বুড়িগঙ্গায় ঝাঁপি দিয়ে নিহত দুজন স্বামী–স্ত্রী
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ উপজেলায় প্রথম বুড়িগঙ্গা সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে মারা যাওয়া তরুণ–তরুণী স্বামী–স্ত্রী বলে পুলিশ জানিয়েছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার হাসনাবাদ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. রবিউল হক গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ তথ্য জানান। এর আগে সকাল ৯টার দিকে উপজেলার হাসনাবাদ ট্রলারঘাট এলাকায় পোস্তগোলা সেতুর পূর্বপাশে বুড়িগঙ্গায় পাশাপাশি ভাসমান অবস্থায় লাশ দুটি পাওয়া যায়। এ দুজন হলেন ইমন (২০) ও তার স্ত্রী আনিকা (১৮)। ইমন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর এলাকার সুলতানের ছেলে। রাজধানীর সায়দাবাদে তাদের পরিবার ভাড়া বাড়িতে থাকে। অপরদিকে আনিকা রাজধানীর যাত্রাবাড়ির বাসিন্দা মো. অহিদ মোল্লার মেয়ে। ইমনের মায়ের বরাত দিয়ে এসআই রবিউল বলেন, বিয়ের আগে ইমন ও আনিকার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ইমনের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ ছিল। আর আনিকার পরিবার ছিল বিত্তবান। তাই তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি আনিকার পরিবার। এ কারণে সাত মাস আগে ইমন ও আনিকা পালিয়ে বিয়ে করেন। রবিউল বলেন, আনিকার পরিবার তাদের বিয়ে মেনে না নিলেও ছেলে ও ছেলের বৌকে ঘরে তোলেন ইমনের বাবা–মা।
শ্বশুরবাড়ির আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় এবং নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে না পারায় বিয়ের এক মাসের মাথায় শ্বশুরবাড়ি থেকে স্বামীকে নিয়ে আনিকা গাজীপুরে মামার বাড়ি চলে যান। আনিকার মায়ের বরাতে এসআই রবিউল আরও বলেন, মামার বাড়ির লোকজন প্রায়ই ইমনের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করতেন।
তারপরও তারা সেখানে প্রায় ছয় মাস ছিলেন। এক পর্যায়ে আনিকাকে সেখানে রেখে ২৯ অক্টোবর ইমন বাবা–মায় কাছে সায়দাবাদে ফিরে আসেন। কিন্তু তারা কোথায় একত্র হলেন এবং কখন সেতুর মাঝে গিয়ে বুড়িগঙ্গা নদীতে ঝাঁপ দিলেন সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি ইমনের মা, বলেন রবিউল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দুপুরে বুড়িগঙ্গা সেতু ইমন ও আনিকা নদীতে লাফিয়ে পড়েন। গতকাল শুক্রবার সকালে নদীতে পাশাপাশি ভাসমান অবস্থায় তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার হাসনাবাদ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. রবিউল হক জানান, লাশ দুটি উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় এবং উভয় পরিবারের অনুরোধে গতকাল শুক্রবার বিকালে লাশ দুটি বিনা ময়নাতদন্তে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।