ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
সব ধর্মের মানুষের সম্মিলনে মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে শুক্রবার বনানী মাঠের পূজামণ্ডপে রাষ্ট্রপতি বলেন, “ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র বা জাতি গঠনের অশুভ চিন্তা থেকে অতীতে জাতিতে জাতিতে বহু সংঘাত হয়েছে, যুদ্ধ হয়েছে। ধর্মের নামে মনুষ্যত্ব, ভ্রাতৃত্ববোধ, সহমর্মিতা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। আমরা সেই ধর্মভিত্তিক জাতি বা রাষ্ট্র গঠনের অশুভ পাঁয়তারা আজও লক্ষ করি। বিশ্ববাসীকে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”
তিনি বলেন, “ধর্ম নয়, ধর্ম নিরপেক্ষতাই হোক দেশ ও জাতি গঠনের বুনিয়াদ। তাই কোনো একক ধর্ম নয়, বরং সকল ধর্মের অনুসারীদের নিয়ে গড়ে তুলতে হবে ধর্মীয় ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন সৌহার্দ্যময় সমাজ ও রাষ্ট্র।
“যেখানে সকল ধর্মের মানুষ পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, পরমতসহিষ্ণুতা, উদার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। ধর্মের সার্বজনীনতা প্রতিষ্ঠিত করবে।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, “ধর্মের ভুল বা অপব্যাখ্যা দিয়ে কেউ যাতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে না পারে সেলক্ষে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে সজাগ থাকতে হবে।”
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপ্রধান হামিদ বলেন, “আদিকাল থেকে এদেশে প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়ে আসছে। এটি এখন আমাদের ঐতিহ্য। সকল ধর্মই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে মানবজাতির জয় ঘোষণা করেছে।
“বিভিন্ন ধর্মের আচার বা চর্চায় পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু মূল সুর ধ্বনিত হয় একই চেতনায়। হিন্দু- মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাই মিলেই আমরা বাঙালি জাতি। অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের স্বাধীনতা। তাই দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী বিশ্বের কাতারে প্রতিষ্ঠিত করাই আমাদের সকলের মূল লক্ষ।”
গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশন আয়োজিত পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রপতি।
অনুষ্ঠানে গুলশান-বনানী পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুধাংশু কুমার দাস বক্তব্য রাখেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, উদযাপন কমিটির সভাপতি সুভাষ চন্দ্র ঘোষ প্রমুখ।