July 2, 2024, 10:20 am

সংবাদ শিরোনাম

গণপরিবহন বন্ধে ভোগান্তি, অটোরিকসায় চলছে গন্তেব্যে যাত্রা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি::
রংপুর মোটর মালিক সমিতির ডাকা ‘পরিবহন ধর্মঘটে’ কুড়িগ্রাম-রংপুর সড়কে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে পরিবহণের অভাবে যাত্রীদের চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকাল থেকে জেলা শহরের কেন্দ্রীয় বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে বাস না পেয়ে বাধ্য হয়ে অনেকে ব্যাটারি চালিত অটোরিকসায় গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করছেন। তবে দূরপাল্লার এবং আন্তজেলা বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও পণ্যবাহী যান চলাচল স্বাভাবিক দেখা গেছে।
এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ডাকা পরিবহন ধর্মঘটকে সমাবেশ ‘বানচালের’ ধর্মঘট হিসেবে দেখছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, ‘সরকারি ছুটির দুইদিন পরিবহন ধর্মঘট ঘোষণা প্রমাণ করে এই ধর্মঘট রংপুরে বিএনপি’র সমাবেশকে ঘিরেই দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নেতাকর্মীরা সকল বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশ সফল করবেই।’ আগামীকাল শনিবার রংপুরে বিএনপির মহাসমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে।
শুক্রবার সকালে কুড়িগ্রাম কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেছে, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যাত্রীরা রংপুরসহ জেলার বাইরে যাওয়ার উদ্দেশে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বাস না পেয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকে বাস না পেয়ে ফিরে গেলেও বেশিরভাগ যাত্রী প্রয়োজনের তাগিদে ব্যাটারি চালিত অটোরিকসায় গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা হচ্ছেন। ভোগান্তির দিনে অটোরিকসাই যেন তাদের ভরসা!
জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলা থেকে মা কে নিয়ে সিরাজগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশে কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ড গিয়েছিলেন মঞ্জুরুল । কিন্তু বাসস্ট্যান্ড  পৌঁছে জানতে পারেন পরিবহন ধর্মঘট। মা কে নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন মঞ্জুরুল। কিন্তু যেতেই হবে এমন তাড়ায় বাধ্য হয়ে মা কে নিয়ে ব্যাটরিচালিত অটোরিকসায় রংপুরের উদ্দেশে রওয়ানা হন- যদি সেখান থেকে সিরাজগঞ্জ পৌঁছার কোনও উপায় মেলে!
মঞ্জুরুল বলেন, ‘পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে আমরা তা জানি না। জানলে হয়তো এভাবে রওয়ানা হতাম না। সবাই যার যার উদ্দেশ্য সফল করতে ব্যস্ত। শুধু ভোগান্তি জনগণের।’
মা ও বোনকে নিয়ে ঢাকা যাবেন বলে রংপুরের উদ্দেশে বের হয়েছিলেন জেলা শহরের বাসিন্দা ইমতিয়াজ। বাধ্য হয়ে তিনিও মা বোনকে নিয়ে অটোরিকসায় করে রংপুরের পথে রওয়ানা হন।
মাঈদুল, আবু জালাল সহ ১৪ জন শ্রমিক নাগেশ্বরী থেকে অটোরিকসায় করে কুড়িগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এসেছেন বগুড়া যাওয়ার উদ্দেশে। সেখানে গিয়ে তাদের ধান কাটার কাজে অংশ নেওয়া  কথা।  কিন্তু বাসস্ট্যান্ড এসে জানতে পারেন কোনও গাড়ি চলছে না। বাধ্য হয়ে তারা বাড়ি ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
মাঈদুল বলেন, ‘ আসার সময় ৫০ টাকা করে ভাড়া দিছি, যাওয়ার সময় আবার ৫০ টাকা করে লাগবো। এই টাকাটা ফাও খরচ হয়া গেল। অভাবের দিনে এই ১০০ টাকার দাম অনেক। কারে কী কই!’
রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির ডাকা দুই দিনব্যাপী পরিবহন ধর্মঘটে কড়িগ্রাম জেলা মোটর মালিক সমিতির ‘সম্মতি নেই’ বলে জানিয়েছেন জেলা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. লুৎফর রহমান বকসি।
তিন বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে ধর্মঘটের সমর্থনে কোনও নির্দেশনা নেই। তবে রংপুরের ডাকা ধর্মঘটে আমাদের জেলার মোটর মালিকরা গাড়ি চালাবেন কিনা সে সিদ্ধান্ত তাদের (মালিকদের)। গাড়িগুলো ব্যাক্তি মালিকানাধীন। আমরা বলে দিয়েছি, যারা গাড়ি চালাতে চাইবেন তারা চাইলে গাড়ি চালাতে পারবেন। আমাদের এখান থেকে কোনও প্রতিবন্ধকতা নেই। তবে সেক্ষেত্রে দায়দায়িত্ব তারা নিজেরা বহন করবেন।’
তবে বাস্তবে তার এই দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সকাল থেকে কুড়িগ্রাম থেকে কোনও যাত্রীবাহী বাস রংপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি। এমনকি বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে টিকিট কাউন্টারও বন্ধ পাওয়া গেছে।
বাস মালিক সমিতির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ এ অবস্থায় আমরা গাড়ি চালালে গাড়ি আটকে দেওয়া থেকে শুরু ভাঙচুরও করার আশঙ্কা রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ রাখা হয়েছে।’
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর