মোহাম্মদ ইকবাল হাসান সরকারঃ
কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, গত ১৫ মে ২০২০ তারিখে ঘূর্ণিঝড় আমফান আঘাত হানার পূর্বাভাস পাবার সাথে সাথেই কৃষি মন্ত্রণালয় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই ছিলেন সতর্ক। ফসলের ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য কৃষককে দেয়া হয়েছিল প্রয়োজনীয় পরামর্শ।ফলে ঘূর্ণিঝড় আমফানের ফলে কৃষিতে ব্যাপকভিত্তিক ক্ষতি সাধিত হয়নি। কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি আজ ২১ মে ২০২০ ইং তারিখ বৃহস্পতিবার হেয়ার রোডের সরকারি বাসভবন থেকে বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড় আমফান এর ফলে কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে অনলাইনে (জুম প্ল্যাটফর্মে) মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক প্রতিবেদন তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি না হলেও অল্প কিছু কৃষিজ ফসলের বিশেষ করে ফলের মধ্যে আম, লিচু, কলা, সবজি, তিল এবং অল্প কিছু বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে।ক্ষতির চুড়ান্ত হিসাব নিরূপণের কাজ চলছে।প্রাথমিকভাবে ঘুর্ণিঝড়ে আক্রান্ত মোট জমির পরিমাণ 1,76,007 হেক্টর। ইতোমধ্যে হাওড়ে শতভাগ, উপকূলীয় অঞ্চলে ১৭ জেলায় শতকরা ৯৬ ভাগসহ সারা দেশে গড়ে ইতোমধ্যে ৭২ শতাংশ বোরো ধান কর্তন করা হয়েছে। ফলে,ক্ষতির পরিমাণ সামান্য যা আমাদের খাদ্য উৎপাদনে তেমন প্রভাব পড়বে না। কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন, প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড় আমফানের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শাকসবজি ও মসলা চাষিদের তালিকা প্রণয়ন করে তাঁদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমন মৌসুমে বিনামূল্যে সার, বীজ ও নগদ সহায়তাসহ বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদান করা হবে।এছাড়াও, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, ফল ও পান চাষিদেরকে মাত্র ৪% সুদে কৃষি ঋণের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় প্রায় ৬০-৭০ ভাগ আম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জেলায় ঝড়ে পড়া আমগুলো ত্রাণ হিসেবে দুস্থ জনগণের মাঝে বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে্। এতে একদিকে যেমন আমচাষিরা কিছুটা আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে অন্যদিকে তেমনি দু:স্থ এবং অসহায় জনগণের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হবে।কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি জানান, প্রাথমিক প্রতিবেদন বোরো ধান 47,002 হেক্টর শতকরা 10 ভাগ, ভূট্টা 3,284 হেক্টর শতকরা 5 ভাগ, পাট 34,139 হেক্টর শতকরা 5 ভাগ, পান 2,333 হেক্টর শতকরা 15 ভাগ, সবজি 41,967 হেক্টর শতকরা 25 ভাগ, চিনাবাদাম 1,575 হেক্টর শতকরা 20 ভাগ, তিল 11,502 হেক্টর 20 ভাগ, আম 7,384 হেক্টর শতকরা 10 ভাগ, লিচু 473 হেক্টর শতকরা 5 ভাগ, কলা 6,604 হেক্টর শতকরা 10 ভাগ, পেঁপেঁ 1,297 হেক্টর শতকরা 50 ভাগ, মরিচ 3,306 হেক্টর শতকরা 30 ভাগ, সয়াবিন 640 হেক্টর শতকরা 50 ভাগ, মুগডাল 7,973 হেক্টর শতকরা 50 ভাগ এবং আউশ 6,528 হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।ব্রিফিংকালে কৃষিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ও সকলের সহযোগিতায় মহামারি করোনা এবং সুপার সাইক্লোন আম্পানের মতো দুর্যোগ মোকাবিলা করে দেশের খাদ্য উৎপাদনের বর্তমান ধারা শুধু অব্যাহত রাখা নয়, তা আরও বৃদ্ধি করে ২০৩০ সালের ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট’ (এসডিজি) অর্জন করার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন,মো: কামরুল ইসলাম ভূইয়া, তথ্য অফিসার।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২১ মে ২০২০/ইকবাল