January 15, 2025, 8:34 pm

সংবাদ শিরোনাম
ভিসা জটিলতায় বেনাপোল বন্দরে পরিবহন ব্যাবসার ধ্বস তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি সম্পন্ন শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি প্রজেক্টরে ভেসে উঠায় স্থানীয় জনতার প্রতিবাদ ঢাকায় দুই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করলেন সন্ত্রাসীরা: বেনাপোলে ভারতীয় ভয়ঙ্কর ট্যাপেন্টাডোল জব্দ মধুপুর উপজেলা মেম্বার ফোরামের উদ্যোগে তিন শতাধিক কম্বল বিতরণ লামায়-আলীকদম অনুপ্রবেশকালে ৫৮ মিয়ানমার নাগরিকসহ ৫ দালাল আটক শিবচরে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের লিফলেট বিতরন মধুপুর উপজেলা মেম্বার ফোরামের উদ্যোগে তিন শতাধিক কম্বল বিতরণ সেনাবাহিনীর অভিযানে নবীগঞ্জ থেকে দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

কওমি শিক্ষা পুরোপুরি রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকবে:শিক্ষা মন্ত্রণালয়

প্রকাশ দেব::

শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কওমি মাদ্রাসাগুলোকে একটি কাঠামোয় ফিরিয়ে আনার কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পর্যবেক্ষণ নিয়ে শিক্ষা আইনের যে খসড়া পুনর্গঠন করা হচ্ছে তাতে কওমি থাকছে গুরুত্বের সঙ্গে। আইন সম্পন্ন হলে কওমি শিক্ষা পুরোপুরি রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

গত বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত সংক্রান্ত বৈঠকে কওমি মাদ্রাসা সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ওই বৈঠকে অংশ নেওয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ‘সরকারের নিয়ন্ত্রণে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কার্যক্রম উন্নয়ন করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। কারণ সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। তাই সরকারের নিয়ন্ত্রণে রেখে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে শিক্ষা কার্যক্রমের উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে কওমি শিক্ষার বিষয়টি আইনের খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।’

প্রসঙ্গত, গত বছরের চূড়ান্ত করা শিক্ষা আইনের খসড়ায় উল্লেখ ছিল, ‘সরকার কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রমের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পর্যবেক্ষণে কওমি শিক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খসড়াটি পরিমার্জনের কথা বলা হয়।

জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি  বলেন, ‘কওমি শিক্ষা নিয়ে অনেক রকম মত আছে। কিন্তু অনেক ছেলেমেয়ে যেখানে লেখাপড়া করছে তাদের বাদ দিয়ে শিক্ষা আইন করলে আইনটি অসম্পূর্ণ থাকে। তবে এখনই বেশি বলার সময় আসেনি।’

শিক্ষাবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী  বলেন, ‘দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের সন্তান কোথায় কী লেখাপড়া করছে তা আমাদের জানা দরকার। কওমিসহ দেশের সব শিক্ষা ধারাকে একটি ছাতার নিচে এনে যার যার নিজস্ব স্বাতন্ত্র বজায় রেখে চালাতে হবে। সবাই যেন তা জানে। এই শিক্ষা ধারাকে একটি রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে আসতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে, তাদের আয়ের উৎস কী, তাদের পাঠ্যক্রম কী, কী শেখাচ্ছেন আমাদের তো জানতে হবে।’

রাশেদা কে চৌধুরী আরও বলেন, ‘এটি তাদের কল্যাণেই করা প্রয়োজন। অধিকাংশ মানুষের মনের মধ্যে তাদের নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। জঙ্গি প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠবে না যদি তারা একটি কাঠামোর মধ্যে থাকে। তারা যদি স্বচ্ছ থাকেন তাহলে প্রশ্ন ওঠবে না।  তাদের শিক্ষাক্রমে বেকার তৈরি হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাঠামোর মধ্যে থাকা প্রয়োজন, কারণ শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান।’

২০১৩ সালের ৫ এপ্রিল রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজত কাণ্ডের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করা হয়েছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সফল করার লক্ষ্যে। আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলন এবং গত বছর মামুনুল হককে গ্রেফতারের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের দিয়ে সহিংসতা চালানো হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

ওই ঘটনার পর বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে কওমি শিক্ষাকে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আনার। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর ৩ মে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায়ও কওমি শিক্ষাকে সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি জানানো হয়।

ওই সভায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর যে শিক্ষা ভাবনা ছিল, তার গঠিত ড. কুদরত-ই-খোদা শিক্ষা কমিশনের যে শিক্ষা আমরা পাই, তার আলোকে ২০১০ সালে আমরা যে শিক্ষানীতি করেছি, তা অনুসরণ করার চেষ্টা আমরা করছি। তার বিপরীতে শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি অংশ বিশেষত কওমি শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কওমিদের যে কর্মকাণ্ড সেগুলো সকল আলোচকের মাধ্যমে ওঠে এসেছে। একদিকে দেশটিকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আরেক দিকে একটি চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। সেই কাজের জন্য বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসাগুলোর শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেছিলেন, ‘যেকোনও শিক্ষাই হোক, সেখানে যদি মানবিকতার শিক্ষা না দেওয়া হয়, সমাজ সম্পর্কে শেখানো না হয়, দেশের প্রতি ভালোবাসা শেখানো না হয়, শিক্ষার্থীরা পরমতসহিষ্ণুতা যদি না শেখে, তাহলে তাকে শিক্ষা বলা যায় না। কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কীভাবে চালাবেন— তার চেয়ে বড় হচ্ছে মানবিকতার বিষয়গুলো অবশ্যই থাকতে হবে। ’

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর