মোংলা প্রতিনিধি
‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা, তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৬৬ তম জন্মবার্ষিকী রবিবার (১৬ অক্টোবর)। বাংলাদেশের কবিতায় অবিস্মরণীয় এই কবির শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাকে দিয়েছে সত্তরের অন্যতম কবি-স্বীকৃতি। ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান কবি রুদ্র। কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবির গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের মোংলার মিঠাখালীতে রবিবার সকালে শোভাযাত্রা সহকারে কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ মাহফিল, কুরয়ান খতম, ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে রুদ্র স্মৃতি সংসদ। রুদ্রের জন্মবার্ষিকী একযোগে পালন করবে সস্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট মোংলা, মোংলা নাগরিক সমাজ, প্রথম আলো বন্ধুসভা মোংলা, মিঠাখালী বাজার বণিক সমিতি, মোংলা সাহিত্য পরিষদ, মোংলা কবিতা পরিষদ, শিরিয়া বেগম মধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যাপীঠ, সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সমূহ। এ ছাড়া সন্ধ্যায় মিঠাখালী বাজার পাদদেশে রুদ্র স্মৃতি সংসদের আয়োজনে কেক কাটা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্টানে রুদ্রের কবিতা আবৃত্তি ও রুদ্রের গান পরিবেশিত হবে। অকাল প্রয়াত এই কবি নিজেকে মিলিয়ে নিয়েছিলেন আপামর নির্যাতিত মানুষের আত্মার সঙ্গে। সাম্যবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহ্য চেতনা ও অসাম্প্রদায়িকবোধে উজ্জ্বল তার কবিতা। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরনো শকুন’ এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি উচ্চারণ করেছেন অবিনাশী স্বপ্ন ‘দিন আসবেই- দিন সমতার। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্র প্রতীক’ এ। একইসঙ্গে তার কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা। মাত্র ৩৫ বছরের (১৯৫৬-১৯৯১) স্বল্পায়ু জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দু’বছর ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন কবি রুদ্র।