December 22, 2024, 7:15 pm

সংবাদ শিরোনাম
পুলিশ ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়, পুলিশ ও জনগণ একে অন্যের পরিপূরক-রেজাউল করিম মল্লিক দলের পরিবর্তন হয়েছে চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি শায়খে চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করীম আপনারা শান্তিতে থাকুন আমরা চাই,আমাদেরকেও আপনারা শান্তিতে থাকতে দিন- ডা. শফিকুর রহমান যশোরে গাছের সাথে বাসের ধাক্কায় নিহত ১ পার্বতীপুরে ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা ২০২৪ অনুষ্ঠিত বাংলাভিশন ডিজিটালের নির্বাহী সম্পাদকের বিরুদ্ধে নাবিলের অপপ্রচারের প্রতিবাদ হিলিতে বিজিবি দিবসে বিএসএফকে মিষ্টি উপহার বিজিবির কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে আওয়ামী লীগের নেতা গ্রেপ্তার পটুয়াখালীতে বাড়ির সীমানা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত-৬ গভীর রাতে আশ্রায়ন প্রকল্পের শীতার্তদের পাশে হাকিমপুরের ইউএনও অমিত রায়

রাষ্ট্রায়ত্ত তিন পাটকল বন্ধ

রাষ্ট্রায়ত্ত তিন পাটকল বন্ধ


পাটকে একসময় বলা হতো বাংলার সোনালি আঁশ। নারায়ণগঞ্জকে বলা হতো প্রাচ্যের ডান্ডি। সেসব দিনও নেই, পাটের সেই সমাদরও নেই। সিনথেটিক আঁশ পাটের জায়গা দখল করে নিয়েছে। ফলে পাটের উৎপাদন কমেছে। এশিয়ার বৃহত্তম পাটকল আদমজীসহ অনেক পাটকলই বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু পাটকল এখনো কোনো রকমে নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখলেও অবস্থা বিশেষ ভালো নয়। অথচ এই পাট ভৌগোলিকভাবেই বাংলাদেশের ফসল। বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা পাটের জিনোম আবিষ্কার করেছে। পাটের হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনার কিছু সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। পরিবেশের স্বার্থে আন্তর্জাতিকভাবেও অপচনশীল সিনথেটিক ফাইবার বর্জনের দাবি জোরদার হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার পাটশিল্পের উন্নয়নে বিশেষ মনোযোগী হয়। আগের আমলে বন্ধ হয়ে যাওয়া অনেক পাটকল আবার নতুন করে চালু করা হয়। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটির কারণে সেগুলো খুব একটা ভালোভাবে যে চালানো যাচ্ছে না তার প্রমাণ চার দিনে খুলনার তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ হয়ে যাওয়া। আট সপ্তাহ ধরে বেতন না পাওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। কেন এমন হচ্ছে তার কারণ খুঁজে দেখতে হবে এবং তা দূর করতে হবে। তা না হলে এই শিল্পে আবার চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
পাটকলগুলোতে কর্মরত শ্রমিকরা সাপ্তাহিক ভিত্তিতে পারিশ্রমিক পান। তাঁদের অর্থনৈতিক অবস্থা এতটা ভালো নয় যে এক সপ্তাহের জায়গায় আট সপ্তাহ বেতন না পেলেও তাঁরা পরিবার-পরিজন নিয়ে চলতে পারবেন। তাই বলা যায়, নিরুপায় হয়েই তাঁরা উৎপাদন বন্ধ করে আন্দোলনে গেছেন। এজন্য তাঁদের দোষারোপ করা কোনোভাবেই সংগত হবে না। মিলের ব্যবস্থাপনায় যাঁরা আছেন আগে থেকেই তাঁদের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া উচিত ছিল। আপৎকালীন শ্রমিকদের পারিশ্রমিক দেওয়ার মতো একটি তহবিল রক্ষা করা যেত। মন্ত্রণালয় বা সরকারের কাছেও সহযোগিতা চাওয়া যেত। কিভাবে এমন পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায়, তা আগে থেকেই ভাবা উচিত ছিল। শ্রমিকরা আট সপ্তাহ বেতন না পেলেও অভুক্ত অবস্থায় উৎপাদন অব্যাহত রাখবেন, এমন ভাবার কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, উৎপাদিত পণ্য স্তূপ হয়ে আছে, বিক্রি হচ্ছে না, তাই বেতন দেওয়া যাচ্ছে না। সরকার সম্প্রতি সিনথেটিক বস্তায় চাল পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা তিন মাসের জন্য শিথিল করেছে। তাতে পাটের বস্তার বিক্রি হয়তো কিছুটা কমেছে। কিন্তু বকেয়া বেতনের সমস্যা তো তার আগে থেকেই রয়েছে।

সরকারকেও ভেবে দেখতে হবে সমস্যা কোথায়? অতীতে দেখা গেছে, বাজারের চিনির জন্য হাহাকার থাকলেও রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোর চিনি স্তূপ হয়ে থাকে। পাটপণ্যেরও একই অবস্থা। কারণ কী? পাটশিল্পের উন্নয়নে সরকারকে সামগ্রিক পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। শুধু কিছু ভর্তুকি দিলেই সব সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে হয় না। আমরা আশা করি, অবিলম্বে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করে পাটকলগুলো আবার চালু করা হবে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর