ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানল আরও ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানল আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোববার থেকে শুরু হওয়া ওই অগ্নিকা-ে কর্তৃপক্ষ ৩১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।
এখনো একশর ওপর নিখোঁজ; দাবানলের কারণে সৃষ্ট ২২টি অগ্নিকা- ঠেকাতে ওয়াইন কাউন্টিখ্যাত রাজ্যের এলাকাগুলোতে ৮ হাজারে বেশি দমকল কর্মীকে কার্যত ‘যুদ্ধ করতে হচ্ছে’ বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এরই মধ্যে দাবানলে সাড়ে তিন হাজার ভবন ও ঘর ভস্মীভূত হয়ে গেছে, নষ্ট হয়েছে এক লাখ ৭০ হাজারের বেশি জমি, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২৫ হাজার মানুষ।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোনোমা কাউন্টিতে অন্তত ১৭ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। মেন্দেনো কাউন্টিতে আট জন, ইয়ুবাতে চারজন এবং নাপা কাউন্টিতে চারজন নিহত হয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির এই পরিমাণ ১৯৩৩ সালে লস এঞ্জেলসের গ্রিফিথ পার্কের অগ্নিকা-ের ভয়াবহতাও ছাড়িয়ে গেছে। সেবারের অগ্নিকা-ে ২৯ জন নিহত হয়েছিলেন। জরুরি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে দমকা হাওয়ার পরিমাণ বাড়ছে, যে কারণে দাবানল আরও ছড়াতে পারে। আমরা এই দুর্যোগ থেকে বেরিয়ে আসার ধারেকাছেও নেই,” বলেন ক্যালিফোর্নিয়ার জরুরি বিভাগের পরিচালক মার্ক গিলারদুচ্চি।
ফায়ার সার্ভিসের প্রধান কেন পিমলট পুরো সপ্তাহজুড়েই দমকা হাওয়ার আশঙ্কা করছেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতি এই দাবানলে সৃষ্ট ধোঁয়া ৬০ মাইলেরও বেশি এলাকা ছাড়িয়ে সানফ্রান্সিসকোর দক্ষিণ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও শঙ্কা পিমলটের।
অপেক্ষাকৃত ঠা-া আবহাওয়া, মৃদু বাতাস ও উপকূলীয় কুঁয়াশার সুযোগ নিয়ে মঙ্গলবার দাবানল কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও পরে নতুন করে দমকা হাওয়া দাবানলকে শক্তিশালী করে বলে দমকল কর্মীরা জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকা থেকে দ্ইুশরও বেশি ফায়ার ইঞ্জিনিষ্টিয়ার ও ক্রুকে আগুন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পাঠানো হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।
দাবানল এরইমধ্যে এক লাখ ৭৫ হাজার বাসিন্দার সান্তা রোজা শহরকে ছাইয়ে পরিণত করেছে। নাপা কাউন্টির কালিস্তোগা এলাকাসহ বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
এলাকাগুলোতে গাড়ি চলাচলও বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
সোনোমা কাউন্টির ২৫ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানকার ৪০ হাজার বাড়ি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই তাদের নিখোঁজ বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনের সন্ধানে আবেদন জানিয়েছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর জেরি ব্রাউন সোনোমা, নাপা এবং আরও ৫টি এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।