ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলনের সংগঠন হামাসকে ব্রিটেনের বর্জন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশের সঙ্গে তার বরখাস্ত হওয়ার সংযোগ রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সাবেক ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাক স্ট্র। গত শনিবারের সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে ১১ বছর আগের সেই গুঞ্জনকে নতুন করে সামনে নিয়ে আসেন স্ট্র। বলেন, ‘হামাসকে বয়কট করায় আমি খুশি ছিলাম না। আমি রিয়াদে কয়েকজন সাংবাদিককে অব দ্য রেকর্ডে (প্রকাশ না করার শর্তে) বলেছিলাম, হামাসের সঙ্গে আমাদের আলোচনা করা উচিত। গত শনিবার লন্ডনে সৌদি সংকট নিয়ে আলোচনার জন্য আয়োজিত সম্মেলনে এমন ইঙ্গিত দেন তিনি। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদ পর্যবেক্ষণকারী ব্রিটিশ ওয়েবসাইট মিডল ইস্ট মনিটর সম্মেলনটির আয়োজন করে। মিডল ইস্ট মনিটরের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৬ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত হয়েছিলেন এই ব্রিটিশ রাজনৈতিক। তখন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গুঞ্জন উঠেছিল, হামাসকে নিয়ে করা এক মন্তব্যের জেরে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের অনুরোধে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। অনেকে বলেন, এসব মন্তব্যের কারণেই আমাকে বরখাস্ত করা হয়ে থাকতে পারে।’ বিদেশি সরকারগুলোর হামাসকে বয়কট করায় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন স্ট্র। তার মতে, আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে সমঝোতার জন্য চাপ দেওয়াটা জরুরি।’ এর আগে গত মাসে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারকে উদ্ধৃত করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। টনি ব্লেয়ার গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ‘২০০৬ সালে ফিলিস্তিনের সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভকারী হামাসকে ইসরায়েলের চাপে বয়কট করা বিশ্ব নেতাদের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।’ গার্ডিয়ান জানায়, সেসময় ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ফাতাহ ও ইসরায়েলের মধ্যকার চুক্তি মেনে নেওয়া ও ইসরায়েলকে স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ওই প্রস্তাব জোরালোভাবে সমর্থন করেছিলেন। তবে হামাস তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল সাড়া দেয়নি। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা ওই নির্বাচনকে মুক্ত ও স্বচ্ছ বলে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। গার্ডিয়ান জানিয়েছে, টনি ব্লেয়ার এখন মনে করছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ছিল হামাসকে সংলাপে রাজি করানোর চেষ্টা করা। বর্তমানে হামাস তাদের সনদ পরিবর্তন করে পিএলওকে ফিলিস্তিনি জনগণের জাতীয় রূপরেখা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং ১৯৬৭ সালে নির্ধারিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সীমানা মেনে নিয়েছে। কিন্তু ২০০৭ সালে গাজা এলাকায় ইসরায়েলের আরোপ করা অর্থনৈতিক অবরোধ এখনও বলবৎ রয়েছে।