আনোয়ার হোসেন আনু-পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
দেশের অন্যতম সমুদ্র সৈকত সাগরকন্যা কুয়াকাটায় পুরাতন বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে বরণ করতে বছরের প্রথম দিনের সূর্যোদয় দেখলেন শত শত পর্যটক দর্শনার্থী। কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে ২০২৫ সালের প্রথম সূর্যোদয়কে স্বাগত জানিয়েছেন আগত পর্যটকরা।
বুধবার (১ জানুয়ারি ) সকালে সূর্যোদয় দেখতে কুয়াকাটা সৈকতে হাজির হন দেশি বিদেশি পর্যটকরা। তবে মেঘ ও ঘন কুয়াশার কারণে ভালোভাবে সূর্যোদয় দেখতে পারেনি পর্যটকরা। তবে মেঘ এবং কুয়াশার কারনে বছরের প্রথম সূর্যোদয় না দেখতে পেলেও আক্ষেপ নেই আগতদের মাঝে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। একই স্থানে দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যায় সূর্যোদয় সূর্যাস্ত। ফলে ভ্রমণ পিপাসুদের প্রথম পছন্দ কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। মনোরম নৈসর্গিক দৃশ্যের হাতছানি ভ্রমণবিলাসী মানুষকে বারবার টেনে আনে সমুদ্রের কাছে।
প্রতিবছর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ও জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি কুয়কাটা। বার্ষিক পরীক্ষার ছুটি ও ইংরেজি নববর্ষের ছুটির আনন্দ উপভোগ করতে আসা প্রকৃতি আর সমুদ্রপ্রেমী মানুষের পদচারণায় মুখর থাকলেও চলতি বছর এর ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে।
থার্টি ফার্স্ট নাইটকে ঘিরে আবাসিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট গুলোতেও আলোক সজ্জা সহ নানা ধরনের বিনোদনের আয়োজন করে। আশা ছিল প্রতিবছর ন্যায় এ বছর বছরের শেষ সূর্যাস্ত ও বছরের প্রথম সূর্যোদয় দেখতে অসংখ্য পর্যটক দর্শনার্থীদের আগমন ঘটবে।
তাদের সে আশা পুরণ হয়নি। একই সময়ে কক্সবাজারে প্রচুর সংখ্যক পর্যটক দর্শনার্থী থাকলেও দেশের অন্যতম এই পর্যটন সৈকত কুয়াকাটায় তেমন একটা পর্যটক নেই। আবাসিক হোটেলের বেশিরভাগ কক্ষই এখন পর্যন্ত ফাঁকা রয়েছে।
পর্যটনমুখী ব্যবসায়ীদের ধারণা ছিল কুয়াকাটায় প্রায় অর্ধলক্ষাধিক পর্যটক দর্শনার্থীদের আগমন ঘটবে। কিন্তু এত স্বল্প সংখ্যক পর্যটক আসায় তারা হতাশ হয়েছে।
করোনাকালীণ ছাড়া সবচেয়ে কম সংখ্যক পর্যটক দর্শনার্থীদের আগমন ঘটেছে এবার থার্টি ফার্স্ট নাইটে।ব্যবসায়ীরা এর জন্য বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে দায়ী করেছেন।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ৩১ ডিসেম্বর নিয়ে গত কয়েক দিন যাবত রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সবার মধ্যে একটা চাপা উদ্বেগ উৎকন্ঠা দানা বেঁধেছে। ৩১ ডিসেম্বর দেশে আবার কি হয়। এমন পরিস্থিতির কারণেই কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পর্যটক তেমন আসেনি।
তাদের ধারণা এ বছর থার্টি ফার্স্ট নাইটে ৫ হাজার পর্যটকও আসেনি। স্থানীয় কিছু দর্শনার্থী সহ কয়েকজন বিদেশি পর্যটক দেখা গেছে। তবে সে সংখ্যাও খুবই কম।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মিলন বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে বছরের প্রথম সূর্যোদয় দেখতে কুয়াকাটা এসেছি । নতুন সূর্যোদয়ের সঙ্গে জীবনের আরও একটি নতুন বছর শুরু হলো। নতুন বছরের সূর্য উদয় দেখতে পেরে খুশি তিনি। তবে কুয়াশার কারণে ভালোমতো দেখা যায়নি।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, ‘এ বছর থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে কুয়াকাটায় পর্যটকের উপস্থিতি খুবই কম। আবাসিক হোটেলগুলোতে ৩০ শতাংশ বুকিং হয়েছে।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল মোতালেব শরীফ বলেন, ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের উপস্থিতি এবার কম। আবাসিক হোটেলগুলোতে ৪০% ছাড় দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বেশিরভাগ আবাসিক হোটেল কক্ষ খালি পরে রয়েছে। এবছর এমন পরিস্থিতি হবে যা কেউই অনুভব করেনি। কথা ভাবতেও পারেনি কেউ। হোটেল মোটেল সংগঠনের নেতৃবৃন্দের আশা নতুন বছরের শুরুতে পর্যটক কম আসলেও সামনের দিনগুলোতে এরকম থাকবেনা।
তবে পর্যটন খাতে শত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে নতুন বছরে পর্যটক দর্শনার্থীদের আগমনে উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করবে এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের। ###
পিডিনিউজ/অনির্বাণ