January 16, 2025, 10:08 pm

সংবাদ শিরোনাম
শিবচরে খানকান্দি দৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ শিবচরে খানকান্দি দৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ টেকনাফ ২ বিজিবি”র অভিযানে আটক-৬ লক্ষ্মীপুরে তিন পুলিশ সদস্যকে পেটালেন সিএনজি চালকরা মধুপুরে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত বেনাপোলে বিজিপি বিএসএফ সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হারিয়ে যাওয়া মায়ের খোঁজে দিশেহারা সন্তানরা ভিসা জটিলতায় বেনাপোল বন্দরে পরিবহন ব্যাবসার ধ্বস তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি সম্পন্ন শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি প্রজেক্টরে ভেসে উঠায় স্থানীয় জনতার প্রতিবাদ

গভীর রাতে তুলে নিয়ে বাড়িঘর লুট চেয়ারম্যানের রায় মেনে না নেয়ায় এক বৃদ্ধাকে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ

গভীর রাতে তুলে নিয়ে বাড়িঘর লুট
চেয়ারম্যানের রায় মেনে না নেয়ায় এক বৃদ্ধাকে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ
নরসিংদী প্রতিনিধি

ইউপি চেয়ারম্যানের সালিশের রায় না মানার কারণে জাহানারা বেগম নামে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধাকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থা থেকে বৃদ্ধাকে তুলে নিয়ে পাশের বাড়িতে আটকে রেখে বসতঘর ভেঙে মালামালসহ বৃদ্ধার তলপিতলপা লুটপাট করে ভিটি কুপিয়ে জমি বানিয়ে ফেলা হয়েছে। এসময় বৃদ্ধা জাহানারা বেগম চিৎকার করতে থাকলেও চেয়ারম্যানের লোকজনের ভয়ে আশপাশের কেউ এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি। গত ২১ নভেম্বর রাতে রায়পুরা উপজেলার চরসুবুদ্ধি গ্রামে এই সন্ত্রাসী ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। এব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার মামলা শুনানির দিন বৃদ্ধা জাহানারা ও তার কন্যা নাজমা বেগম আদালতে হাজিরা দিতে গেলে চেয়ারম্যানের লোকজন তাকে সেখান থেকে অপহরণ করার চেষ্টা করে। বৃদ্ধা ও তার কন্যা আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতায় আদালত থেকে পালিয়ে নরসিংদী প্রেস ক্লাব গিয়ে সাংবাদিকদের এ ঘটনা  অবহিত করে।
ভিটেহারা বৃদ্ধা জাহানারা বেগম ও প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘ দিন যাবত জাহানারা বেগমের সাথে চেয়ারম্যান সমর্থক লিটন মিয়ার বাড়ী নিয়ে বিরোধ চলছিল। জাহানারা তার পৈত্রিক ভিটেয় ঘর বেঁধে স্বামীর সংসার করছিল। একমাত্র ছেলে প্রবাসে থাকাবস্থায় দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। একমাত্র মেয়ে নাজমা বেগম স্বামীর বাড়ি শিবপুরে বসবাস করে। জাহানারার বৃদ্ধ স্বামী চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র ব্যবসার মাধ্যমে যা আয় করেন তাতেই তাদের সংসার কোন রকমে চলে। বৃদ্ধার এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে চেয়ারম্যান সমর্থক প্রতিবেশী লিটন মিয়া জাহানারাকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করতে একাধিকবার সালিশের আয়োজন করে। ১০/১২ দিন পূর্বে চেয়ারম্যান হাজী নাছির উদ্দিনের উপস্থিতিতে সর্বশেষ সালিশ হয়। সালিশে চেয়ারম্যান এই বলে রায় দেন বৃদ্ধা জাহানারা বেগম যে ভিটায় অবস্থান করছেন সেটা তার সমর্থক লিটনের  জায়গা। বৃদ্ধাকে এখান থেকে সরে যেতে হবে। সালিশের রায়ের পর থেকে অসহায় বৃদ্ধা তার ভিটেবাড়িতে অবস্থান করছিলেন। রায় মেনে অন্যত্র সরে না যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয় প্রভাবশালী চেয়ারম্যানের সাঙ্গপাঙ্গরা। তারা রায় তামিল করতে ঘটনার দিন রাত প্রায় ৪টায় ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁঠা নিয়ে বৃদ্ধা জাহানারার ঘরে হামলা চালায়। চেয়ারম্যান বাহিনী প্রথমে ঘুমন্ত বৃদ্ধাকে তুলে নিয়ে লিটনের ঘরে আটক করে রাখে। পরে ঘরের মূল্যবান মালামাল, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে ঘর ভাঙতে থাকে। সূর্য্য উঠার পূর্বেই সন্ত্রাসীরা বৃদ্ধার বসতঘর ভেঙে অনত্র সরিয়ে নেয়। ভিটের মাটি কেটে তা জমিতে পরিণত করে। দীর্ঘ তা-বের পর বৃদ্ধাকে ছেড়ে দেয়া হলে সে ভিটেবাড়ি হারা আশ্রয়হীন অবস্থায় খোলা আকাশের নিচে  বসতবাড়ির স্থানে বুক চাপড়ে কান্নাকাটি করে। খবর পেয়ে তার মেয়ে নাজমা বৃদ্ধ মায়ের পাশে এসে দাঁড়ায়। পরে এ ব্যাপারে নাজমা বেগম বাদী হয়ে নরসিংদীর আদালতে মামলা দায়ের করে। এব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান হাজী নাসির উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মালিশে উভয় পক্ষ রায় মেনে নেন। তবে একটি মহল এ ঘটনায় ইন্ধন দিয়ে বৃদ্ধার ক্ষতিসাধন করছে। বৃদ্ধাকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের কথা তিনি এড়িয়ে যান। তবে তিনি বলেন, অতি শীঘ্রই বৃদ্ধাকে তার নিজের জায়গায় ঘর করে দিবো আমার নিজ দায়িত্বে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর