October 18, 2024, 11:36 am

সংবাদ শিরোনাম
ফুটওভার ব্রিজের উপর থেকে টার্গেট ছিনতাইকারীদের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইমরানের রাজউকে শক্তিশালী সিন্ডিকেট তথ্য সংগ্রহকালে সাংবাদিককে হুমকি বারুদের গন্ধ বিশ্ববাসী সহ্য করতে পারছেন না (পর্ব ১৩) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল( বিএনপি) ভুল পথে কেন (পর্ব- ১২) মাতৃভূমি সুরক্ষার জন্য আবারো রক্ত দিতে হবে কেন? পর্ব -১১ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে তিনজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ নবাবগঞ্জে বজ্রপাতে দুই বিয়াইয়ের মৃত্যু শাহবাগে ছাত্র জমিয়তের সীরাত সম্মেলন অনুষ্ঠিত সুন্নাহর মাঝেই রয়েছে বৈষম্যমুক্ত আদর্শ দেশ গড়ার চাবিকাঠি কুড়িগ্রামে হত্যায় মামলায় সাংবাদিকদের আসামী! কক্সবাজারে অভিযানে ৬ দূর্বৃত্ত অস্ত্র সহ আটক

ভারত ও চীন থেকে আরও ৭৫৩ টন ত্রাণ চট্টগ্রামে

ভারত ও চীন থেকে আরও ৭৫৩ টন ত্রাণ চট্টগ্রামে

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনার দিনে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের জন্য ভারত ও চীনের সাড়ে সাতশ টন ত্রাণ চট্টগ্রামে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ভারত থেকে তৃতীয় চালানে ৭০০ টন ত্রাণ নিয়ে ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ আইএনএস ঘড়িয়াল গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে চট্টগ্রাম বন্দরের ১ নম্বর জেটিতে পৌঁছায়।

আর চীন থেকে পাঠানো দ্বিতীয় চালানে সাড়ে ৫৩ টন ত্রাণ নিয়ে একটি উড়োজাহাজ সকালে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নামে। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে তার সরকারের পাঠানো ত্রাণ চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করেন। চট্টগ্রাম বন্দর, নৌবাহিনী, ভারতীয় নৌবাহিনী, চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশন ও জেলা প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তারাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ভারত থেকে তৃতীয় দফায় আসা এই ত্রাণের চালানে চাল, ডাল, লবণ, চিনি, চা, গুঁড়ো দুধ, বিস্কুট, সাবান ও মশারি রয়েছে। মোট ৬২ হাজার প্যাকেটে এই ত্রাণ বিতরণের জন্য তৈরি করা হয়েছে বলে হাই কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ৫৩ টন এবং পরদিন আরও ১০৭ টন ভারতীয় ত্রাণ চট্টগ্রাম পৌঁছায়। রোহিঙ্গাদের জন্য ভারত থেকে মোট সাত হাজার টন ত্রাণ দেওয়ার পরিকল্পনার কথা এর আগে জানিয়েছিলেন হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। চীন থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার আসা দ্বিতীয় চালানে রয়েছে তিন হাজার কম্বল। বাংলাদেশে চীন দূতাবাসের ইকোনমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল কাউন্সেলর লি গুয়াংজুন বিমানবন্দরে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কাছে এই ত্রাণ হস্তান্তর করেন। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, গত বুধবার একটি চীনা বিমানে ৫৭ দশমিক শূন্য তিন টন ত্রাণ এসেছিল। সেখানে ছিল ২২০০ তাঁবু। এসব ত্রাণ কক্সবাজারের উখিয়ায় পাঠানো হচ্ছে। চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিং চিয়াং সোমবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন, শরণার্থীদের জন্য তার দেশ মোট ১৫০ টন জরুরি ত্রাণ চট্টগ্রামে পাঠাচ্ছে।

মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে নতুন করে দমন-পীড়নের মুখে গত এক মাসে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারের মিত্র চীন ও ভারত রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের দমনে দেশটির সরকারকে সমর্থন দিলেও পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীর অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের সংস্থানে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য এখন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ, রেডক্রস ও রেডক্রিস্টেন্টের দেওয়া মোট এক হাজার ৩০৩ টন ত্রাণ চট্টগ্রামে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ভারত দুটি বিমান ও একটি জাহাজে ৮০৭ টন, চীন দুটি বিমানে ১১০ দশমিক ৫৩ টন, সৌদি আরব একটি বিমানে ৯৪ টন, ইন্দোনেশিয়া আটটি বিমানে ৭৭ টন, ইরান দুটি বিমানে ৬৮ টন, মরক্কো একটি বিমানে ১৪ টন ও মালয়েশিয়া একটি বিমানে ১২ টন ত্রাণ পাঠিয়েছে। এছাড়া মালয়েশিয়ার রেড ক্রিসেন্ট ১০১ দশমিক ৫ টন ও জাপানি রেডক্রস ১৮ দশমিক ৫ টন ত্রাণ পাঠিয়েছে বাংলাদেশে। এদিকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে এই আলোচনার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসছে ১৫ সদস্যের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সেখানে মিয়ানমারের পরিস্থিতি তুলে ধরবেন। বাংলাদেশও সেখানে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী জানিয়েছেন। রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর এর আগে দুই দফায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছিল নিরাপত্তা পরিষদ। গত সপ্তাহে রাখাইন পরিস্থিতির নিন্দা এবং মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে একটি অনানুষ্ঠানিক বিবৃতিও দেওয়া হয়েছিল। কূটনীতিকরা বলছেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়ার বিষয়ে ভাববে নিরাপত্তা পরিষদ।

তবে মিয়ানমারের মিত্র চীন ও রাশিয়া এ বিষয়ে জোরালো কোনো প্রস্তাব গ্রহণের বিরোধিতা করতে পারে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মিয়ানমার সরকারের সমালোচনায় সোচ্চার হলেও চীন ও রাশিয়া রয়েছে উল্টো অবস্থানে। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের দমনের নামে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই অভিযানকে সমর্থন জানিয়ে আসছে তারা। নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব পাস করতে ১৫ সদস্য দেশের মধ্যে অন্তত নয় দেশের সমর্থনের পাশাপাশি পাঁচ স্থায়ী সদস্য চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের অনাপত্তি দরকার হয়। বর্তমানে মিশর, ইতালি, জাপান, সুইডেন, বলিভিয়া, ইথিওপিয়া, কাজাখস্তান, সেনেগাল, ইউক্রেইন ও উরুগুয়ে নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর