বিশম্ভরপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউপি’র খরচার হাওরের চারটি পিআইসি’র কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শঙ্কিত হাওরের পাড়ের কয়েক হাজার কৃষক। স্থানীয় কৃষকদের দাবী সুষ্ঠু তদারকি না করায় পিআইসিরা দায়সারাগোছের কাজ করে টাকা লুটেপুটে খাওয়ার ফন্দি আঁটছেন। পাউবো সুত্রে জানাযায়, ফতেপুর ইউপি’র খরচার হাওরের বাঁধ মেরামত এবং নদী/খাল খনন স্কীমের আওতায় চলতি বছরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে ২৩ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। পিআইসি নং-০৯, পিআইসি’র সভাপতি হলেন বিশম্ভরপুর গ্রামের আব্দুস ছোবহানের পুত্র লিহাজ উদ্দিন, সদস্য সচিব একই গ্রামের আজর আলীর ছেলে সাজিদুর রহমান। বাঁধটি সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কথা থাকলেও উক্ত বাঁধে বালু মিশ্রিত মাটি দিয়ে বাঁধের কাজ করছে। বাঁধের শুরুতে কাজ করলেও শেষের দিকে অগোছালোভাবে বালু ফেলে রাখা হয়েছে। বাঁধের দুইপাশে কোন দুর্বাঘাস নেই। কাজটি বাস্তবায়নের জন্য ২৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হলেও আনুমানিক ৮ লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে। বাকি টাকা পিআইসি ও অসাধু কর্তাদের মধ্যে বাটোয়ারা করে লুটে খাওয়ার ফিকির চলছে। পাশেই অপর একটি বাঁধ মেরামত এবং নদ-নদী, খাল খনন স্কীমের পিআইসি সুবল চন্দ্র বর্মণ ও সদস্য সচিব অর্জুন বর্মণের কাজেও একই অবস্থা। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় এ বাঁধের কোন সাইনবোর্ড নেই। বাঁধের গুড়ি থেকেমাটি উত্তোলন করা হয়েছে। অপরদিকে খরচার হাওরের ১৩ নং পিআইসি’র সভাপতি হলেন গোলাম মোস্তফা, সদস্য সচিব মোঃ আবুল ছায়েদ। খরচার হাওরের উপ প্রকল্পের ০.৪৪৪ কিলোমিটার ডুবন্তবাঁধের পুনরাকৃতিকরন ও মেরামত কাজের এ প্রকল্পে প্রদান করা হয়েছে বরাদ্দ ২৪ লক্ষ ৭৫ হাজার। এ বাঁধটিতে বাঁধের গুড়ি কেটে ও বিল থেকে কাদামাটি উত্তোলন করে অগোছালোভাবে ফেলে রাখা হয়েছে। একই হাওরের উপ প্রকল্পের ১.৩১৭ কিঃ মিঃ ডুবন্তবাঁধের পুনরাকৃতিকরন ও মেরামত কাজের পিআইসি নং ১৪। এ কাজে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে ২৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। পিআইসি’র সভাপতি রাধানগর গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে দিলসাদ মিয়া, সদস্য সচিব মোঃ ফয়জুল হক। এ বাঁধটি’র উচ্চতা কম, বেশিরভাগ কাজ এখনো শেষ হয়নি। বাধের গুড়ি থেকে মাটি উত্তোলন করা হয়েছে। বাঁধের পাশে সাইনবোর্ড সাটানোর কথা থাকলেও একটি বাগানের ভিতর সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়েছে। স্থানীয় কৃষকেরা জানান, বালু,কালামাটি মিশ্রিত মাটি দিয়ে বাঁধের কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া বাঁধের গোড়া থেকে মাটি তোলা হচ্ছে। বাঁধগুলো টেকসই না হলে খরচার হাওরের প্রায় ৫ হাজার হেক্টর বোরো ফসলের ক্ষতি হবে। চারটি পিআইসি’র সভাপতিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা বলেন কাজে কোন অনিয়ম হয়নি। এখনোও সময় আছে কাজ শেষ করব। বিশম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সমীর বিশ্বাস বলেন, বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/রুহুল আমিন