জাকির হোসাইন স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১ টায় শহীদ আবুল হোসেন মিলনায়তনে এ সম্মেলন অনুষ্টিত হয় । সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন আগমনকে কেন্দ্র করে সকাল হতেই মিছিলে মিছিলে শহর উত্তপ্ত হয়ে উঠে । সকাল ১১ টায় তিনি শহীদ আবুল হোসেন মিলনায়তনে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের সুচনা করেন। ২৪ বছর পর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে শহরের উৎসব মুখর পরিবেশের তৈরি হয়েছে। সে সঙ্গে ছিলো পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য শহরের গুরুত্বপুর্ন মোড়ে ও প্রধান সড়কে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়ন ছিলো। পরে জেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আরিফুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক অ্যাড মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আলহাজ্ব নুরুল হুদা মুকুট, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদ ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন, সুনামগঞ্জ পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র নাদের বখত,বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক দারুস সালাম সাকিল,যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ সাবেক সভাপতি নজরুল বখত প্রমুখ।
সম্মেলনে অতিথির ব্যানারে জেলার ৩ এমপিকে অতিথি হিসাবে তাদের নাম উল্লেখ থাকলে ও তারা অনুপস্থিত থাকেন। এছাড়া সঞ্চাচলানায় ছাত্রলীগের ৩ জনের নাম উল্লেখ থাকলে ও তারা কেউ সঞ্চাচলানায় ছিলেন না। যারাই বক্তব্য দিয়েছেন তারাই সঞ্চাচলানা করেছেন । সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক জাকির হোসাইন, তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গলি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদেরকে বিন¤্র চিত্তে স্মরন করে সুনামগঞ্জের প্রয়াত আওয়ামীলীগের জাতীয় নেতা ও জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন সুনামগঞ্জে এতো বছর পরে ছাত্রলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতা কর্মীদের মধ্যে আনন্দ দেখা দিয়েছে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জ জেলা উৎসবের জেলায় পরিণত হয়েছে। ছাত্রলীগের নতুন প্রজন্ম নতুন কমিটি ঘোষণার জন্য অধীর আগ্রহে অপক্ষো করছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া সংগঠন। ১৯৪৮ সালে ৪ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখর মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে ছাত্রলীগকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দেশের সকল আন্দোলন সংগ্রামে সামনে সারিতে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশর স্বাধীনতা যুদ্ধে ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রচনা করেছে। সর্বশেষ কোটা বিরোধী আন্দোলনকে নিয়ে যখন বিএনপি,ছাত্রদল, জামায়াত, ছাত্রশিবিরসহ স্বাধীনতা বিরোধীরা নিয়ে যখন আন্দোলন করে বাংলাদেশকে আস্থিতিশীল করতে চেয়ে ছিলো। তখন বাংলাদেশের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিরলস পরিশ্রম করে কোটা বিরোধীদের সকল ষড়যন্ত্র ধুলিসাৎ করে দিয়েছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নিয়ে বিএনপি জামায়াত ষড়যন্ত্র ও নীলনকশা তৈরি কাজ শুরু করে দিয়েছে। ছাত্রলীগ বিশ্বাস করে সুনামগঞ্জে যে কটি আসন রয়েছে আগামী নির্বাচনে সে নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন ছাত্রলীগ কোন প্রার্থীকে বা ব্যক্তিকে চেনে না আমদের নেত্রী জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনাকে চিনি। তিনি সুনামগঞ্জে যেকটি রয়েছে সে আসন গুলোতে নৌকা মার্কা যাকে দেবেন তারপক্ষে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কাজ করবে। জাতীয় নির্বাচনে সুনামগঞ্জের সবটি আসন জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে চাই। এজন্য সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের যে নুতন নেতৃত্ব আসবে তারা সুনামগঞ্জের পাড়ামহল্লায় দেশরতœ শেখ হাসিনার উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দেবেন। আগামীতে যেকোন ষড়যন্ত্র মোকাবেলার জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি। কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রধান অতিথি অ্যাড মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, ছাত্রলীগের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে কিন্তু প্রতিহিংসা থাকবে না। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে সারাক্ষণ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধীরা। কোটা বিরোধী আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে একটি গভীর ষড়যন্ত্র ছিলো। কোটা বিরোধী আন্দোলনের নেপথ্যে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করে ছিলো বিএনপি জামায়াত। তখন দেশরতœ শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শক্তহাতে হাল ধরেছেন। তাদের অগ্রনী ভুমিকার কারণে সেটা সুন্দরভাবে শেষ হয়েছে। তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সবসময় সজাগ থাকবেন। কারণ ছাত্রলীগের শিবির জঙ্গী বিএনপি অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে বিশৃঙ্খলতার সৃষ্টি করতে চাইবে। এবিষয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকবে হবে। ছাত্রলীগে যেন কোন সন্ত্রাসী ডুকতে না পারে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা মুকুট একটি পরিচ্ছন্ন যোগ্যতা সম্পন্ন প্রকৃত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে নুতন কমিটি গঠনের আহ্বান জানান। সম্মেলন শেষে জেলা আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। পরে তিনি নুতন কমিটিতে পদ পতে আগ্রহীদের সঙ্গে সার্কিট হাউজে জীবন বৃত্তান্ত নিতে মিলিত হন।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২১এপ্রিল২০১৮/ইকবাল