-
- অপরাধ, রাজনীতি, সারাদেশে
- পুলিশ ও চেয়ারম্যান ম্যানেজ বলেই গরু চোর কে ছেড়ে দিয়ে পাড় পেয়ে গেল ইউপি সদস্য
- আপডেট সময় May, 7, 2020, 10:28 pm
- 197 বার পড়া হয়েছে
রংপুর ব্যুরো,নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের খোসালপুর গ্রামের মমিনুর নামে এক চোরের বাড়ি থেকে গ্রামবাসীর সহযোগীতায় চোরাই গরু উদ্ধার করা হলেও আইনগত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে মিঠাপুকুর থানা ও স্থানীয় চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলীর দোহাই দিয়ে গরু চোরকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মকবুল হোসেন নামে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
চিহ্নিত চোর শনাক্ত হলেও মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় বর্তমানে এলাকার সচেতন মহলের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তারা এ বিষয়ে রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়সহ আইন প্রয়োগকারী সংশ্লিষ্ট সংস্থার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিযোগ রয়েছে গত ২৬ এপ্রিল একই উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের মুরাদ দর্প-নারায়নপুর গ্রামের কৃষক মোলাম মিয়ার বাড়ি থেকে রাতে একটি গরু চুরি করে নিয়ে যায় পার্শ্ববর্তী লতিফপুর ইউনিয়নের জায়গীরহাট বাজার এলাকার চিহ্নিত সংঘবদ্ধ চোরের দল।
সরেজমিনে এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা যায়, কাফ্রিখাল ইউনিয়নের মুরাদ দর্প-নারায়নপুর গ্রামের কৃষক মোলাম মিয়া ঘটনার দিন দিবাগত রাতে ঘুম থেকে জেগে গোয়াল ঘরে গরু দেখতে না পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। এসময় তার আত্ন চিৎকারে গ্রামের লোকজন চোরদের ধাওয়া করেন।
একপর্যায় ঐ রাতেই পাশ্ববর্তী খোসালপুর গ্রামের মমিনুর’র বাড়ির ভিতর থেকে চোরাই গরুটি বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেন তারা। পাশের বাড়ির মাসুদ রানা নামে এক যুবক গরুটি এনে মমিনুর’র বাড়িতে রেখেছিল বলে এলাকাবাসী জানতে পান । এরপর ঐ গ্রামের কামরুজ্জামানের বাড়িতে চোরাই গরুটি হেফাজতে রেখে থানায় খবর দেয়া হলে ঐ ইউনিয়নের দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ অফিসার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তদন্ত করে আসেন।
কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগ কাফ্রিখাল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় ও থানার অফিসার্স ইনচার্জের অনুমতি নেয়ার কথা বলে সংঘবদ্ধ চোরদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে উদ্ধার হওয়া গরুটির মালিককে ফিরিয়ে দেন।
খোসালপুর গ্রামে যে বাড়িতে গরুটি পাওয়া যায়-সেই বাড়ির মালিক মমিনুর’র মা সাংবাদিকদের জানান, সেইদিন গভীর রাতে গরুর পায়ের শব্দ শুনে ঘরের বাইরে বের হয়ে দেখি একটি মোটাতাজা গরু নিয়ে এসে আমাদের উঠানে খুঁটির সাথে বেঁধে রাখছেন মাসুদ রানা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক লোকজন আমাদের এ প্রতিবেদকে জানান, অভিযুক্ত মাসুদ রানা মোটরসাইকেল চুরি মামলায় পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল। কিন্তু ইউপি সদস্য মকবুল হোসেনের সাথে মাসুদ রানার আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকায় সেই সময় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পরও ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন তাকে অনেক সহায়তা করেছিলেন। এছাড়াও চোরের লিডার মাসুদ, গোলাপ, শাহানত একটি শাহীওয়াল গরু চুরি করে এনে জায়গীরহাট বাজারে জবাই করে বিক্রি করেছিলেন। মমিনুরসহ এদের পেশাই হচ্ছে এখন চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি। আর এই সংঘবদ্ধ চোরের দলটি কোথাও গিয়ে সমস্যায় পড়লে এগিয়ে যায় চোরের গডফাদার ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন। তার ছত্রছায়ায়, প্রতক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতায় নির্বিঘ্নে অপরাধ করতে সাহস দেখাচ্ছে এ দলটি।
চোরাি গরু জিম্মিদার জামান লাইব্রেরী স্বত্বাধিকারী কামরুজ্জামান ও তার বাবা জানান, কাফ্রিখাল ও লতিফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সাথে আলোচনা করে প্রকৃত মালিকে উদ্ধার হওয়া গরুটি হস্তান্তর করা হয়েছে।
লতিফপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী গরু চুরির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমার নলেজে বিষয়টি ছিলো, এখন কিভাবে, কাকে গরু দিলো তা আমার জানানাই। এ ব্যাপারে তার কাছে কেউ যায়নি বলে তিনি জানান।
গরুচুরি, গরু উদ্ধার, ফেরত দেয়া, চোরকে ছেড়ে দেয়া, থানার নাম ভাঙ্গানো নাটকের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া আঁতাতকারী ইউপি সদস্য মকবুল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/ ৭ মে ২০২০/ইকবাল
এ জাতীয় আরো খবর