October 7, 2024, 6:24 pm

সংবাদ শিরোনাম
মাতৃভূমির এক ইঞ্চি জমি ছাড় দেওয়া হবে না, পর্ব ৬ স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি রক্ষা করতে হলে প্রতিটি ঘরে সেনাবাহিনী তৈরি করতে হবে(পর্ব-৫) আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জামায়াত নেতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হলে সশস্ত্র ট্রেনিং এর প্রয়োজন। বৈষম্য বিরোধী অভিভাবক ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কমিটির (পর্ব- ৪) ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে গড়তে হলে সংস্কার প্রয়োজন=== বৈষম্য বিরোধী অভিভাব ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে অদ্ভুতুরে কাণ্ডকীর্তি ভোলা বোরহানউদ্দিনে প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকগণের ১০ম গ্রেডের দাবিতে মানববন্ধন শারদীয় দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের লক্ষে বগুড়ায় বিএনপির মতবিনিময় সভা! লক্ষ্মীপুরে কুমিরের আতঙ্কে এলাকাবাসী

বাতরোগ থেকে যেভাবে মুক্তি পেতে পারেন

বাতরোগ থেকে যেভাবে মুক্তি পেতে পারেন

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

আর্থ্রাইটিসের ফলে সন্ধির চারপাশের টিস্যু বা কলাসহ শরীরের অন্যান্য ইন্দ্রিয়েও ব্যথা হতে পারে। শরীরের সন্ধি বা গিঁঠগুলো ফুলে বড় হয়ে যায় এবং অসহ্য ব্যথা হয়। কোনো কোনো সময় নড়াচড়া করাটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। এ রোগের ফলে শরীরের টিস্যুগুলো ভুলবশত তাদের নিজেদের সুরক্ষাব্যবস্থা দ্বারাই আক্রমণের শিকার হয়ে থাকে।

বাতরোগ থেকে মুক্তির উপায়

বাতরোগ কী?

বাতরোগ বা আর্থ্রাইটিস হচ্ছে এমন একটি রোগ যার ফলে সন্ধিতে দীর্ঘকালীন ব্যথা হয়। আর্থ্রাইটিসের ফলে সন্ধির চতুর্পাশের টিস্যু বা কলাসহ শরীরের অন্যান্য ইন্দ্রিয়েও ব্যথা হতে পারে। শরীরের সন্ধি বা গিঁঠগুলো ফুলে বড় হয়ে যায় এবং অসহ্য ব্যথা হয়। কোনো কোনো সময় নড়াচড়া করাটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। এ রোগের ফলে শরীরের টিস্যুগুলো ভুলবশত তাদের নিজেদের সুরক্ষাব্যবস্থা দ্বারাই আক্রমণের শিকার হয়ে থাকে। সুরক্ষাব্যবস্থা কোষের একটি জটিল গঠন ধারণ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিজেই আক্রমণকারী হিসেবে শরীরের বিরুদ্ধে ‘খুঁজে বের করা এবং ধ্বংস করা’নীতি অনুসরণ করে। রোগীদের রক্তে এমন কিছু অ্যান্টিবডি (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা) আছে যা তাদের নিজেদের শরীরের টিস্যুগুলোকে লক্ষ্যবস্তু মনে করে এবং এর ফলে ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে। যেহেতু আর্থ্রাইটিস একটি দীর্ঘকালব্যাপী রোগ তাই অনেক সময় কোনো রকম উপসর্গ ছাড়াই দীর্ঘদিন পরে এটি রোগীদের দেহে প্রকাশ পায়।

আর্থ্রাইটিস প্রধানত দুই প্রকার- অসটিও আর্থ্রাইটিস এবং রিইমেটয়িড আর্থ্রাইটিস। রিউমেটয়িড আর্থ্রাইটিস শুধু রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা যায়। গবেষকরা প্রায় ১০০ ধরনের আর্থ্রাইটিস শনাক্ত করেছেন। সব ধরনের আর্থ্রাইটিসেই সন্ধিতে ব্যথা হয়। ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ করলে উপকার পাওয়া যায়, কিন্তু তারপর, যখন ব্যথা কমে যায়, ধীরে ধীরে সন্ধির ক্ষতি হতে থাকে। দুই অস্থির সংঘর্ষের ফলে তরুণাস্থি পুরোপুরি পাতলা হয়ে যেতে পারে, যার ফলে তীব্র ব্যথার সৃষ্টি হয়। এখনো পর্যন্ত এটিই আর্থ্রাইটিসের ভয়াবহ পরিণাম যা শুধু সন্ধি প্রতিস্থাপন চিকিৎসার মাধ্যমে সমাধানযোগ্য। মাঝারি ধরনের আর্থ্রাইটিসে অ্যাসপিরিনের সাহায্যে চিকিৎসা করা যায়, যা খুবই পুরনো পদ্ধতি এবং বিতর্কিতও বটে। অ্যাসপিরিনের ফলে বহু মানুষের মধ্যে পাকস্থলীর সমস্যা, রক্তক্ষরণ এবং কানে শব্দ হওয়াসহ অবাঞ্ছিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। আর্থ্রাইটিস এবং অন্যান্য ব্যথাজনিত রোগের জন্য NSAIDs (Non Steroidal Anti-Inflammatory Drugs) বা স্টেরয়েডবিহীন ব্যথানাশক ওষুধ একটি নতুন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি। রোগ যদি চিকিৎসা করানোর মতো মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছে তবে সরাসরি একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। মাঝারি ধরনের আর্থ্রাইটিসে ব্যথা কমানোর জন্য একটি পস্নাস্টিকের ব্যাগে বরফ ভরে ব্যবহার করুন। কখনো ত্বকের ওপর সরাসরি বরফ রাখবেন না।

কী কারণে বাতরোগ হয়?

আর্থ্রাইটিসের কারণ এখনো অজানা। যদিও আগে থেকেই সংক্রামক ব্যাধির উপাদান যেমন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাককে সন্দেহ করা হয়েছে কিন্তু কারণ হিসেবে একটিকেও প্রমাণ করা যায়নি। পৃথিবীব্যাপী আর্থ্রাইটিসের কারণ উদঘাটনের গবেষণা চলছে। ধারণা করা হয় যে আর্থ্রাইটিস হওয়ার প্রবণতা হয়তো বংশগত। এটাও সন্দেহ করা হয় যে নির্দিষ্ট কোনো রোগের সংক্রমণ অথবা পরিবেশের কোনো পরিবর্তন সংবেদনশীল ব্যক্তির সুরক্ষাব্যবস্থাকে সক্রিয় করে তোলে। ভুল পথে পরিচালিত সুরক্ষাব্যবস্থা তখন শরীরের নিজস্ব টিস্যুগুলোকে আক্রমণ করে বসে। এর ফলে সন্ধিতে এবং কখনো কখনো শরীরের বিভিন্ন অঙ্গতে যেমন ফুসফুস অথবা চোখ ফুলে যাওয়া ও ব্যথার সৃষ্টি হয়। এটা এখনো জানা যায়নি ঠিক কোন পরিবর্তনের ফলে আর্থ্রাইটিসের আক্রমণ শুরু হয়। ফলাফল হচ্ছে সন্ধি এবং শরীরের অন্যান্য টিস্যুতে ব্যথা সৃষ্টির জন্য সুরক্ষাব্যবস্থা প্রস্তুত হয়ে যায়। শ্বেতকণিকা (Lymphocytes) সক্রিয় হয় এবং রাসায়নিক বাহক (cytokines, :umor necrosis factor/TNF, interleukin-1/IL-1, and interleukin-6/IL-6) ব্যথার স্থানে জমা হয়। তবে সাধারণত মনে করা হয় এ রোগের কারণ হচ্ছে শরীরে অবাঞ্ছিত অ্যাসিড এবং ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতি। ভেজা এবং ঠান্ডা পরিবেশ ব্যথা বাড়াতে সহায়তা করে।

বাতরোগের লক্ষণ এবং চিহ্নগুলো কী কী?

টিস্যুতে ব্যথার মাত্রার ওপর ভিত্তি করে আর্থ্রাইটিসের লক্ষণগুলো থাকে আবার চলে যায়। যখন শরীরের টিস্যুতে ব্যথা হয় তখন রোগটি সক্রিয় থাকে। যখন টিস্যুতে ব্যথা কমে যায় তখন রোগটি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। ব্যথার উপশম স্বাভাবিকভাবে অথবা চিকিৎসার মাধ্যমে হতে পারে যা এক সপ্তাহ, এক মাস বা এক বছরও থাকতে পারে। উপশমের সময় রোগের লক্ষণগুলো আর দেখা যায় না এবং রোগী সাধারণত ভালো বোধ করে। যখন রোগ আবার সক্রিয় (পূর্বাবস্থায় ফিরে যায়) হয়ে ওঠে তখন লক্ষণগুলো দেখা যায়। রোগের সক্রিয়তা এবং লক্ষণগুলো ফিরে আসাকে ফ্লেয়ার (Flare)  বলে।

যখন রোগ সক্রিয় থাকে লক্ষণগুলোর মধ্যে অবসাদ, শক্তিহীনতা, রুচিহীনতা, জ¦র, পেশি ও সন্ধির যন্ত্রণা এবং সন্ধি শক্ত হয়ে আসা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। পেশি ও সন্ধির শক্ত হয়ে আসা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভোরের দিকে হয়ে তাকে। ফ্লেয়ারের সময় সন্ধি বারবার লাল, স্ফীত এবং ব্যথাযুক্ত হয়ে ওঠে।

আর্থ্রাইটিস সাধারণত একই সঙ্গে একাধিক সন্ধিতে ব্যথা সৃষ্টি করে। প্রাথমিকভাবে লক্ষণগুলো থাকে অল্প। হাত ও কব্জির ছোট সন্ধিগুলোতে বেশির ভাগ সময় ব্যথা থাকে। হাতে ব্যথা হলে দৈনন্দিন সাধারণ কাজে জটিলতা থেকে তা প্রকাশ পায়। যেমন- দরজার হুক বন্ধ করা অথবা বৈয়ামের ঢাকনা খোলা। পায়ের ছোট সন্ধিগুলোতেও ব্যথা হয়। যার ফলে হাঁটলে পায়ে ব্যথা অনুভব হয়, বিশেষ করে ভোরে বিছানা থেকে নেমে হাঁটতে গেলে। কোনো কোনো সময় শুধু একটি সন্ধিতেই ব্যথা হয়। দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা অব্যাহত থাকলে শরীরের টিস্যুসহ তরুণাস্থি এবং হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পরে তরুণাস্থি লোপ পায় এবং হাড়ের সঙ্গে সঙ্গে পেশি ক্ষয় হয়ে যায় ও দুর্বল হয়ে যায়। ফলে সন্ধির বিকৃতি ও বিনাশ ঘটে এবং কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

আর্থ্রাইটিসের প্রদাহ সন্ধি ছাড়াও শরীরের অন্যান্য অঙ্গেও প্রভাব ফেলতে পারে। চোখ ও মুখের গ্রন্থিতে প্রদাহ হলে এসব অংশের জলীয় উপাদান শুকিয়ে গিয়ে sjogren&_s সিনড্রোম হতে পারে। চোখের তরল উপাদান শুকিয়ে গেলে কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। চোখের সাদা অংশে (sclerae) প্রদাহ হলে Seleritis হয় চোখের জন্য ভীষণ বিপদ হতে পারে। ফুসফুসের আবরণে (Pleuritis)  প্রদাহ হলে বড় করে শ্বাস নেয়াসহ বুকে ব্যথা, দম ধরে রাখতে না পারা অথবা কাশি হয়। ফুসফুসের টিস্যু নিজেই ফুসফুসে প্রদাহ, ক্ষত এবং মাঝেমধ্যে প্রদাহজনিত স্ফীতি সৃষ্টি করতে পারে। হৃৎপিন্ডের চতুর্পাশের টিস্যুর প্রদাহকে Pericardium) পেরিকার্ডিটিস  (Pericarditis)  বলে। এর ফলে বুকে ব্যথা হতে পারে যা চিৎ বা উপুড় হওয়ার সময় তীব্র আকারে অনুভ‚ত হয়। বাতরোগের ফলে প্রচুর পরিমাণে রক্তের লোহিত কণিকা এবং শ্বেত কণিকা কমে যায়। শ্বেত কণিকা কমে গেলে পস্নীহা বড় হয়ে যায়। এর ফলে Felty&_s সিনড্রোম হয় এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। কনুই এবং আঙুলের চারদিকে যেখানে সব সময় চাপ পড়ে সেখানে চামড়ার নিচে শক্ত গোটা হতে পারে। কব্জির স্নায়ুগুলো কুঁচকে আসতে পারে এবং এর ফলে Carpal Tunnel সিনড্রোম হতে পারে।

আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে, বাতরোগ (Arthritis)  ব্যথা উপশমের জন্য আপনি যখন প্রথম ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন সঙ্গে সঙ্গেই আপনাকে ব্যথা কমানোর জন্য একটি প্রেসক্রিপশন দেয়া হয়েছিল। নিশ্চয়ই সেই সময় দ্রম্নত ব্যথা কমেও গিয়েছিল। রোগীদের এ ব্যাপারে সাবধান থাকা উচিত যে এ ব্যথা কমার জন্য তাকে পরে অনেক মূল্যও দিতে হবে। স্টেরয়েড মুক্ত ব্যথা কমানোর চিকিৎসা নিন। স্টেরয়েডের প্রতিক্রিয়ায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় পাকস্থলীর সমস্যা হয় এবং আপনাকে আবার নতুন করে পাকস্থলীর চিকিৎসাও করতে হবে। এটি একটি দুষ্টচক্র। এ ছাড়া আপনার লিভার বা যকৃৎও আক্রান্ত হতে পারে এবং অনেক মানুষের মধ্যে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়াও দেখা যায়। আর্থ্রাইটিস শারীরিক অবস্থাকে আরও জটিল করে তুলতে অ্যালার্জিকে জাগিয়ে তুলতে পারে। স্টেরয়েড সংবলিত যেসব ব্যথানাশক রয়েছে সেগুলো শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। নিশ্চয়ই সেগুলো ব্যথা কমাতে পারে কিন্তু পাশাপাশি তা হাড়ের ঘনত্বও কমিয়ে দেয়। তাই একটি সমস্যার উপশম করতে গিয়ে এই ধরনের ওষুধ আপনার হাড়কে দুর্বল করে দিয়ে আরও একটি সমস্যা সৃষ্টি করছে। সূত্র : ইন্টারনেট

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর