পরিবারের বাড়ির উঠোন। পাশে আরো কয়েকঘর হিন্দু আছে।

অধিকাংশ শরণার্থীর আশ্রয় হয়েছে একটি পরিত্যক্ত মুরগির খামারে।

 
হিন্দু রোহিঙ্গারাঅধিকাংশ হিন্দু রোহিঙ্গা শরণার্থীর আশ্রয় হয়েছে একটি পরিত্যক্ত মুরগির খামারে।

অনেকটা হলঘরের মতো। সবাই এক ছাদের নিচে। তুলনামূলক ভালই আছে এরা।

পাশেই শামিয়ানা টানিয়ে রান্না হচ্ছে।

এদের সবাইকে ভারতীয় একটি সংগঠনের সৌজন্যে তিন বেলা ভাত রেঁধে খাওয়ানো হচ্ছে।

এখানে আমার এক মহিলার সাথে কথা হয়, যিনি আমাকে বলেন, “আমাদেরকে মুসলমান কালো পোশাকধারীরা সাতদিন ধরে বন্দী করে রেখেছিল। সাত দিন ধরে বের হতে দেয়নি। মোবাইলে কথা বলতে দেয়নি।

এমনকি ওষুধ কিনতেও যেতে দেয়নি। তারপর এক পর্যায়ে সুযোগ পেয়ে পালাই। পালিয়ে বহু কষ্টে বাংলাদেশে আসি”।

মহিলাটির নামটি প্রকাশ না করবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি।

এই শিবিরের অন্তত কুড়ি জন নারী পুরুষ ও কিশোর কিশোরীর সাথে কথা বলেছি আমি, অনেকেই আমাকে সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হননি।

কিন্তু যারা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, সবাই একই ভাষায় কথা বলেছেন, সবার কাছেই একই রকম কালো পোশাকধারী হামলাকারীর বর্ণনা পাওয়া গেছে।

 
রোহিঙ্গারোহিঙ্গা মুসলমানদের প্রতি খুবই রেগে আছে রোহিঙ্গা হিন্দুরা।

যেমনটি ববিতা শীল নামে এক মহিলা বলেন, “তারা কালো পোশাক পরা। শুধু চোখ দেখা যায়। সবাই কালো নেকাব পরা। আমাদেরকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। ঘিরে রাখে। বাজার করতে দেয় না। বাইরে গেলে ধমকায়”।

কিন্তু এই হিন্দু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে আসবার খবর প্রথম যেদিন বিবিসিতে প্রচার হয়েছিল, সেদিন তাদের বক্তব্যের বরাত দিয়ে বলা হয়েছিল যে, তাদেরকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অত্যাচার নির্যাতন করেছে, তাই তারা মুসলমানদের সঙ্গে পালিয়ে এসেছে।

পরবর্তীতে তাদের এই বর্ণনা বদলে যায়।

এরই এক পর্যায়ে আশ্রয় নেয়া সাতাশ জন হিন্দু দুর্গা পূজা দেখার নাম করে চলে যায়।

পরে মিয়ানমার থেকে খবর বের হয় যে, তারা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহায়তায় সেদেশে ফিরে গেছে। মুসলমান রোহিঙ্গারা তাদেরকে জোর করে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিল, এই বক্তব্যও তারা দিয়েছে বলে খবর বের হয়।

 
রোহিঙ্গানাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে আসা কিছু রোহিঙ্গা।

এই সাতাশজনও কুতুপালং পশ্চিমপাড়ায় অবস্থান করছিল।

ওই সময় রাখাইনে হিন্দুদের গণকবর আবিষ্কার হওয়ার খবর বের হয়, যেটাকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বর্ণনা করে মুসলিম জঙ্গিদের হত্যাযজ্ঞ হিসেবে।

মিয়ানমার থেকে বের হওয়া এসব কোন খবরই এখন পর্যন্ত নিরপেক্ষ ভাবে যাচাই করা যায়নি।

রাখাইনে মুসলমানদের সাথেই দীর্ঘদিন ধরেই শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করে আসছিল ওই এলাকার জনসংখ্যার মোটে ১% এই হিন্দুরা।

কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, রোহিঙ্গা মুসলমানদের প্রতি খুবই রেগে আছে রোহিঙ্গা হিন্দুরা।

যদিও তারা বাংলাদেশে আসবার সময় একসঙ্গে এসেছে এবং তা এখনও অস্বীকার করছে না। কিন্তু এখন আর তারা সহাবস্থানে রাজী নয়।

বলরাম শীল নামে একজন বলছিলেন, “আমরা মুসলমানদের শিবিরে থাকবো না। প্রয়োজনে আমাদেরকে মেরে ফেলুন। তাও ওদের মধ্যে থাকবো না”।

অবশ্য বাংলাদেশের মুসলমানদের ভূয়সী প্রশংসা করলেন বলরাম শীল। বললেন, “তারা আমাদের আশ্রয় দিচ্ছে, খাদ্য দিচ্ছে। তারা ভাল”।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর