মোঃ মজনু মিয়া,কালিয়াকৈর প্রতিনিধি
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও আঞ্চলিক সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে সংঘবদ্ধ চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও লুটপাটসহ নানা ঘটনা। বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদককারবারিরা। রমরমা মাদক বাণিজ্যে ধ্বংস হচ্ছে যুব সমাজ। কিন্তু এসব বন্ধে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে তেমন কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত এক মাসে কালিয়াকৈর উপজেলায় চারটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া গরু চুরি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরিসহ বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৫টি লুটপাটের ঘটনা ঘটছে।
সরেজমিন অনুসন্ধান করে জানা যায়, গেল মাসের ৫ মে বাঁশতলী এলাকায় কৃষক হালিম মিয়ার গোয়ালের তালা কেটে ভেতরে থাকা ১০ লাখ টাকার গরু চুরির ঘটনা ঘটে। তার দুদিন পর ৭ মে ভোরে বাঁশতলী-কালিয়াকৈর সড়কের দিঘিবাড়ী এলাকায় মাছ ভর্তি গাড়ি থামিয়ে নগদ অর্থ ও মোবাইলফোন লুট করেছে ডাকাতরা। এরপর ১২ মে রাতে কালিয়াকৈর-মাওনা আঞ্চলিক সড়কের পাইকপাড়া এলাকায় টহলে থাকা পুলিশের অদূরে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসময় ডাকাত দল অন্তত ২০টি গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের টাকা ও মোবাইলসহ স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। এ ঘটনার তিন দিন পর ১৫ মে রাতে একই কায়দায় উপজেলার বড়ইবাড়ী-জামালপুর চাররাস্তা সড়কের হাটুরিয়াচালা এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় সড়কে গাছ ফেলে ২০ থেকে ২৫টি গাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে ডাকাতরা। এর কিছুদিন পর গত ২৪ মে উপজেলার সফিপুরে-বড়ইবাড়ী সড়কের বাঁশতলী এলাকায় একটি মেশিনারিজের দোকানের তালা কেটে প্রায় দুই লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে গেছে। একই রাতে কালিয়াকৈর পৌরসভার পাশাগেইট এলাকায় একটি স্বর্ণের দোকানে চুরি হয়। এর একদিন আগে ২৩ মে একই এলাকার একটি মোবাইল ফোনের দোকানে তালা কেটে চুরির ঘটনা ঘটে। এর দু’দিন পর ২৬ মে উপজেলার জামালপুর বাজার এলাকায় একটি মুদি দোকানের তালা কেটে মালামাল ও ফ্রিজসহ নগদ অর্থ চুরি হয়।এর পর অভিযোগ পাওয়া যায় পল্লী বিদ্যুৎ বাস স্ট্যান্ডে প্রতিনিয়ত পথচারী শ্রমিকদের ছিনতাই সবশেষ গতকাল ৩১ মে সন্ধ্যায় উপজেলার বাঁশতলী এলাকার একটি মুদি দোকানে এসে দোকান মালিকের ওপর হামলা করে টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
এ ঘটনায় রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী দোকান মালিক। তবে এসব ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশের পক্ষ থেকে জোরালো কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না।
অপরদিকে কালিয়াকৈর উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মাদক বেচা-কেনা তীব্র হয়ে উঠেছে।যেমন ইয়াবা, গাঁজা, চোলাই মদ, হিরোইন ও ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদকে সয়লাব হয়ে পড়েছে পুরো এলাকা । যেমন একটি বিশেষ এলাকা পল্লী বিদ্যুৎ মন্ডলপাড়া মুন্সির মোড়। আর ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাঘব বোয়ালরা। পুলিশের তালিকায়ও তাদের অনেকের নাম নেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ মাদক সেবনের টাকার জোগান দিতেই মাদকসেবীরা দলবদ্ধ হয়ে এসব চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের কাজ করছে।
এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম বলেন, ডাকাতির ঘটনার পর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ টহল বাড়ানো হয়েছে। আমরা মাদকের সঙ্গে জড়িত রাঘব বোয়ালদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি। তাদের ধরতে পারলে ধীরে ধীরে বাকিদের তথ্য নেওয়া হবে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় চুরি, লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। এসব ব্যাপারে আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি।