মোঃ ইকবাল হাসান সরকারঃ
করের আওতা বাড়ানো ও দেশবাসীকে কর দেওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করতে প্রত্যেক নাগরিককে ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হবে। এক টাকা কর দিলেই ‘ট্যাক্স কার্ড’ পাবেন। যারাই ট্যাক্স দেবেন তাদেরই ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হবে। গত রোববার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিদের সঙ্গে এক প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত একথা বলেন। ব্যাংকের সুদ হারে সরকারের নিয়ন্ত্রন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, আমার কোন নিয়ন্ত্রন নেই। বাজারের উপর নির্ভরশীল। আমরা চেষ্টা করি স্পেডটা নিয়ন্ত্রনে রাখতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলে দেয়। এসময় সব ব্যাংক স্পেড সীমা মানেন বলে দাবি করেন অর্থমন্ত্রী। বৈঠকে একজন জানান, জাতীয় পণ্যগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে কম দামে পাওয়া যায় বাংলাদেশে। এগুলো খেয়ে মুখে ক্যান্সারসহ নানা ধরণের রোগ দেখা দিচ্ছে। কিন্তু এসবের দাম বাড়ানো যাচ্ছে না। বছরে ১ হাজার ৬ শ’ কোটির টাকার জাতীয়পণ্য বিক্রি হলেও সরকার ট্যাক্স পায় মাত্র ১২ কোটি টাকা। ট্যাক্স পাওয়ার কথা ৬শ’ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, আমার তো মনে হয় জর্দা হতে যথেষ্ট ট্যাক্স পাওয়া যায়। এমনটা হলে আগামী বাজেটে জর্দা ২শ’ শতাংশ ট্যাক্স ধরা হবে।বৈঠকে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের ব্যাংকগুলোর একজন এক্সিকিউটিভ, এমডি, সিইও‘র বেতন ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। যেখানে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নির্বাহী প্রধানমন্ত্রীর বেতন দুই লাখ টাকা। ব্যাংকের নির্বাহীদের এই বেতন অস্বাভাবিক বেশি। এতে লাগাম টানা দরকার।’বিদেশি মোবাইল কোম্পানিগুলোকেও ‘কিছুটা চাপ দেওয়ার’ পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘যেসব বিদেশি কোম্পানি সব লাভের টাকা নিয়ে যাচ্ছে তারা যেন সব নিয়ে যেতে না পারে, সে বিষয়ে নজরদারি থাকা উচিত।’অনেক ব্যবসায়ী জনগণের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করলেও সরকারি কোষাগারে জমা দেয় না। ভ্যাট আদায় বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন ড. হাছান মাহমুদ। জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম করের হার কমিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে বলেন, এতে করের আওতা বাড়বে এবং সবাই ট্যাক্স দিতে উৎসাহিত হবে। ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত কর মওকুফের আবেদন জানান তিনি।তাছাড়া পরিবেশবান্ধব গ্রিন ফ্যাক্টরির উপকারিতার কথা তুলে ধরে তাজুল ইসলাম বলেন, তাদের ট্যাক্স ছাড় দেওয়া প্রয়োজন, যাতে অন্যরা পরিবেশ উপযোগী গ্রিন ফ্যাক্টরি করতে পারে।মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মীর শওকত আলী বাদশা উপকূলীয় মাছ চাষ উন্নয়নে আরও বেশি বরাদ্দের দাবি জানান। বাণিজ্যিকভাবে হরিণ চাষের অনুমতির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বাণিজ্যিকভাবে হরিণ চাষ করলে মাংসের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সুন্দরবনে চোরাই হরিণ শিকারের সংখ্যাও কমে আসবে।সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি বলেন, কঠোর নির্দেশনা সত্ত্বেও চিকিৎসকরা গ্রামে থাকেন না। উচ্চশিক্ষার অজুহাত ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) পরিচয়ে চিকিৎসকরা কর্মস্থলে থাকেন না। ঢাকায় চলে আসেন। এটা চরম বাস্তবতা। চিকিৎসক সঙ্কট দূর করতে বিষয়টি গভীরভাবে দেখার পরামর্শ দেন তিনি।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/১৯মার্চ২০১৮/ইকবাল