তাজমহল বিশ্বাসঘাতকের তৈরি!
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি দলের সংগীত সোম নামের বিতর্কিত এক নেতা তাজমহল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। গত রোববার এক সমাবেশে বক্তৃতা করার সময় সোম বলেন, তাজমহল বিশ্বাসঘাতকের তৈরি, যা ভারতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী।
সোম বলেন, ‘উত্তর প্রদেশের পর্যটন পুস্তিকা থেকে ঐতিহাসিক জায়গার তালিকা থেকে তাজমহলকে সরিয়ে ফেলায় অনেক মানুষ চিন্তায় রয়েছে। আমরা কোন ইতিহাসের কথা বলছি, যে লোক তাজমহল তৈরি করেছিল, সে তার বাবাকে বন্দী করে রেখেছিল। সে হিন্দুদের হত্যা করতে চেয়েছিল। এটাই যদি ইতিহাস হয়, তবে এটা দুর্ভাগ্য যে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, সে ইতিহাস বদলে ফেলা হবে।’
মুঘল স¤্রাট বাবর, আকবর ও আওরঙ্গজেবকে বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়ে সংগীত সোম বলেন, ‘তাঁদের নাম ইতিহাস থেকে সরিয়ে ফেলা হবে।’
সংগীত সোমের ওই বিতর্কিত মন্তব্য সমর্থন করে বিজেপির সাংসদ অংশুল ভার্মা বলেন, ‘তাজমহল পর্যটনকেন্দ্র। এর সঙ্গে ভারতীয় সংস্কৃতির যোগসূত্র খোঁজা ঠিক হবে না। সোমের বক্তব্যের মধ্যে বিতর্কিত কিছু নেই। একে রাজনীতিকরণ করবেন না।’
২০১৩ সালে মুজাফফরনগরে দাঙ্গায় বিজেপি নেতা সংগীত সোমের ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই দাঙ্গায় ৬০ জন মারা গিয়েছিল। সোমের উসকানিমূলক বক্তব্য ওই সময় দাঙ্গা বাধিয়েছিল।
সপ্তদশ শতকের মার্বেল পাথরের তৈরি তাজমহলকে এ মাসের শুরুতে উত্তর প্রদেশের পর্যটন বুকলেট থেকে সরিয়ে ফেলার পর নানা সমালোচনা হয়। মোগল স¤্রাট শাহজাহানের তৈরি ঐতিহাসিক এ স্থাপনাকে পর্যটন তালিকা থেকে বাদ দেওয়ায় যোগী আদিত্যনাথের সরকারের অবহেলাকে দায়ী করেন অনেকে।
পুস্তিকায় প্রকাশিত ওই তালিকা উত্তর প্রদেশের বিজেপি সরকারের ছয় মাসপূর্তি উপলক্ষে প্রকাশ করা হয়। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গোরক্ষপুরের গোরক্ষনাথ মন্দিরের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর প্রধান মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী রিতা বাহুগুনা জোশি বলেন, ‘তাজমহল আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বিশ্বের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে জায়গা দখল করে আছে। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সামগ্রিক উন্নয়ন ও অবকাঠামো সুবিধা রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকার।’
গত জুন মাসে যোগী আদিত্যনাথ বলেছিলেন, মোগল স¤্রাট শাহজাহানের ভালোবাসার নিদর্শন তাজমহল ভারতের সংস্কৃতির প্রতিফলন নয়।
সোমের মন্তব্য নিয়ে টুইটারে ভারতের অনেক রাজনীতিবিদ পাল্টা মন্তব্য করছেন। এমআইএম পার্টির সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি মন্তব্য করেছেন, ‘সরকার ইতিহাস অন্ধ হয়ে গেছে। আমি তাদের চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই, পারলে ইউনেসকোকে তাদের তালিকা থেকে নাম সরাতে এবং যে পর্যটকেরা ভারতে আসে, তাদের তাজমহল দর্শনে নিষেধ করে দেন।’ তথ্যসূত্র: এনডিটিভি।