দুই বাংলা সুপরিচিত অভিনেত্রী স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। বুধবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় এই গুণী শিল্পীর। দীর্ঘ দিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। ডায়ালিসিস চলছিল তার।
এমনকি, ২১ দিন আইসিইউতেও ভর্তি ছিলেন ৭১ বছর বয়সী বর্ষীয়ান অভিনেত্রী স্বাতীলেখা। মঞ্চ দাপিয়ে বেড়ানো সেই অভিনেত্রীর পথ চলা থমকে গেল আজ। চলে গেলেন সত্যজিৎ রায়ের ‘বিমলা’।
১৯৮৪ সালে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পর্দায় অভিনয়ের যাত্রা শুরু স্বাতীলেখার। সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত ছবি ‘ঘরে বাইরে’-র ‘বিমলা’ অভিনয় নিয়ে আজও প্রশংসায় পঞ্চমুখ বাংলা ছবির দর্শক। সেই থেকে সৌমিত্র ও স্বাতীলেখার জুটিকে পছন্দ করেছিলেন অনুরাগীরা। কিন্তু তার পরে মঞ্চের বাইরে দেখা যায়নি তাঁকে।
দীর্ঘ ৩১ বছর পরে সৌমিত্রর সঙ্গেই পর্দায় ফিরলেন তিনি। প্রযোজক-পরিচালক নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে বড় পর্দায় দেখা যায় তাঁকে। ‘বেলা শেষে’ ছবিতে সৌমিত্র-স্বাতীলেখার রসায়ন দেখে আপ্লুত দর্শকদের জন্য ফের ‘বেলাশুরু’-তে অভিনয় করেন তাঁরা। কিন্তু ছবি মু্ক্তি পাওয়ার আগেই চলে গেলেন নায়ক-নায়িকা। গত বছর নভেম্বর মাসে মৃত্যু হয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের।
১৯৭০ সালে ইলাহাবাদে মঞ্চজীবন শুরু তার। মঞ্চজীবনে পেয়েছেন বিভি করন্থ, তাপস সেন এবং খালেদ চৌধুরীর মতো ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্য। ১৯৭৮ সালে ‘নান্দীকার’ নাট্যদলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন তিনি। সেখানেই আলাপ ও প্রেম হয় নাট্যব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের সঙ্গে। তার পরে বিয়ে এবং সংসার।
ভারতীয় নাট্যজগতে তার অবদানের জন্য সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কারও পেয়েছিলেন প্রয়াত অভিনেত্রী। এছাড়া ২০১১ সালে ভারতীয় থিয়েটারে অভিনয়ের জন্য তিনি সংগীত নাটক একাডেমি পুরস্কার পান। পশ্চিমবঙ্গ নাট্য একাডেমি পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার রয়েছে তার ঝুলিতে।
তার কন্যা সোহিনী সেনগুপ্তও একই ভাবে নাট্য ও পর্দার জগতে নিজের পরিচয় তৈরি করেছেন। মঞ্চে ‘শঙ্খপুরের সুকন্যা’, ‘মাধবী’, ‘পাতা ঝরে যায়’ ইত্যাদিতে তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখাছিলেন স্বাতীলেখা।
//ইয়াসিন//