-
- কৃষি, জেলা সংবাদ
- সরিষাবাড়ীতে পারিবারিক পুষ্টি বাগান করে আশা জাগিয়েছেন বাচ্চু
- আপডেট সময় November, 22, 2022, 4:31 pm
- 194 বার পড়া হয়েছে
সরিষাবাড়ি (জামালপুর)প্রতিনিধি : এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন ঘোষনায় জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অনাবাদি জমিতে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। বেড়েছে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের হারও। এ লক্ষে উপজেলার ধৌলতপুর গ্রামে কৃষি কার্যালয়ের সার্বিক সহায়তায় মডেল গ্রামের মডেল বাড়ির কৃষক রবিউল আলম বাচ্চু খামার গড়ে তুলে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে আশা জাগিয়েছেন।
নিরাপদ ফসল উৎপাদন ও পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণে তার তুলনা মেলা ভার। অন্য কৃষকদের কাছে রবিউল আলম বাচ্চু একটি মডেলের নাম। তার বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির ১হাজার ২১০টি চারাগাছ রয়েছে। এরমধ্যে বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী, দেশী আপেল কূল অন্যতম। এছাড়াও তার বাগানে রয়েছে থাই পেয়ার, চায়না-৩ লিচু ও সিডলেস লেবুসহ ২০০টি গাছ। এর পাশাপাশি বেগুন, লাউ, শষাসহ অন্যান্য সবজির চাষ করে আসছেন তিনি। তিনি তার ৩.৬৫ একর জমিতে এসব চাষাবাদ করে আসছেন। নিরাপদ ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে পারিবারিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সেগুলো বাজারে বিক্রি করে বেশ টাকা-পয়সা আয় করা যায়। গত বছরে সব চারা গাছে ফল আসেনি। যে কয়টিতে ফল ধরেছিল। তা বিক্রি করে খরচ বাদে প্রায় ৯ লাখ টাকা আয় করেছেন রবিউল আলম বাচ্চু। তার এরুপ নিরাপদ ফসল উৎপাদন দেখে তাতে অনেক কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আওনা ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে কৃষি কার্যালয়ের সার্বিক সহায়তায় বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি করণ প্রকল্পের আওতায় ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে মডেল গ্রামের মডেল বাড়ি নামে একটি খামার গড়ে তোলেন কৃষক রবিউল আলম বাচ্চু।
নিরাপদ ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণই এ খামারের একমাত্র উদ্দেশ্য। নিরাপদ ফসল উৎপাদনের পূর্বশর্ত হলো রাসায়নিক মুক্ত সার। এ খামারে রয়েছে ভার্মি কম্পোষ্ট ও জৈব সার তৈরির আধুনিক ব্যবস্থা। এখানে প্রতি ২ মাসে ৩০০ কেজি ভার্মি কম্পোষ্ট সারসহ প্রতি মাসে ৬০ কেজি জৈব সার উৎপাদন করেন কৃষক বাচ্চু। এ খামারে রয়েছে সবজি উৎপাদন বেড, মিশ্র ফল বাগান, ঔষধি বাগান, চারা উৎপাদন বেড ও গোবর ও মাটি মিশ্রন তৈরি করণ বেড। নিরাপদ ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে পারিবারিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অতিরিক্ত ফসল বাজারে বিক্রি করা যাবে বলে রবিউল আলম বাচ্চু আশা করেন।
রবিউল আলম বাচ্চুকে দেখে স্থানীয় কৃষকদের নিরাপদ ফসল উৎপাদনে আগ্রহ বেড়েছে। তাদের মধ্যে লাবন তালুকদার ও কমলা খাতুন আগামী বছর রবিউল আলম বাচ্চুর আদলে খামার গড়ে চাষাবাদ শুরু করবেন বলে তারা আশা করেন । এছাড়াও তাদের মধ্যে বেড়েছে সাথী ফসল উৎপাদনের আগ্রহ। বরিউল আলম বাচ্চু তার এরুপ কাজে অন্য কৃষকের কাছে অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন।
বাচ্চুর খামারের সার্বিক তত্ত্বাবধান করে আসছেন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল কাদের। তিনি বলেন, রবিউল আলম বাচ্চুর খামার দেখে অনেক কৃষক অনুপ্রাণীত হয়ে উঠেছে। তারাও নিরাপদ ফসল উৎপাদন করে পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা অনুপ সিংহ বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি করণ প্রকল্পের আওতায় গড়ে উঠা খামার দেখে অনেক কৃষক নিরাপদ ফসল উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এর ফলে অনেক অনাবাদী জমিতে চাষাবাদ শুরু হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এক ইঞ্চি জমিও ফাঁকা রাখা যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষনা বাস্তবায়নে কাজ করছে উপজেলা কৃষি কার্যালয়। এর ধারাবাহিকতায় বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি করণ প্রকল্পের আওতায় ধৌলতপুরে একটি খামার গড়ে তোলা হয়েছে। নিরাপদ ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরনই এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
এ জাতীয় আরো খবর