প্রাইভেট ডিটেকটিভ ডেস্কঃ
চোরাকারবারীদের কাছ থেকে নকল ওষুধ কিনছে রাজধানীর বসুন্ধরায় অবস্থিত বেসরকারি অ্যাপোলো হাসপাতাল। সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতর, ওষুধ প্রশাসন ও র্যাবের যৌথ অভিযানে এই তথ্যের প্রমাণ মিলেছে।
ল্যাবে রোগ নির্ণয়ের জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট (রোগ নির্ণয়ের জন্য রাসায়নিক উপাদান) ব্যবহার এবং ফার্মেসিতে ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদনহীন ওষুধ রাখায় সোমবার এই হাসপাতালকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ অভিযানের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বাংলাদেশের অন্যতম ব্যয়বহুল এই হাসপাতালের এমন প্রতারণা আশা করেনি কেউ। ফেসবুকে অনেকে লিখেছেন, এটি ভয়ঙ্কর। মানুষ যাবে কোথায়? অ্যাপোলো হাসপাতালের যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে খুবই দুঃখজনক।
সোমবারের ওই অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা। অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছেন র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম।
তিনি গনমাধ্যমকে বলেছেন, ‘গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর নিকুঞ্জ-২ এলাকা থেকে নকল ওষুধ এবং প্যাকেজিং ম্যাটিরিয়ালসহ এক চোরাকারবারী ও নকল ওষুধ বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে র্যাব। সে নিম্নমানের ভেজাল ওষুধ সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে স্থল ও আকাশ পথে আমদানি করতো। সেদিন তার বাড়ি থেকে মোট এক কোটি টাকার ওষুধ জব্দ করা হয়। সেই সূত্র ধরে সোমবার অ্যাপোলো হাসপাতালে দিনভর অভিযানটি চালানো হয়।’
অ্যাপোলো হাসপাতালের অনুমোদনহীন ওষুধ বিক্রি এবারই প্রথম নয়। ২০১৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর একই অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটিকে ১৬ লাখ টাকা জরিমানা এবং প্রায় ১০ লাখ ওষুধ জব্দ করে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ প্রসংগে জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ডাক্তার ফায়েজুল হাকিম রেডিও তেহরানকে বলেন, শুধু অ্যাপোলো হাসপাতালই নয়, ঠিকমতো তদন্ত করলে এরকম আরো অনিয়ম-দুর্নীতির খবর পাওয়া যাবে। এদের ব্যাপারে শুধু জরিমানা নয়, এদের লাইসেন্স বাতিলসহ গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। কারণ জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে গাফেলতির কোন সুযোগ নেই।
এর আগে ২০১৫ সালের ৩ জুলাই এক নবজাতক শিশুর মৃত্যুর দায় চাপে অ্যাপোলোর চিকিৎসকের ওপর। এ ঘটনায় সেসময় রাজধানীর ভাটারা থানায় ৩০৪ (ক) ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা করে ওই শিশুর পরিবার।
এ ছাড়া, ২০১৭ সালের মার্চে বাংলাদেশের সাবেক পেস বোলার সৈয়দ রাসেলের ভুল এমআরআই রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগ ওঠে এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে। সেসময় সৈয়দ রাসেল অভিযোগ করেন, ‘বাংলাদেশ অ্যাপোলো হাসপাতালের এমআরআই রিপোর্ট বলে আমার শোল্ডারের চারটা টেন্ডন (শিরা) ছেড়া। আর ভারতের (মুম্বাই) হাসপাতালের এমআরআই রিপোর্ট বলে আমার শোল্ডার ১০০ ভাগ ঠিক। শুধু একটা টেন্ডন একটু শুকিয়ে গেছে। যেটা থেরাপিস্ট দ্বারা ঠিক করা সম্ভব ।