ফোর জি নিয়ে হাই কোর্টের আদেশ রোববার পর্যন্ত স্থগিত
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
ফোরজি মোবাইল ফোন সেবার জন্য আবেদন আহ্বান করে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসির করা বিজ্ঞপ্তি গতকাল বৃহস্পতিবার স্থগিত করে হাই কোর্ট। এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের হাই কোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেয়। তবে হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ আসার আড়াই ঘণ্টার মাথায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের চেম্বার আদালত তা স্থগিত করে বিষয়টি শুনানির জন্য রোববার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়। বিটিআরসির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ফোরজি লাইসেন্স এবং তরঙ্গ নিলামে অংশ নিতে আগ্রহীদের আবেদনের সময়ও রোববারই শেষ হচ্ছে। ফলে আবেদন জমা নিয়ে আপাতত আর কোনো অনিশ্চয়তা থাকল না বলে এ মামলার আইনজীবীরা জানিয়েছেন। বিটিআসির পক্ষে চেম্বার আদালতে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, তবে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাসও শুনানিতে ছিলেন। হাই কোর্টে রিটকারী প্রতিষ্ঠান বাংলালায়ন কমিউনিকেশন্স লিমিটেডের পক্ষে চেম্বার আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী এমপি। এদিকে আগে হাই কোর্টের আদেশের ফলে সরকার বছরের প্রথম ভাগেই ফোরজি সেবা চালুর আশা দিয়ে এলেও ফলে তা অনিশ্চয়তায় পড়ে। বিটিআরসির ওই বিজ্ঞপ্তি ২০০৮ সালের ব্রডব্যান্ড গাইডলাইন্সের সঙ্গে সাংঘর্ষিক- এমন যুক্তি দিয়ে বাংলালায়ন কমিউনিকেশন্স লিমিটেডের পক্ষে আদালতে এই রিট আবেদন করা হয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ড. কামাল হোসেন। সঙ্গে ছিলেন রমজান আলী সিকদার। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পর টেলিযোগাযোগের ফোরজি সেবার লাইসেন্স ও তরঙ্গ নিলামের নীতিমালা গত ২৯ নভেম্বর হাতে পায় টেলিযোগাযোগ বিভাগ। এরপর ৪ ডিসেম্বর বিটিআরসি ফোরজি লাইসেন্সের আবেদন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেখানে তরঙ্গ নিলামের জন্য ১৩ ফেব্রুয়ারি দিন রেখে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে আগ্রহীদের ফোরজি সেবার লাইসেন্সের আবেদন জমা দিতে বলা হয়। কমিশন সভায় অনুমোদিত সময়সূচিতে ১৯ ডিসেম্বরের মধ্যে আপত্তি জমা, ২১ ডিসেম্বর প্রি-বিড মিটিং, ১৪ জানুয়ারির মধ্যে আবেদনপত্র জমা, ২৫ জানুয়ারি যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ, ২৯ জানুয়ারি নিলাম প্রক্রিয়া নিয়ে পরামর্শ, ৫ ফেব্র্রুয়ারির মধ্যে বিড আর্নেস্ট মানি পরিশোধ, ৭ ফেব্রুয়ারি নিলামে অংশগ্রহণকারীর স্বীকৃতি বা প্রত্যাখ্যানের চিঠি পাঠানো, ১২ ফেব্রুয়ারি নিলামের মহড়া, ১৩ ফেব্রুয়ারি তরঙ্গ নিলাম এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি বিজয়ী আবেদনকারীদের নোটিস দেওয়ার কথা বলা হয়। অনুমোদিত নীতিমালায় বলা হয়, ফোরজি লাইসেন্সের জন্য নিলাম হবে না। আবেদন করে নির্দিষ্ট অর্থ জমা দিয়ে লাইসেন্স নেওয়া যাবে। অপারেটরদের আবেদন ফি হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে। লাইসেন্স পেতে দিতে হবে ১০ কোটি টাকা। আর বার্ষিক নবায়ন ফি হবে ৫ কোটি টাকা। এ লাইসেন্স নিতে অপারেটরদের ১৫০ কোটি টাকা ব্যাংক গ্যারান্টিও দিতে হবে। রেভিনিউ শেয়ারিংয়ে সরকারকে দিতে হবে আয়ের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। অপারেটরগুলোকে ফোর জি তরঙ্গ বরাদ্দ পেতে অংশ নিতে হবে নিলামে। নীতিমালায় এক হাজার ৮০০ মেগাহার্টজের তরঙ্গ নিলামের ভিত্তিমূল্য ঠিক করা হয়েছে প্রতি মেগাহার্টজে ৩০ মিলিয়ন ডলার। আর থ্রি জির দুই হাজার ১০০ মেগাহার্টজের প্রতি মেগাহার্টজ ২৭ মিলিয়ন ডলার এবং ৯০০ মেগাহার্টজের প্রতি মেগাহার্টজ ৩০ মিলিয়ন ডলার ভিত্তিমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আর টু জি ও থ্রি জি সেবার জন্য বরাদ্দ করা তরঙ্গে প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা পেতে (যাতে ওই তরঙ্গ যে কোনো প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা যায়) প্রতি মেগাহার্টজের জন্য চার্জ দিতে হবে।