এস এম আক্কাস সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট এলাকার দোউভাঙ্গা নদী দীর্ঘদিন ধরে ভয়াবহ দূষণের শিকার। স্থানীয় জনস্বাস্থ্য গ্রামীণ টেক্সটাইল প্রতিষ্ঠানটির রাসায়নিক মিশ্রিত বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলার কারণে জনজীবনে দেখা দিয়েছে নানা ধরনের সংকট। গ্রামবাসী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা এ অবস্থাকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে দেখছেন।
দোউভাঙ্গা নদীর দূষণের কারণে নদীর পাড়ের বিলগজারিয়া, ডুমুর ও কদম পাল গ্রামের মানুষজন ব্যাপক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দূষিত পানিতে গোসল করার পর শিশুদের মধ্যে চর্মরোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয়, দূষিত পানি পান করার ফলে গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। গৃহস্থালির দৈনন্দিন কাজেও এই পানি ব্যবহার করতে পারছেন না স্থানীয়রা।
বিলগজারিয়া গ্রামের এক কৃষক বলেন,”আমাদের শিশুদের গায়ে লালচে দাগ পড়ে চুলকানি শুরু হয়েছে। এমনকি গরু-ছাগল নদীর পানি খেলে কয়েক দিনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছে। আমরা বারবার অভিযোগ করেছি, কিন্তু কোনো ফল পাইনি।”
জনস্বাস্থ্য গ্রামীণ টেক্সটাইলের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার ইসহাক হোসেন এই অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন,
“আমাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কিছু সমস্যা রয়েছে। আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি, কিন্তু এখনও শতভাগ সফল হতে পারিনি।”
তবে এই দায় স্বীকারের মধ্যেও কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা সহকারী পরিবেশ কর্মকর্তা জানান, “গ্রামবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা নমুনা সংগ্রহ করে । ল্যাব পরীক্ষার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে যেখানে পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান সারাদেশে পরিবেশ বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছেন, সেখানে সিরাজগঞ্জের এই দূষণকারী প্রতিষ্ঠানটি পরিবেশ রক্ষায় কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়নি।
দূষণের এই সংকট সমাধানে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। দোউভাঙ্গা নদী রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এটি শুধু স্থানীয় জনগণের জন্য নয়, বরং পুরো অঞ্চলের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।