December 11, 2024, 1:10 am

সংবাদ শিরোনাম

হ্যামট্র্যাকে স্বদেশীদের ভোট না পাওয়ার আশঙ্কা বাংলাদেশি মেয়র প্রার্থীর

হ্যামট্র্যাকে স্বদেশীদের ভোট না পাওয়ার আশঙ্কা বাংলাদেশি মেয়র প্রার্থীর

ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে ডেট্রয়েটের কাছে একটি ছোট্ট শহর হ্যামট্র্যাকের মেয়র নির্বাচনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন ভোটাররা স্বদেশী প্রার্থী মোহাম্মদ হাসানকে ভোট দেবেন না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নির্বাচনি প্রচারণার শুরুতে বাংলাদেশি এই প্রার্থী বড় ব্যবধানে জয়লাভের প্রত্যাশা করলেও এখন বলছেন লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। কারণ অনেক বাংলাদেশিই তাকে ভোট দেবেন না। মোহাম্মদ হাসান তিনবারের নির্বাচিত মেয়র কারেন মাজেভস্কির বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি নির্বাচিত হলে হ্যামট্র্যাকের প্রথম মুসলিম মেয়র হবেন। একই সঙ্গে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবেও শহরটির মেয়র হবেন তিনি।

৭ নভেম্বর মেয়র নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। তবে এরইমধ্যে আগাম ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে গেছে। কয়েক সপ্তাহ আগেও হাসান নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে ৬০:৪০ অনুপাতে আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু এখন তিনি মনে করেন, ভোটের লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। তিনি জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতি মানুষের সমর্থন হ্যামট্র্যাকের রাজনীতিকেও প্রভাবিত করছে।

হাসান বলেন, আমি আশঙ্কা করছি বাংলাদেশিদের প্রায় ৪০ শতাংশই আমাকে ভোট দেবেন না। কারণ তারা আমাকে আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থক হিসেবে মনে করে। আমি চট্টগ্রামের মানুষ, এটিও একটি বড় কারণ।

গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে হাসানের সাক্ষাৎ করার সমালোচনা করেছেন স্থানীয় বাংলাদেশিরা। হ্যামট্র্যাক ও আশপাশের এলাকার বাংলাদেশি কমিউনিটির অনেক মানুষই বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামির সমর্থক। তারা মেয়র মাজেভস্কিকে সমর্থন জানাচ্ছেন। মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘আমি আস্থার সঙ্গে বলতে পারি বাংলাদেশি যত হিন্দু এখানে আছেন তারা সবাই আমাকে ভোট দেবেন।’ তিনি জানান, শহরে বসবাসরত ইয়েমেনি সম্প্রদায়ের ভোট নিজের পক্ষে নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। হ্যামট্র্যাকের কাউন্সিলে মুসলিমদের সংখ্যাই বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রথম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিল এটি। ছয় সদস্যের কাউন্সিলের তিন জন মুসলিম কাউন্সিলর রয়েছেন। এ ছাড়া শহরটির প্রায় ৪৫ শতাংশ বাসিন্দা অভিবাসী। যাদের বেশির ভাগ এসেছেন বাংলাদেশ ও ইয়েমেন থেকে। প্রচারণার কৌশল হিসেবে হাসান বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাংলাদেশি ছাড়াও সব সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমর্থন চাওয়ার জন্য। অনেক ইয়েমেনি নারী আমার জন্য প্রচারণার চালাচ্ছেন। যদি সবাই আমাকে ভোট দেয় তাহলে আমার জিতে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত গণিত বিদ্যায় মাস্টার্স পাস করার পর ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন হাসান। এরপর থেকেই তিনি অটো শিল্পে কাজ করছেন।

বাংলাদেশি এই মেয়র প্রার্থী জানান, রাজনীতি তার রক্তের সঙ্গে মিশে রয়েছে। তিনি বড় হয়েছেন বাবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও জয় দেখে দেখে। হাসানের গ্রামের চট্টগ্রামের চন্দনাইশে। হাসান বলেন, ‘চট্টগ্রামে আমি গণিত সমিতি’র সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলাম। ওই সময় তা ছিল বড় বিষয়।’

কিন্তু এখন তিনি নির্বাচনে নেমেছেন টানা তিনবারের নির্বাচিত মেয়রের বিরুদ্ধে। পোল্যান্ড বংশোদ্ভূত নারী মাজেভস্কি ২০০৫ সালে প্রথমবার মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৯ ও ২০১৩ সালে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। মাজেভস্কি মুসলিম সম্প্রদায়কে সমর্থন করে আসছেন। এমনকি মসজিদে মাইকে আযান দেওয়া নিয়ে স্থানীয়দের সমালোচনার সময়ও মুসলমানদের পাশে ছিলেন এই মেয়র। এবারের নির্বাচনে তিনি প্রভাবশালী আরব আমেরিকান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটির সমর্থন পেয়েছেন।

 

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর