ইন্টারনেট থেকেই বিস্ফোরক বানানো শেখেন আকায়েদ!
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বোমা হামলার অভিযোগে গ্রেফতার আকায়েদ উল্লাহ (২৭) ইন্টারনেটের মাধ্যমেই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। শুধু তাই নয়, বিস্ফোরক বানানোর প্রশিক্ষণও তিনি ইন্টারনেট থেকে নিয়েছেন- এমনটাও দাবি তদন্ত সংশ্লিষ্টদের।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দেশে থাকা অবস্থায় আকায়েদের কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ড ছিল না। আমেরিকা যাওয়ার পর ইন্টারনেটের মাধ্যমে তিনি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়তে পারেন। তারপরও আকায়েদের বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহে তার পরিবার, আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধবসহ অনেককেই বিস্তর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ডিআইজি মনিরুল ইসলাম বলেন, দেশে থাকা অবস্থায় আকায়েদের বিরুদ্ধে আমরা কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ড পাইনি, তাই ধারণা করা হচ্ছে সে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিজে থেকেই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ইন্টারনেটের মাধ্যমেই সে বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়ে দিয়াশলাইয়ের কাঠি, বারুদ, চিনি ইত্যাদি ব্যবহার করে বিস্ফোরক বানিয়েছে বলেই আমরা ধারণা করছি।
ডিআইজি মনিরুল ইসলাম বলেন, আকায়েদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজনসহ অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ এখনও শেষ হয়নি। সেখান থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করার পরই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো যাবে।
তিনি আরো বলেন, দেশে আসার পর আকায়েদ জঙ্গিবাদে জড়িত এমন কারোর সাথে যোগাযোগ করেছিলেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও এখন পর্যন্ত তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
গত সোমবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ার এলাকার পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের সঙ্গে আকায়েদ উল্লাহর সংশ্লিষ্টতা পায় নিউইয়র্ক পুলিশ। বিস্ফোরণে তার শরীর পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি জখম হয়েছে। এখন তিনি হাসপাতালে রয়েছেন।
ওই ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে রাজধানীর জিগাতলার মনেশ্বর রোডের বাসা থেকে আকায়েদের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস জুঁই, শ্বশুর জুলফিকার হায়দার ও শাশুড়ি মাহফুজা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের আবার বাসায় পৌঁছে দেয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আকায়েদের স্ত্রী জুঁই জানান, আকায়েদ প্রায় সময়ই তাকে জঙ্গি নেতা জসিম উদ্দিন রাহমানীর লেখা বই পড়তে বলতেন। কিন্তু তিনি সে বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন না।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে জুঁইকে বিয়ে করেন আকায়েদ। গেল জুনের ১০ তারিখ তাদের একটি সন্তান হয়। সন্তান হওয়ার পর চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আকায়েদ দেশে এসেছিলেন। প্রায় এক মাস থেকে গত ২২ অক্টোবর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান।
গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপে হলেও আকায়েদ পরিবারের সাথে ঢাকার হাজারীবাগে বসবাস করতেন। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাবা-মায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। সেখানে আকায়েদ স্থায়ী মার্কিন অধিবাসী হিসেবে নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে বসবাস করতেন। সেখানে ক্যাব চালাতেন তিনি।