October 18, 2024, 10:10 am

সংবাদ শিরোনাম
ফুটওভার ব্রিজের উপর থেকে টার্গেট ছিনতাইকারীদের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইমরানের রাজউকে শক্তিশালী সিন্ডিকেট তথ্য সংগ্রহকালে সাংবাদিককে হুমকি বারুদের গন্ধ বিশ্ববাসী সহ্য করতে পারছেন না (পর্ব ১৩) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল( বিএনপি) ভুল পথে কেন (পর্ব- ১২) মাতৃভূমি সুরক্ষার জন্য আবারো রক্ত দিতে হবে কেন? পর্ব -১১ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে তিনজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ নবাবগঞ্জে বজ্রপাতে দুই বিয়াইয়ের মৃত্যু শাহবাগে ছাত্র জমিয়তের সীরাত সম্মেলন অনুষ্ঠিত সুন্নাহর মাঝেই রয়েছে বৈষম্যমুক্ত আদর্শ দেশ গড়ার চাবিকাঠি কুড়িগ্রামে হত্যায় মামলায় সাংবাদিকদের আসামী! কক্সবাজারে অভিযানে ৬ দূর্বৃত্ত অস্ত্র সহ আটক

সীমান্ত ঘেঁষে স্থায়ীভাবে অবস্থান মায়ানমার সেনাবাহিনীর

সীমান্ত ঘেঁষে স্থায়ীভাবে অবস্থান মায়ানমার সেনাবাহিনীর

আন্তর্জাতিক রীতির লঙ্ঘন : বাংকার স্থাপনের অভিযোগ

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা বান্দরবানের তমব্রু সীমান্ত ঘেঁষে স্থায়ীভাবে অবস্থান নিতে শুরু করেছে মায়ানমারের সেনাবাহিনী। গত মঙ্গলবার থেকে এই সীমান্ত ঘেঁষে স্থায়ী অবস্থান নিয়েছে তারা। ক্রমেই তারা সীমান্তে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করেই চলছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, মায়ানমারের সেনাবাহিনী সীমান্ত এলাকায় শুধু অবস্থানই নেয়নি তারা রীতিমত বাংকার স্থাপন করে পালাক্রমেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। সীমান্ত ঘেঁষে মায়ানমার সেনাবাহিনীর উস্কানিমূলক দীর্ঘস্থায়ী এই অবস্থানকে সৈন্য সমাবেশ বলে মনে করছেন অনেকেই।
নানাভাবে একের পর এক উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে মায়ানমারের সেনাবাহিনী। তাদের সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারের আকাশসীমা লঙ্ঘন, সীমান্তে ড্রোন ওড়ানো, সীমান্তে নো ম্যান্স ল্যান্ডে স্থল মাইন স্থাপন ও কাঁটাতারের বেড়া স্থাপনের মধ্যদিয়ে একাধিকবার সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করেই চলছে। এসব ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বাংলাদেশ সরকারে পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
উস্কানিমূলক এসব কর্মকাণ্ড চালিয়েও ক্ষান্ত নেই মায়ানমারের সেনাবাহিনী এবার তারা সীমান্ত ঘেঁষে স্থায়ীভাবে অবস্থান নিয়েছে।


স্থানীয়রা জানিয়েছে, বিশেষ করে যেসব জিরো পয়েন্টে রোহিঙ্গা অবস্থান রয়েছে এ ধরণের ৩টি স্থানে দিনরাত পালা করে মায়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী-বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)’র পাশাপাশি সেনাবাহিনীও দায়িত্ব পালন করছে।
তবে মায়ানমার সেনাবাহিনীর এ ধরণের উস্কানিমূলক কাজে বাংলাদেশ জবাব দেবে না বলে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে সীমান্ত পরিদর্শনে আসা অতিরিক্ত পুলিশ মহা পরিদর্শক মোখলেসুর রহমান। এ সময় তিনি বলেন, আমরা বিশ্ব জনমতসহ কূটনৈতিকভাবে এই সমস্যার সমাধান চাই।
এ অবস্থায় সীমান্তে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি নজরদারি বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ৩৪ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্ণেল মঞ্জুরুল হাসান খান বলেন, আমরা একে হুমকি মনে করছি না। অন্যদিকে আমাদের আর যা যা করা প্রয়োজন তা করছি।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বা বর্ডার বাহিনী। সেনাবাহিনী মোতায়েন আন্তর্জাতিক রীতির লঙ্ঘন। এ অবস্থায় সীমান্তে শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি নজরদারি বাড়িয়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীÑবর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
জানা গেছে, পার্বত্য জেলা বান্দরবানের তমব্রু সীমান্ত ঘেঁষে গত ৩ দিন ধরে অবস্থান করছে মায়ানমার সেনাবাহিনীর কয়েকটি দল। সকাল-দুপুর এবং সন্ধ্যায় দিনের ৩ ভাগে তাদের দায়িত্ব পরিবর্তন হচ্ছে। ৩টি ট্রাকে করে ঐ পয়েন্টে মায়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিজিপি)-এর পাশাপাশি আসা-যাওয়া করছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। বর্ডার গার্ড পুলিশ সদস্যরা তারকাঁটা স্থাপন করলেও সশস্ত্র সেনাসদস্যরা অদূরে অবস্থান নিয়ে থাকছে।


স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছে, শুধু তমব্রু সীমান্ত নয়। বাংলাদেশের চাকমাপাড়া এবং বাইশারী সীমান্ত এলাকায়ও অবস্থান নিয়ে রয়েছে মায়ানমার সেনাবাহিনী। তবে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিতে তারা দিনের বেশিরভাগ সময় ঘনজঙ্গলে সশস্ত্র অবস্থান নিয়ে থাকে।
এ প্রসঙ্গে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল জানান, সীমান্তে মায়ানমারের সেনাবাহিনী মোতায়েন আন্তর্জাতিক রীতির লঙ্ঘন। তিনি বলেন, সীমান্তে নো ম্যান্স ল্যান্ডে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে তা আন্তর্জাতিক রীতির সরাসরি লঙ্ঘন।
প্রসঙ্গত: তমব্রু-চাকমাপাড়া এবং বাইশারী এলাকার জিরো পয়েন্ট বা নো ম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থান নিয়েছে মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা। মূলত এরা যাতে ফের মায়ানমারের ভূখন্ডে ফিরতে না পারে সেই জন্য নেয়া হচ্ছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
এদিকে, মায়ানমারের কঠোর মনোভাব ও সামরিক প্রস্তুতি এটাই প্রমাণ করে যে ভবিষতে তার জীবন নিয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গদের ফিরতে নেবে বলে মনে হয় না। এ প্রসঙ্গে তারা থোড়াই কেয়ার করে বলে প্রতিয়মাণ হচ্ছে। কারণ যখন রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্ববাসী নিন্দা জানাচ্ছে ঠিক তখনো আগুনের পুড়ছে রাখাইন রাজ্যের গ্রামের পর গ্রাম। গতকালও মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ অব্যাহত রয়েছে। মংডুতে গত ২৪ ঘণ্টায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। মংডুতে গতকাল শুক্রবার দুপুরে রোহিঙ্গাদের ৮টি বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে গত বৃহস্পতিবার রাতেও আরো ১৫টি বাড়িতে আগুন দেয়া হয়।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর