December 22, 2024, 7:52 am

সংবাদ শিরোনাম
পুলিশ ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়, পুলিশ ও জনগণ একে অন্যের পরিপূরক-রেজাউল করিম মল্লিক দলের পরিবর্তন হয়েছে চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি শায়খে চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করীম আপনারা শান্তিতে থাকুন আমরা চাই,আমাদেরকেও আপনারা শান্তিতে থাকতে দিন- ডা. শফিকুর রহমান যশোরে গাছের সাথে বাসের ধাক্কায় নিহত ১ পার্বতীপুরে ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা ২০২৪ অনুষ্ঠিত বাংলাভিশন ডিজিটালের নির্বাহী সম্পাদকের বিরুদ্ধে নাবিলের অপপ্রচারের প্রতিবাদ হিলিতে বিজিবি দিবসে বিএসএফকে মিষ্টি উপহার বিজিবির কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে আওয়ামী লীগের নেতা গ্রেপ্তার পটুয়াখালীতে বাড়ির সীমানা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত-৬ গভীর রাতে আশ্রায়ন প্রকল্পের শীতার্তদের পাশে হাকিমপুরের ইউএনও অমিত রায়

সালিসে দোররা মেরে হত্যা

সালিসে দোররা মেরে হত্যা


যৌতুকের জন্য দিনের পর দিন অত্যাচার, তারপর চরিত্রহীন বলে অপবাদ দেওয়া, রাতের আঁধারে সালিস বসানো, ১০১ দোররা মারা এবং অবশেষে মেয়েটির মৃত্যু নারী নির্যাতনের সেই একই কায়দা।

এবার ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বালিয়াপুকুর গ্রামে। সালিসের নামে হত্যা করা হয়েছে মৌসুমী আক্তার নামের এক গৃহবধূকে। মাত্র ৯ মাস আগে তাঁর বিয়ে হয় একই এলাকার জাহাঙ্গীর নামের এক পাষণ্ডের সঙ্গে। হৃদয়বিদারক খবরটি এসেছে গতকালের সংবাদ মাধ্যেমে। জানা যায়, বিয়ের সময় ৩০ হাজার টাকাসহ অন্যান্য সামগ্রী যৌতুক হিসেবে দেওয়া হলেও জাহাঙ্গীর পরে আরো এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। মৌসুমীর পরিবার কয়েক দফায় টাকা দিতেও চেয়েছিল।

কিন্তু তিনি একসঙ্গে পুরো টাকা দাবি করে আসছিলেন। এই টাকার জন্য গত ৯ মাসে কয়েক বার শারীরিক নির্যাতন করে তাঁকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। সব শেষে সালিসের নামে মৌসুমীকে দুনিয়া থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে খবরে জানানো হয়, দোররা মারার সময় মৌসুমী কয়েক বার অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। জ্ঞান ফেরার পর আবার তাঁকে দোররা মারা হয়েছে। যে রাতে এ ঘটনা ঘটে তার পরদিন সকালে মৌসুমী মারা যান। কী নিষ্ঠুর, কী সাংঘাতিক!
আর কত মৌসুমী এভাবে প্রাণ দেবে? এই রাষ্ট্র, এই সমাজ কি মৌসুমীদের রক্ষায় কিছুই করতে পারে না? জানা যায়, স্থানীয় থানা এ ঘটনায় মামলা নিতে গড়িমসি করে।

পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে একজনকে গ্রেপ্তার করলেও স্বামীসহ সংশ্লিষ্ট কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। কেন এমন হয়? এ ধরনের প্রায় প্রতিটি ঘটনায় থানা-পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা না নেওয়ার কিংবা আসামিদের প্রতি বিশেষ অনুকম্পা প্রদর্শনের অভিযোগ ওঠে। এর কি কোনো প্রতিকার নেই? সাধারণত দুর্বলদের ওপরই এ ধরনের অত্যাচার-নির্যাতনের ঘটনা বেশি ঘটে।

দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার রোধ করার জন্যই তো রাষ্ট্রে পুলিশিব্যবস্থা থাকে। সেখানে পুলিশই যদি অর্থের বিনিময়ে সবলের কিংবা অপরাধীর পক্ষ নেয়, তাহলে দুর্বলরা যাবে কোথায়? একই প্রতিবেদনে অপর একটি ঘটনাও তুলে ধরা হয়েছে। মাদারীপুর পৌর শহরে একইভাবে সালিস বৈঠকের নামে এক কিশোরীকে জুতাপেটা করা হয়েছে। অথচ সেই কিশোরীর প্রতি অত্যাচারের বিচার চেয়েছিলেন তার বাবা। কিন্তু সালিস গেছে প্রভাবশালী অত্যাচারীর পক্ষে।

আর তাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন সরকারি দলের সমর্থক এক ওয়ার্ড কাউন্সিলর। সেই কিশোরীর ভ্যানচালক বাবার পক্ষে ন্যায়বিচার দাবি করা কতটুকু সম্ভব? তাই বলে কি দেশে ন্যায়বিচার বলে কোনো কিছু থাকবে না? তাহলে পুলিশিব্যবস্থার পেছনে রাষ্ট্রের এত বিপুল অর্থ ব্যয়ের সার্থকতা কোথায়? ঠাকুরগাঁও বা মাদারীপুরের দুটি ঘটনার কোনোটিই সালিস বৈঠকের বিষয় ছিল না। আর শাস্তি হিসেবে দোররা মারা কিংবা জুতাপেটা করার তো প্রশ্নই ওঠে না। উচ্চ আদালত থেকে এ ব্যাপারে বারবার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তার পরও সালিসের নামে যা করা হয়েছে, তা শুধু দুটি পরিবার নয়, সভ্য সমাজের প্রতিও আঘাতস্বরূপ। আমরা দুটি ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

 

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর