December 23, 2024, 3:27 pm

সংবাদ শিরোনাম
গৌরনদী মডেল থানায় বরিশাল জেলার বিদায়ী পুলিশ সুপারকে বিদায়ী সংবর্ধনা জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে গৌরনদীতে নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীতে অসামাজিক কাজে জরিত থাকার অভিযোগে নারী সহ আটক-৩। টঙ্গি ইজতেমার মাঠে হামলার প্রতিবাদ খুনিদের বিচার ও কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবীতে হিলিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে গৌরনদীতে নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীতে ধানক্ষেত থেকে শঙ্খিনী সাপ উদ্ধার দিনাজপুরে “গমের জাত উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তায় স্পীড ব্রীডিং-এর ভুমিকা” শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত পুলিশ ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়, পুলিশ ও জনগণ একে অন্যের পরিপূরক-রেজাউল করিম মল্লিক দলের পরিবর্তন হয়েছে চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি শায়খে চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করীম আপনারা শান্তিতে থাকুন আমরা চাই,আমাদেরকেও আপনারা শান্তিতে থাকতে দিন- ডা. শফিকুর রহমান

প্রযুক্তি ব্যবহারে শিক্ষা ব্যবস্থা এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে: মোস্তাফা জব্বার

প্রযুক্তি ব্যবহারে শিক্ষা ব্যবস্থা এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে: মোস্তাফা জব্বার

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

ডাক ও টেলি যোগাযোগ এবং তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, প্রযুক্তি ব্যবহারে সব সেক্টর যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করলেও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এই সেক্টরে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার নেই বললেই চলে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা এই ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে পারিনি। এই অবস্থার উন্নতি করতে না পারলে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ডিজিটাল যুগের কর্মসংস্থানে অযোগ্য হয়ে পড়বে। এই বিশাল জনসংখ্যা আমাদের ঘাড়ের ওপর বোঝা হিসেবে চেপে বসবে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী। গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরেমশন সার্ভিসেস (বেসিস) কার্যালয়ে ‘বৈশ্বিক অর্থায়ন ব্যবস্থায় ব্লক চেইন- বাংলাদেশের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মোস্তাফা জব্বার। ই-জেনারেশন লিমিটেড এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। সম্প্রতি দুবাই ভিত্তিক ফিনটেক কোম্পানি ‘স্মার্ট ক্রাউড’ এর জন্য ব্লকচেইন ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ভিত্তিক ডিজিটাল বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে ই-জেনারেশন লিমিটেড। মোস্তাফা জব্বার বলেন, গত ৯ বছরে আমাদের অসাধারণ কিছু অর্জন আছে। অনেক বড়বড় কাজ হয়েছে। নতুন নেতৃত্বের দায়িত্ব হলো এর ধারাবাহিকতা ধরে রেখে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়া। প্রযুক্তি যতক্ষণ না মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে, জনগণ যতক্ষণ না তা ব্যবহার করছে, ততক্ষণ প্রযুক্তি কোনো পরিবর্তন আনতে পারে না। মন্ত্রী বলেন, তথ্য-প্রযুক্তি খাতে আমাদের অসাধারণ কিছু অর্জন আছে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা, মোবাইল ফোন ব্যবহার, মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা কাগজহীনভাবে হাতবদল হওয়া, কল্পনার চাইতেও কিছু বেশি অর্জন। কিন্তু শিক্ষাখাতে বলতে গেলে কোনো অর্জনই নেই। দ্রুত এই অবস্থার উন্নতি করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের এখন কর্মী তৈরির পাশাপাশি সৃজনশীল খাতেও আমাদের নজর দিতে হবে। এজন্য আমাদের সাকসেসগুলো সবার সামনে তুলে ধরতে হবে। এতে প্রযুক্তির বাজারে আমাদের দাপট বাড়বে। ব্লকচেইনের মতো নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার সাকসেসফুললি কাজে লাগাতে পারলে এই খাতের আয় একসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির কাছাকাছিও নেওয়া সম্ভব। গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ই-জেনারেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বেসিসের সাবেক সভাপতি শামীম আহসান। বাংলাদেশে ব্লকচেইনের সম্ভাবনা নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসএম আশরাফুল ইসলাম ও সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তিবিদ, উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী ও ইউপ্লাস ইনকর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী শওকত শামীম। এতে আরো অংশ নেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার, এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক একেএম আফতাবুল ইসলাম ও ড. জামাল উদ্দীন। সভাপতির বক্তব্যে শামীম আহসান বলেন, গণমাধ্যমে ইন্টারনেট যেমন ভূমিকা রাখছে, ব্যাংকিংখাতে ব্লকচেইন তেমনই ভূমিকা রাখবে। স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংকিং, রিয়েলস্টেট এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিবর্তন নিয়ে এসেছে এই প্রযুক্তি। মূল প্রবন্ধ উত্থাপনকালে আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিশ্ব দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। ২০১৭ সালে আমরা যে প্রযুক্তি ব্যবহার করেছি, ২০১৮ সালে তা অনেকটাই বদলে যাবে। ডাটার ওপেন এক্সেস এর কারণে কপিরাইট সংরক্ষণ একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে ব্লকচেইন একটি বড় ভূমিকা রাখবে। আমাদের ভূমী রেকর্ড ব্যবস্থাপনায়ও ব্লক চেইন বড় ভূমিকা রাখবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আমাদের জীবনে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারলে আমরা পিছিয়ে পড়বো। টেকনোক্রেট মন্ত্রী হিসেবে গত ২ জানুয়ারি শপথ নেন মোস্তফা জব্বার। পরদিন তাকে দেওয়া হয় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। এদিকে, মন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার এক সপ্তাহ পর গতকাল বুধবার দুপুরে বিটিআরসিতে যান তিনি। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় বিটিআরসিকে সহায়তা করার যে কথা বলেছিলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যালয় পরিদর্শনে গিয়েও তার পুনরাবৃত্তি করেছেন মোস্তফা জব্বার। তিনি বলেছেন, ‘খবরদারি’ করার জন্য নয় বরং বিটিআরসিকে সহযোগিতা করার জন্যই তিনি এসেছেন। তার সময়ে বিটিআরসির কাছে অন্যায় কোনো অনুরোধ করা হবে না বলেও নিশ্চিত করেন তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা থেকে সদ্য মন্ত্রী হওয়া মোস্তফা জব্বার। সেখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মন্ত্রী বলেন, আপনাদের যদি ধারণা হয়ে থাকে মোস্তাফা জব্বার আপনাদের বস হয়ে এসেছেন অথবা আপনাদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এসেছেন বা খবরদারি করার জন্য এসেছেন তবে ধারণাটা ঠিক না। আমি আপনাদের সহযোগিতা করার জন্য কাজ করব। রশি যখন টানবেন তখন অল্প একটু হলেও একটি হাত যুক্ত হবে, ফলে অল্প একটু শক্তি হলেও আপনাদের সাথে যুক্ত হবে। ২০১০ সালে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন সংশোধনের পর টেলিযোগাযোগ সম্পর্কিত ক্ষমতা বিটিআরসি থেকে মন্ত্রণালয়ের কাছে চলে যায়। এরপর থেকে বিভিন্ন ধরনের লাইসেন্স ইস্যুসহ অন্যান্য বিষয়ে বিটিআরসি ও মন্ত্রণালয়ের মধ্যে টানাপড়েন চলে। তারানা হালিম এই বিভাগের প্রতিমন্ত্রী থাকার সময় সংস্থার কাজে স্থবিরতার জন্য মন্ত্রণালয়কে দায়ী করে বিটিআরসিকে স্বাধীন কমিশনে রূপান্তরের পক্ষে চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বক্তব্য দিয়েছিলেন। বিটিআরসির স্থবিরতার জন্য বিভিন্ন কাজে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অনুমোদন পেতে বিলম্ব হওয়াকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছিলেন তিনি। এই খাত নিয়ে এখনো শিখছেন জানিয়ে মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, আমি এখনো শিখছি, জানার চেষ্টা করছি, দিক নির্দেশনা দেওয়া বা অন্যান্য বিষয়ে কথা বলা এ মুহূর্তে মনে করি ঠিক হবে না। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নিজেদের দায়িত্ব সততা ও আন্তরিকতার সাথে পালন করবেন। আমি আপনাদের কাছে অন্যায় কোনো অনুরোধ করব না। যদি আমি ভুলক্রমে করি তবে আমাকে স্মরণ করিয়ে দেবেন আইনসঙ্গত নয়, আমি নিজেকে সংযত করে নেব। আমিও চাইব না আপনারা নীতি বা বিধানের বাইরে কোনো কাজ করেন। টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ইতোমধ্যে অনেক কাজ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে যা যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে করা হয়েছে তা অসাধারণ মাত্রার মধ্যে বিরাজ করে। এই বিরাজ করার জায়গাটা, আমাদের দায়িত্ব তা সামনে নিয়ে যাওয়া। ডিজিটাল মহাসড়ক বানানোর যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ করতে বিটিআরসির সহযোগিতা চান মন্ত্রী। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে নতুন প্রজন্মকে মাথায় রেখে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ইন্টারনেটের গতি বা সাশ্রয়ী মূল্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। আমাদের ইন্টারনেট নিরাপদ করতে হবে, জনগণ যেন নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার করে তা নিশ্চিত করতে হবে। ইন্টারনেট বন্ধ করতে পারব না, নিরাপদ করতে পারব বলে বিশ্বাস করি। বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, আমি যখন এখানে দায়িত্ব নিই, তখন গুঞ্জন উঠেছিল অনেক দিনপর বিটিআরসিতে টেকনিক্যাল লোককে আনা হয়েছে, একই সুরে বলব টেকনিক্যাল সংগঠনের অভিভাবক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী টেকনিক্যাল লোককে আমাদের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রেরণ করেছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদসহ বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর