ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স কেউই কাতালুনিয়ার স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেবে না বলে জানিয়েছে। স্পেনের সার্বভৌমত্বের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছে জার্মানি। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, কাতালুনিয়া স্পেনের অখ- অংশ। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, কাতালুনিয়া স্পেনের অখ- অংশ। স্পেনকে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ রাখতে সাংবিধানিক ভাবে মাদ্রিদ সরকার যে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে যুক্তরাষ্ট্র তাতে সমর্থন দিচ্ছে।
জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টেফেন জাইবার্ট বলেন, জার্মান সরকার গভীর উদ্বেগ নিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। আমরা বিশেষভাবে বলতে চাই, এভাবে একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণা স্পেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখ-তার নীতির ঘোরতর লঙ্ঘন। জার্মান সরকার এ ধরনের স্বাধীনতা ঘোষণার স্বীকৃতি দিচ্ছে না এবং শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাখয় যে ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন তার প্রতি সুস্পষ্ট সমর্থন জানাচ্ছে। যুক্তরাজ্য সরকার কাতালুনিয়াকে স্বীকৃতি দেবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, কাতালুনিয়ার আঞ্চলিক পার্লামেন্ট একতরফাভাবে স্বাধীনতার যে ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য তার স্বীকৃতি দেয়নি এবং দেবেও না। স্পেনের আদালত যে গণভোটকে অবৈধ ঘোষণা করেছে তার ভিত্তিতে এ স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছে।
কাতালুনিয়ার চলমান সংকট নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ গত শুক্রবার স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাখয়ের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি সবসময়ই বলেছি, আমার কাছে স্পেনে আলোচনা করার মত একজনই আছেন এবং তিনি হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী রাখয়। ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট জাঁ-ক্লদে জাঙ্কার বলেন, ইইউ ব্লকে যে কোনও ধরনের ‘বিচ্ছিন্নতা’ বা ‘ভাঙন’ এড়িয়ে যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, আমি এমন কোনও পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে দেখতে চাই না যেখানে আগামীকাল ইউরোপীয় ইউনিয় হয়ত ৯৫টি আলাদা আলাদা রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এক টুইটে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিয়েতোও কাতালুনিয়ার স্বাধীনতায় স্বীকৃতি না দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। রাজনৈতিকভাবে কাতালুনিয়া সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
স্পেন সরকারের বিরোধিতা ও আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কাতালুনিয়ার মানুষ গত ১ অক্টোবর স্বাধীনতা প্রশ্নে এক গণভোটে অংশ নেয়। সেখানে প্রায় ৯০ শতাংশ ভোট কাতালুনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে পড়ে বলে ভাষ্য কাতালান সরকারের।
তারই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার বার্সেলোনায় কাতালান পার্লামেন্টের স্বাধীনতা প্রশ্নে ভোটাভুটি হয় এবং বিরোধীদের বয়কটের মধ্যে ৭০-১০ ভোটে কাতালুনিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন পায়। এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে মাদ্রিদে স্প্যানিশ পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ সিনেট কাতালুনিয়াকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে আনার প্রস্তাব পাস করে। পরে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকে প্রধানমন্ত্রী রাখয় কাতালুনিয়ার আঞ্চলিক সরকার ভেঙে দিয়ে নতুন আঞ্চলিক সরকার নির্বাচনে ২১ ডিসেম্বর ভোটের তারিখ ঘোষণা করেন।