January 15, 2025, 12:41 pm

সংবাদ শিরোনাম
তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি সম্পন্ন শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি প্রজেক্টরে ভেসে উঠায় স্থানীয় জনতার প্রতিবাদ ঢাকায় দুই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করলেন সন্ত্রাসীরা: বেনাপোলে ভারতীয় ভয়ঙ্কর ট্যাপেন্টাডোল জব্দ মধুপুর উপজেলা মেম্বার ফোরামের উদ্যোগে তিন শতাধিক কম্বল বিতরণ লামায়-আলীকদম অনুপ্রবেশকালে ৫৮ মিয়ানমার নাগরিকসহ ৫ দালাল আটক শিবচরে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের লিফলেট বিতরন মধুপুর উপজেলা মেম্বার ফোরামের উদ্যোগে তিন শতাধিক কম্বল বিতরণ সেনাবাহিনীর অভিযানে নবীগঞ্জ থেকে দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার নাটোরে ফেন্সিডিলসহ ২ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি স্মার্টকার্ডের মান থাকবে না আগের মতো

সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি স্মার্টকার্ডের মান থাকবে না আগের মতো

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক


বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সরকার যে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড দিচ্ছে তা তৈরির জন্য চলতি বছরের শেষে নতুন করে অর্থায়নে আগ্রহী নয় বিশ^ব্যাংক। একারণে নিজস্ব অর্থায়নেই তা চালু রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে স্মার্ট কার্ডগুলোর মানের অবনতি হবে। জানা গেছে, আগামী বছরের শুরু থেকে স্মার্টকার্ড আর এখনকার কার্ডের মতো ‘স্মার্ট’ থাকবে না। আকৃতিতে বর্তমান কার্ডের সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া গেলেও অন্য অনুষঙ্গগুলোতে পরিবর্তন আসবে। বিশেষ করে কার্ডটির দীর্ঘস্থায়ীত্বের জন্য যে উন্নতমানের লেমিনেটিং পেপার ব্যবহার হতো, এখন থেকে আরেকটু কম মূল্যের (লেমিনেটেড) পেপারে এই কার্ডটি মোড়ানো থাকবে। একইভাবে, বর্তমানে স্মার্টকার্ড পরিচয়পত্রটির সঙ্গে একটি সুদৃশ্য খাম এবং খামের অভ্যন্তরে কার্ডটি সংরক্ষণ ও ব্যবহারের নির্দেশিকা সংবলিত একটি চিরকুট থাকত; আগামীতে সেগুলোও বাদ দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রতিটি বিতরণ কেন্দ্রে ২৫০টি কার্ডের জন্য আলাদা আলাদা বক্স নম্বর দিয়ে সেগুলো সংরক্ষণ করা হতো, এর জন্য জনবল এবং জায়গাও বেশি লাগত। আগামী বছর থেকে এগুলো কমে যাচ্ছে। জাতীয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর অ্যানহান্সড অ্যাক্সেস টু সার্ভিস (আইডিইএ) প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বলছে, ফ্রান্সের ওবারথু কোম্পানির সঙ্গে জুনে চুক্তির পরিসমাপ্তিতে গত ২৭ আগস্ট থেকে নিজস্ব ব্যবস্থায় স্মার্টকার্ড মুদ্রণ হচ্ছে। সরকারি অর্থায়নে এ কার্ড তৈরিতে ব্যয় সংকোচন নীতির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গৃহীত নীতি বাস্তবায়িত হলে মোট খরচ থেকে ৫০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবনার খসড়া তৈরি হচ্ছে। এবিষয়ে ইসির একজন অতিরিক্ত সচিব জানান, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে চলমান আইডিইএ প্রকল্পের আদলে তৈরি নতুন প্রকল্প প্রস্তাবটি শিগগিরই পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে, যাতে আগামী বছরের শুরুতেই এটার বাস্তবায়ন শুরু করা যায়। যাচাই-বাছাই শেষে তা একনেক বৈঠকে অনুমোদনের জন্য প্রস্তুত করা হবে, সরকারের অনুমোদন পেলেই বছর শেষে নতুন প্রকল্পের অধীনে স্মার্ট কার্ড বিতরণ চলবে। এদিকে, নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় একহাজার ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ভোটার তালিকা প্রস্তুত এবং জাতীয় পরিচিতি সেবা প্রদানে টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক এক নতুন প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ২০০৮ সাল থেকে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন চালুর পর নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালনায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আইডিইএ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এ প্রকল্পের আওতায় নাগরিকদের স্মার্ট কার্ড দিতে ২০১৫ সালে ফরাসি কোম্পানি অবারর্থু টেকনলজির সঙ্গে চুক্তি হয়; কয়েক দফা বাড়ানোর পর ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে প্রকল্পটির মেয়াদ। নতুন করে বিদ্যমান প্রকল্পটিতে অর্থায়নে বিশ্বব্যাংক আগ্রহী হচ্ছে না; অন্যদিকে জটিলতার কারণে অবার্থর টেকনলজির সঙ্গে চুক্তিও বাতিল করেছে ইসি। বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপি’র সহায়তায় আইডিইএ প্রকল্পের আওতায় ২০১১ সালের জুলাইয়ে ৯ কোটি ভোটারকে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে স্মার্টকার্ড  উৎপাদন-বিতরণে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান অবার্থুর টেকনোলজিসের সঙ্গে চুক্তি করে ইসি। প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের জুনে। পরে এর মেয়াদ ১৮ মাস বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে লক্ষ্যপূরণও হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রস্তাবিত প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১৮ সালের ১ লা জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া এবং আর নবায়ন না  হওয়ায়, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে ইসির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্মার্টকার্ডে কিছু পরিবর্তন করে বিতরণ করা হবে। ব্যয় কমানোর জন্য এই পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে স্মার্টকার্ডের মানের ক্ষেত্রে। তবে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে স্মার্টকার্ডের আকার কিংবা আকৃতিতে কোনো ধরনের পরিবর্তন হবে না। ভোটার নাগরিকের তথ্যও থাকবে অবিকল। শুধু অপরিহার্য নয়; এমন উপাদান স্মার্ট পরিচয়পত্র থেকে বাদ দেয়া হবে। এতে কোনো ক্ষতির শঙ্কা নেই। বরং সময়, জনবল এবং ব্যয় কমবে। কারণ ইতোমধ্যে বিতরণ হওয়া সুদৃশ্য খামে মোড়ানো স্মার্টকার্ডটি সংশ্লিষ্ট ভোটার নাগরিক পাওয়ার পর খামটি সংরক্ষণে রেখেছে কিংবা নির্দেশিকাটি পড়ে দেখেছেন, এমন কোনো দৃশ্য তাদের বিতরণকারী কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে আসেনি। উল্টো কার্ডটি হাতে নিয়েই খামটি ফেলে দিয়েছেন খোলা ময়দানে। এতে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হয়েছে; তেমনি জায়গাটিতে ময়লার স্তূপে পরিণত হয়েছে। অথচ একটি খামের বিপরীতে ব্যয় হয়েছে ৬-৭ টাকা; ব্যয় হয়েছে নির্দেশিকার পেছনেও। এ বিষয়ে আইডিইএ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও এইআইডি উইংয়ের ডিজি ব্রি. জে. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, স্মার্টকার্ডের ব্যয় সংকোচনে একটা পর্যালোচনা চলছে। পর্যালোচনার মধ্যে কার্ডের খাম ও নির্দেশনা রাখা হচ্ছে না। এতেই আমাদের ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা সেভ হচ্ছে। কারণ কার্ডটি পাওয়ার পর খামটি ছিড়ে ফেলে এবং নির্দেশিকায় কি লেখা আছে তা পড়েও দেখে না। শুধু খাম থেকে কার্ডটি বের করে বলে সুন্দর হয়েছে। তবে, প্রস্তাবটি কমিশনে দেব তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর