January 17, 2025, 9:03 pm

সংবাদ শিরোনাম
সম্ভাবনার নতুন দ্বার ‘বাউ মুরগি’, চিলাহাটিতে ভাগ্য ফিরেছে নারীদের শিবচরে খানকান্দি দৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ শিবচরে খানকান্দি দৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ টেকনাফ ২ বিজিবি”র অভিযানে আটক-৬ লক্ষ্মীপুরে তিন পুলিশ সদস্যকে পেটালেন সিএনজি চালকরা মধুপুরে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত বেনাপোলে বিজিপি বিএসএফ সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হারিয়ে যাওয়া মায়ের খোঁজে দিশেহারা সন্তানরা ভিসা জটিলতায় বেনাপোল বন্দরে পরিবহন ব্যাবসার ধ্বস তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি সম্পন্ন

এফডিসির নির্বাচন সুষ্ঠু হবে তো?

মোহাম্মদ ইকবাল হাসান সরকারঃ

মৌসুমি (বাঁয়ে) ও মিশা সওদাগর। ছবি : সংগৃহীত

চলচ্চিত্র শেষ, কমে গেছে নির্মাণ, কাজ নেই এফডিসিতে। এমন শিরোনাম এখন প্রতিনিয়ত দেখা যায় পত্রিকার পাতায়, টিভি স্ক্রিনে। কিন্তু এখন এফডিসিতে ঢুকলে মনে হয় এখানে উৎসব চলছে। লোকে লোকারণ্য চলচ্চিত্রের এই আতুড়ঘর। মনে হবে যৌবন ফিরে পেয়েছে চলচ্চিত্র। বাস্তবে তা নয়।২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০১৯-২১ মেয়াদি নির্বাচন ঘিরে সরব এফডিসি। নাম না প্রকাশের শর্তে একজন সিনিয়র শিল্পী বলেছেন-‘নির্বাচন এর আগেও হয়েছে। আমরাও নির্বাচন করেছি। যারা নির্বাচিত হয়েছিলাম আমাদের সবার আলোচনার বিষয় ছিল নিত্যনতুন ছবি। কিভাবে সবাই কাজ করবেন সেটা ঠিক করা।কিন্তু বর্তমানে সিনেমার চরম দুর্দিনে শিল্পী সমিতি এ শিল্পের সংকট নিরসেনে ভূমিকা না রেখে কাজের বাইরে নির্বাচন নিয়ে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে।’ আবার নির্বাচনের প্রচারণা যে শান্তিপূর্ণ হচ্ছে সেটাও নয়। নির্বাচন ঘিরে শিল্পী সমিতিতে চলছে নোংরামি। গুণী শিল্পীদের মানহানি, গঠনতন্ত্র তোয়াক্কা না করে নতুন সদস্য নেওয়া, ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে সহযোগী সদস্য করা, নির্বাচনী প্যানেল গঠন নিয়ে যড়যন্ত্র, অসচ্ছল শিল্পীদের টাকা নিয়ে বিরোধ এবং সর্বশেষ চিত্রনায়িকা মৌসুমীকে অপমানসহ একের পর এক বিতর্কিত ঘটনা সমিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত শিল্পীদের সমিতিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। আগে নির্বাচনে দুটি বা তিনটি প্যানেল থাকত। এবার একমাত্র মিশা-জায়েদ পূর্ণ প্যানেল দিয়েছেন। বিপরীতে স্বতন্ত্রভাবে সভাপতি পদে লড়ছেন মৌসুমী ও সাধারণ সম্পাদক পদে ইলিয়াস কোবরা। প্রচারণা যেহেতু শান্তিপূর্ণ হচ্ছে না তাহলে নির্বাচন কী সুষ্ঠু হবে?এমন প্রশ্ন করা হলে মৌসুমী বলেন, ‘ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই আছেন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে। তিনি একজন ভালো মানুষ। এখন পরিবেশ অনেকটা শান্তু। তাই আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।’ প্রশ্ন উঠেছে কাজের চেয়ে নির্বাচন নিয়ে বেশি মাতামতি করছেন অনেক শিল্পী। এমন কথার বিপরীতে মৌসুমী বলেন, ‘কাজ বন্ধ করে নির্বাচন করছি এমন নয়। আগে কাজ পরে নির্বাচন। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই দেখছি কাজের কোনো খবর নেই নির্বাচন নিয়ে ঘুম হারাম।এখন প্রচারণা চালাচ্ছি, ভাগ্যে থাকলে অবশ্যই জয়ী হব।’ সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মিশা সওদাগর। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই একটি পরিবার। এখানে কোনো বিষয়ে দ্বিমত নেই। কেউ যদি মনে করেন নির্বাচনে পক্ষপাতিত্ব হবে, তবে সেটা ভুল ধারণা। কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব এমন একজনকে দেওয়া হয়েছে যাকে নিয়ে কারো আপত্তি নেই। কেউ কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে সেটার সমাধান করছেন। তাই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।’শিল্পীদের কাজ নিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু শিল্পী সমিতি একা লড়লে তো চলচ্চিত্রের উন্নতি হবে না। তবে এটা সত্যি যে কাজ না করে নির্বাচন করে কেনো লাভ নেই। এবার জয়ী হলে সবার কাজ নিশ্চিত করব। যাতে নিয়মিত চলচ্চিত্র মুক্তি পায় সেদিকেও খেয়াল রাখব।নির্বাচনে অংশ নেওয়া অভিনয়শিল্পীদের প্রশ্ন করা হলে বলেন-অনেক গল্প হাতে আছে। কিছু দিনের মধ্যে নতুন ছবির কাজ শুরু করব। কোন ছবি, কে পরিচালক, সহশিল্পী কে সেটা পরে বলব। এই পরে আর শেষ হয় না। এটাই বাস্তবতা। এখন সবাই কাকডাকা ভোরে এফডিসিতে চলে আসেন অথচ এমন অভিযোগ প্রায় শোনা যায় যে-অমুক শিল্পী ক্যামেরা অন হওয়ার চার-পাঁচ ঘণ্টা পর সেটে আসছেন।তমুক শিল্পী ডেট ফাঁসিয়েছেন, মাথায় হাত প্রযোজকের। এদিকে কাজের জন্য এবং নির্বাচন ঘিরে নোংরামি দেখে অনেক তারকা শিল্পী নির্বাচনই করছেন না। তাদের মধ্যে আছেন রিয়াজ, ফেরদৌস, পূর্ণিমা, পপি, নিপুণ, নিরব, সাইমন সাদিকরা। এদের মধ্যে অনেকে বলেছেন কাজ নিয়ে ব্যস্ততার কথা, কেউ বলছেন অনিয়মের কথা।ফেরদৌস বলেন, ‘কাজ ফেলে নির্বাচন করার মতো সময় হাতে নেই। আমরা শিল্পী, কাজই আমার কাছে মুখ্য বিষয়।’ পূর্ণিমা জানান, সময়ের অভাবে নির্বাচন করছেন না। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন করলে তো সময় দিতে হয়, শ্রম দিতে হয়, এফডিসিতে গিয়ে শিল্পীদের কাছে ভোট চাইতে হয়। সেই সময় আমার নেই।’২০১৭ সালের ৫ মে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সবশেষ নির্বাচন হয়। নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মিশা-জায়েদ প্যানেল পাস করে। রোজিনা, অঞ্জনা, রিয়াজ, ফেরদৌস, পূর্ণিমা, পপি, ইমন, সাইমনসহ অনেক তারকা শিল্পী বিজয়ী হয়ে এই কমিটিতে আসেন।কমিটি গঠনের কিছুদিন পর ওমর সানী-অমিত হাসান প্যানেল থেকে বিজয়ী কার্যকরী পরিষদের সদস্য মৌসুমী ও নানা শাহ পদত্যাগ করলে কমিটির দুটি পদ শূন্য হয়। পরবর্তীকালে সমিতির কার্যনির্বাহী সংসদের মিটিংয়ে পাস করার মধ্য দিয়ে ওই দুটি পদে নিপুণ ও নিরবকে নেওয়া হয়। চলচ্চিত্রপাড়ায় অনেকেরই অভিমত, ১৯৮৪ সালের পর থেকে শিল্পী সমিতির যে কয়টি কমিটি হয়েছে, সবচেয়ে তারকাসমৃদ্ধ কমিটি ছিল এটি।

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৪ অক্টোবর ২০১৯/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর