February 18, 2025, 7:48 pm

সংবাদ শিরোনাম

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত আরও ৫ সপ্তাহ

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত আরও ৫ সপ্তাহ

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক 

 

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের উপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ আবার বাড়িয়ে পাঁচ সপ্তাহ সময় দিয়েছে আপিল বিভাগ। ছয় সপ্তাহের স্থগিতাদেশ চেয়ে করা রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে সাড়া দিয়ে গতকাল বুধবার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের বেঞ্চ স্থগিতাদেশের মেয়াদ ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। এ নিয়ে আট দফা হাই কোর্টের রায় স্থগিতের সময় বাড়ানো হল। এর আগে সর্বশেষ ১০ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেদনে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী আগের দিন মামলাটি আপিলের কার্যতালিকায় এলেও আদালত তা না শুনে গতকাল বুধবার শুনানির দিন ঠিক করে দিয়েছিলেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম; সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও মোতাহার হোসেন সাজু। অন্যপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজীম। পরে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ছয় সপ্তাহের সময়ের আবেদন জানিয়েছিলাম। আদালত পাঁচ সপ্তাহ সময় দিয়েছে। আগামি ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত চলবে। এদিকে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান দেশান বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডর কার্যালয় থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জব্দ করা অনুমোদনহীন ওষুধ স্পিরুলিনাট্যাবলেটগুলো আপাতত জব্দ থাকবেবলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, জব্দকৃত ট্যাবলেট মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কিনা তার বিশেষজ্ঞ প্রতিবেদন গতকাল বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে উপস্থাপনের পর আদালত এ বিষয়ে কেনো আদেশ না দিয়ে ৬ ডিসেম্বর আদেশের দিন রেখেছেন। তিনটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ ও ২০১২ সালে জারি করা রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অবৈধঘোষণা করে ২০১৭ সালের ১১ মে ওই রায় দেয় বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাই কোর্ট বেঞ্চ। ২০০৯ সালের ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের ১১টি ধারা-উপধারা অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে হাই কোর্টের ওই রায়ে বলা হয়, এ আইন বিচার বিভাগের স্বাধীনতারও পরিপন্থি। রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেলে বিষয়টি ২১ মে তা আদালতে ওঠে। অ্যাটর্নি জেনারেল ওই দিন শুনানি ছয় সপ্তাহ পেছানোর আবেদন করলে আপিল বিভাগ ২ জুলাই শুনানির পরবর্তী তারিখ রেখে ওই সময় পর্যন্ত হাই কোর্টের রায় স্থগিত করে দেয়। সেই স্থগিতাদেশের মেয়াদ এ নিয়ে আট দফা বাড়ানো হল। সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালে ভ্রাম্যমাণ আদালত অধ্যাদেশ জারি করে। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বধীন মহাজোট সরকার ২০০৯ সালের ৪ অক্টোবর জাতীয় সংসদে পাস করে তা আইনে পরিণত করে। এরপর থেকে এটি ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন নামে পরিচিত। এ আইনের ৫ ধারায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আইনের ৬(১), ৬(২), ৬(৪), , ৮(১), ৯ ও ১০ ধারায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পদ্ধতি, ১১ ধারায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ক্ষমতা ও ১৩ ধারায় আপিল সংক্রান্ত বিধান রয়েছে। আর ১৫ ধারায় তফসিল সংশোধনে সরকারের ক্ষমতার বিধান রয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ক্ষমতা বাতিল করে দেওয়া হাই কোর্টের রায়ের সার-সংক্ষেপে বলা হয়েছিল, ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের এসব ধারা মাসদার হোসেন মামলার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। একইসঙ্গে সংবিধানের মৌলিক দুটি স্তম্ভ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতির পরিপন্থি। তাই এ ধারাগুলোকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হল।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর