সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার ৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দফতরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি কাজী রেজা–উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশসহ রুল জারি করেন। অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে ৩৬টি স্কুলের মধ্যে ২৯ স্কুলের দফতরি কাম প্রহরী পদের নিয়োগকৃতদের নিয়োগ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী সাজ্জাদ–উল–ইসলাম। পাশাপাশি এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে আশাশুনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুন নাহারকে ৩১ অক্টোবর তলব করেছেন আদালত। ‘আড়াই কোটি টাকার দুর্নীতি’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদনটি দায়ের করেন দু’টি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও একজন চাকরিপ্রার্থী। আইনজীবী সাজ্জাদ–উল–ইসলাম বলেন, ৩৬টি স্কুলের নিয়োগ পরীক্ষার দিনই (৬ সেপ্টেম্বর) পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এ কারণে অনেক স্কুলে পরীক্ষার দিন পরীক্ষার্থী হাজির হয়েছিলো মাত্র একজন করে। এমনকি অনেক স্কুলের চাকরিপ্রার্থী ছিলেন ম্যানেজিং কমিটির আত্মীয়। এসব বিষয় আইনের লংঘন। এটি নিয়ে পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়। তিনি বলেন, আদালত শিক্ষা কর্মকর্তাকে তলব করে ২৯ স্কুলে দেওয়া নিয়োগ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করেছেন। রুলে ৩৬ স্কুলের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন করে কেন পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন। রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন– শিক্ষা সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, খুলনার প্রাথমিক শিক্ষার ডিভিশনাল ডেপুটি ডিরেক্টর, সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার ৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দফতরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে একজন করে নিয়োগের বিপরীতে প্রার্থীদের কাছ থেকে মাথাপ্রতি ৬ লাখ থেকে ৮ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। এই হিসেবে প্রায় আড়াই কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, ৬ সেপ্টেম্বর উপজেলার ৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অবশিষ্ট ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ করা হবে। এরইমধ্যে প্রতিটি বিদ্যালয়ে নিয়োগের কথা বলে নির্ধারিত পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে আগাম টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রার্থী হাবিবুল্লাহ গাজী জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করেছেন। এতে তিনি নিয়োগে দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরেন। জানতে চাইলে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযোগ সত্য হলে নিয়োগও বাতিল করা হবে।