October 7, 2024, 2:31 am

সংবাদ শিরোনাম
স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি রক্ষা করতে হলে প্রতিটি ঘরে সেনাবাহিনী তৈরি করতে হবে(পর্ব-৫) আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জামায়াত নেতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হলে সশস্ত্র ট্রেনিং এর প্রয়োজন। বৈষম্য বিরোধী অভিভাবক ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কমিটির (পর্ব- ৪) ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে গড়তে হলে সংস্কার প্রয়োজন=== বৈষম্য বিরোধী অভিভাব ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে অদ্ভুতুরে কাণ্ডকীর্তি ভোলা বোরহানউদ্দিনে প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকগণের ১০ম গ্রেডের দাবিতে মানববন্ধন শারদীয় দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের লক্ষে বগুড়ায় বিএনপির মতবিনিময় সভা! লক্ষ্মীপুরে কুমিরের আতঙ্কে এলাকাবাসী সাংবাদিক পুত্র আবির হোসেন অনন্ত’র জন্মদিন আজ বিল্লাল হুসাইন

সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি বন্যায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি ১৩শ’ কোটি টাকার

মোহাম্মদ ইকবাল হাসান সরকারঃ

গত কয়েক মাসে তিন দফা বন্যায় এক হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার পুনর্বাসন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।গতকাল ১৯ আগষ্ট ২০২০ ইং তারিখ বুধবার বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি এ তথ্য জানান। এ সময় কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) আরিফুর রহমান অপু, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আবদুল মুঈদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।আবারও বন্যার পানি বাড়ায় কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি বলেন, আমি মনে করি- এটা (বন্যা) খুব একটা বেশি দিন থাকবে না, তাড়াতাড়ি পানি নেমে যাবে। সার্বিকভাবে দেশে খাদ্য উৎপাদনে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে না এবং আমরা বড় কোনো সংকটে পড়ব না।কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি বলেন, প্রতিবছর বর্ষা ঋতুতে খরিপ-১ ও খরিপ-২ মৌসুমে অতিঝড়, বন্যা, পাহাড়ি ঢলের কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।এবার বন্যায় ফসলের জমিও প্লাবিত হয়েছে।এ বছর বন্যার পূর্বাভাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাসহ সবাই ছিলেন সতর্ক।ফসলের ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য কৃষককে দেয়া হয়েছিল প্রয়োজনীয় পরামর্শ। তারপরও তিন দফার বন্যায় ৩৭টি জেলায় সব মিলিয়ে এক হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে।২ লাখ ৫৭ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়।এর মধ্যে এক লাখ ৫৮ হাজার ৮১৪ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে।বন্যায় ১২ লাখ ৭২ হাজার ১৫১ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।এবার ৩২ হাজার ২১৩ হেক্টর জমির ৩৩৪ কোটি টাকার আউশ ধান, ৭০ হাজার ৮২০ হেক্টর জমির ৩৮০ কোটি টাকার আমন ধান এবং সাত হাজার ৯১৮ হেক্টর জমির আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এছাড়া ২৩৫ কোটি টাকার সবজি এবং ২১১ কোটি টাকার পাটের ক্ষতি হয়েছে।প্রথম দফায় ২৫ জুন থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ১৪ জেলায় বন্যায় ৪১ হাজার ৯১৮ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ বন্যায় ৩৩৯ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি এবং ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৭৫৭ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ১১ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত ৩৭টি জেলায় ৩৪টি ফসলের এক লাখ ১৬ হাজার ৮৯৬ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।ক্ষতির পরিমাণ ৯৭৪ কোটি টাকা, আর ৯ লাখ ২৯ হাজার ১৩৯ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি বলেন, বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারেন কৃষক- সে জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।ইতোমধ্যে ১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩১ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে শাকসবজি চাষের জন্য বিনামূল্যে বীজ বিতরণ করা হয়েছে।শাকসবজি চাষের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পারিবারিক পুষ্টি নিশ্চিত করতে ১০ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এক লাখ ৫১ হাজার ৬০০ জন কৃষককে লালশাক, ডাটাশাক, পালংশাক, বরবটি, শিম, শসা, লাউ বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে।অধিক ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় কৃষকদের জমিতে কমিউনি টিভিত্তিক বীজতলার মাধ্যমে ২ কোটি ১৫ লাখ টাকার চারা উৎপাদন ও বিনামূল্যে বিতরণ কর্মসূচির আওতায় ৩৩টি জেলায় ৩৫ হাজার ১৬৬ জন কৃষকের মাঝে এসব চারা বিতরণ করা হবে।ইতোমধ্যে ৫২৫ হেক্টর জমিতে এই বীজতলা স্থাপন করা হয়েছে।এছাড়া ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাসমান বেডে ধানের চারা উৎপাদন করা হবে।এর আওতায় ৪০ জেলায় পাঁচ হাজার ৬০টি ভাসমান বেডে রোপা আমন ধানের বীজতলা প্রস্তুত করা হচ্ছে।এতে এক হাজার ২৬৫ জন কৃষক সরাসরি উপকার পাবেন। ইতোমধ্যে চার হাজার ৩০৮টি ভাসমান বেডে রোপা আমন ধানের বীজতলা স্থাপন করা হয়েছে বলে তথ্য দেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি।কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি বলেন, ২৫টি জেলায় ৬১ হাজার ৬০০টি ট্রেতে রোপা আমন ধানের বীজতলা তৈরি করে সেগুলো এক হাজার ৬০০ জন কৃষককে বিতরণ করা হবে।এর মধ্যে ২২ হাজার ৭৭২টি ট্রেতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আমন চাষ সম্ভব না হলে মাশকালাই বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এর আওতায় ৩৫ জেলায় ৫০ হাজার কৃষককে ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকার মাশকালাই বীজ, ডিএপি, এমওপি সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে আরেকটি কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় ৯ লাখ ২৯ হাজার ১৯৪ জন কৃষকের প্রত্যেককে গম, সরিষা, চীনা বাদাম, সূর্যমুখী, খেসারি, পেঁয়াজ. মরিচ, টমেটো আবাদের জন্য উপকরণ সরবরাহ করা হবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি।কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি বলেন, পারিবারিক কৃষির আওতায় সবজি পুষ্টি বাগান কর্মসূচির আওতায় ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ ২২ হাজার টাকা ৬৪ জেলার এক লাখ ৪১ হাজার ৭৯২ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ, চারা ও সার দেয়া হয়েছে।এর বাইরে ২০২০-২১ অর্থবছরে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন কর্মসূচি প্রস্তাব করা হয়েছে।এর আওতায় ১৫২ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬৪ জেলায় ৪৯১টি উপজেলার চার হাজার ৫৯৭টি ইউনিয়ন ও ১৪০টি পৌরসভার ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৭০০ কৃষককে বিনামূল্যে বীজ ও সার দেয়া হবে। আরও প্রায় ৭৫ কোটি টাকার কর্মসূচি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় বীজ, সারসহ বিভিন্ন প্রণোদনামূলক কার্যক্রম বেগবান, তদারকি ও সমন্বয়ের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত ও যুগ্ম-সচিবদের নেতৃত্বে ১৪টি কমিটিতে ৭০ জন কর্মকর্তা কাজ করছেন বলে জানান কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি।

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২০ আগষ্ট ২০২০/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর