-
- অপরাধ, আন্তর্জাতিক, সারাদেশে, স্বাস্থ্য
- ৪মাস ধরে সৌদিআরবে হিমঘরে ছেলের লাশ পরে আছে মায়ের হৃদয়ভাঙ্গা কান্না সন্তানের লাশ ফিরে চান
- আপডেট সময় August, 24, 2020, 7:37 pm
- 259 বার পড়া হয়েছে
মেহেদী হাসান,মিঠাপুকুর(রংপুর)প্রতিনিধিঃ
২৫ বছর বয়সের টকবগে যুবক সাদ্দাম হোসেন। পিতৃহীন অসচ্ছল পরিবার ও নিজের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে স্বপ্ন নিয়ে গত ২০১৯ সালের ১৭ই মে পাড়ি জমায় সৌদি আরব। এ জন্য তাকে বাড়ির বসতভিটা ছাড়া সবটুকু জমি বিক্রি করতে হয়। অসহায় বৃদ্ধা মা হাছনা বেগমও ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়ে আশায় বুক বেঁধে আছেন। কিন্তু সে আশা আর স্বপ্নে গুড়েবালি। নানা জটিলতার কারণে প্রায় ৪ মাস ধরে সাদ্দাম হোসেনের লাশ সৌদি আরবের হিমঘরে পড়ে আছে। এখন ছেলের লাশের অপেক্ষায় কেঁদে কাটছে বৃদ্ধা মা’র দিনরাত। তিনি ছেলের লাশ দেশে ফেরত আনতে প্রধানমন্ত্রী এবং স্থানীয় এমপি’র হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।সাদ্দাম হোসেন পীরগঞ্জ উপজেলার ভেন্ডাবাড়ী গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে।অভিযোগে জানা গেছে, জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার ‘মোহনা ওভারসিজ’ এর মাধ্যমে ৯০ দিনের ভিসায় ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে ২০১৯ সালের ১৭ই মে সৌদি আরবের রিয়াদে পাঠায়। কিন্তু যাওয়ার ৯০ দিন অতিবাহিত হলেও সাদ্দামকে বৈধ কাগজপত্র (আকামা) না দেয়ায় ‘মোহনা ওভারসিজ’ এর পীরগঞ্জের কথিত দালাল চৈত্রকোল ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের মৃত মমদেল হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বুলু হাজীর সঙ্গে গত ২১শে এপ্রিল সাদ্দামের পরিবারের বচসা হয়। বচসার সপ্তাহ পুরতে না পুরতেই ২৭শে এপ্রিল কথিত দালাল জাহাঙ্গীর আলম বুলু হাজী এলাকায় প্রচার করেন যে, সাদ্দাম রিয়াদে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এ কথা লোকমুখে শুনে সাদ্দামের বড় ভাই রব্বানী মিয়া ২৮শে এপ্রিল ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এদিকে ২৯শে এপ্রিল ‘হাবিব রহমান’ নামের এক ফেসবুক আইডিতে সিঁড়িতে ঝুলন্ত একটি লাশের ভিডিও ছাড়া হয়। ভিডিওতে লাশটি সাদ্দামের বলে চিনতে পেরে স্কিন শর্ট নেয় বড় ভাই রব্বানী। তিনি দালাল বুলু হাজীকে বলেন, সাদ্দাম করোনায় মারা যায়নি। তাকে মেরে ফেলে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। মৃত্যু নিয়ে জটিলতার কারণে গত এপ্রিল থেকে আজও সৌদির হিমঘরে লাশটি পড়ে আছে। এ বিষয়ে বুলু হাজী সাংবাদিকদের জানায়, ঢাকার বনানীর মোহনা ওভারসিজ, রিক্রুটিং লাইসেন্স নং- ২৬৯, বাড়ি নং- ১৮ (৪০২), রোড নং-২৪ (লেকপাড়), ব্লক-‘ক’ এর মাধ্যমে আমি এলাকার অনেককে সৌদিতে পাঠিয়েছি। সাদ্দামকেও সেখানে পাঠাই। কিন্তু ওই ওভারসিজের সৌদি আরবের রিয়াদ প্রতিনিধি আলাউদ্দিন তাকে কাজ ও বৈধ কাগজপত্রের ব্যবস্থা করে দেয়নি। রিয়াদ থেকে সেই আলাউদ্দিনই আমাকে জানায়, সাদ্দাম করোনায় মারা গেছে। এ ব্যাপারে ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ শাহিন মিয়া বলেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিবাদী বুলু হাজীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সে লাশের ব্যাপারে সঠিক কিছু বলতে পারেনি।কিন্তু দিনের পর দিন সাদ্দামের মায়ের আকুতি কান্নায় বুক ভাসিয়ে দিচ্ছে বুকের ভিতর হাহাকার শব্দ তার সন্তানকে ফিরে চান।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৪ আগষ্ট ২০২০/ইকবাল
এ জাতীয় আরো খবর