ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনরোধের কাজে ভূমিকা রাখতে চীন ও রাশিয়ার উপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের স্বাধীন মানবাধিকার তদন্ত দল। গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে মিয়ানমারে সফরে সরকারের বাধার শিকার হওয়া জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াংঘি লি চীন ও রাশিয়ার সমালোচনা করেছেন। কারণ উভয় দেশে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর সামরিক অভিযান ঠেকাতে জাতিসংঘের প্রচেষ্টায় ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। রয়টার্সের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে লি বলেন, ‘মানবাধিকারের পক্ষে চীন ও রাশিয়াকে টেনে আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
দেশ দুটি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ওআইসি’র মতো মিয়ানমারের রাখাইনে সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়নি। গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে সহিংসতা জোরালো হওয়ার পর হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ছয় লাখেরও বেশি মানুষ। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় খুঁজে পেয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ আখ্যা দিয়েছে। রাখাইন সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। লি’র আহ্বানের জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং বলেন, ‘বহিরাগত শক্তি’ মানবাধিকার রক্ষায় চাপ প্রয়োগ করলে তা কোনও কাজে আসবে না। বরং এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র বলেন, এতে মিয়ানমার, প্রতিবেশি বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কোনও স্বার্থ নেই। আমরা আশা করি বাইরের দেশ বা ব্যক্তিরা মিয়ানমারকেই বিষয়টি সমাধানের জন্য ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করে দিতে পারে।
এ বিষয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে এর আগে রুশ সরকারের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করতে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছিল। মিয়ানমারে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত নিকোলায় লিস্তোপাদোভ বলেছেন, তারা ‘অত্যাধিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে। কারণ আরও ধ্বংসাত্মক ফলাফল দেখতে চান না তারা।’