সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়টির দ্রুত সুরাহা হওয়া উচিত: তথ্যমন্ত্রী
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়টির দ্রুত সুরাহা হওয়া উচিত বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য কাজ করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, আমি মন্ত্রণালয়ে নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। আমি মনে করি এ ব্যাপারটির অবশ্যই সুরাহা হওয়া উচিত। তবে এখনই সময় উল্লেখ করে কিছু জানাতে পারছি না। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি কোন জায়গায় আটকে আছে তা খুঁজে বের করে যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি করার ব্যবস্থা করবো। সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের বেতন বাড়াতে নবম মজুরি বোর্ডের সুপারিশ পর্যালোচনায় নতুন মন্ত্রিসভা কমিটি করা হবে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, আজকে মন্ত্রিসভা কমিটির মিটিং করার চিন্তা করেছিলাম, বিগত মন্ত্রিসভায় যারা কমিটির সদস্য ছিলেন তাদের সাথে আমি কথা বলেছিলাম। কিন্তু নতুনভাবে আবার সরকার গঠিত হয়েছে তাই আগের কমিটি দিয়ে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে আজকে ওই কমিটির সভা রাখা সম্ভব হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা নিয়ে নতুনভাবে মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করা হবে, এরপর সেটি নতুন মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় আলোচনা হবে। এরপর আপনাদের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দদের সাথে আমাদের একটি বৈঠক আছে, সেটি সম্ভবত ২৩ তারিখে। এরপর স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করে যত দ্রুত সম্ভব ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন কাজ করব। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত ৩ ডিসেম্বর সংস্কৃতিমন্ত্রীকে প্রধান করে নবম মজুরি বোর্ডের সুপারিশ পর্যালোচনায় মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে শিল্পমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী এবং শ্রমমন্ত্রীকে রাখা হয়। কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালনে রাখা হয় তথ্য মন্ত্রণালয়কে। ২০১৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকদের মূল বেতন ৭৫ শতাংশ বাড়িয়ে অষ্টম মজুরি কাঠামো ঘোষণা করে সরকার, যা ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর ধরা হয়। আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হককে প্রধান করে গতবছরের ২৯ জানুয়ারি ১৩ সদস্যের নবম মজুরি বোর্ড গঠন করা হয়। এরপর গত ১১ সেপ্টেম্বর সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করে সরকার, যা গত ১ মার্চ থেকে কার্যকর ধরা হয়। নবম মজুরি বোর্ডের প্রধান ও আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হক গত ৪ নভেম্বর সচিবালয়ে তখনকার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর হাতে তাদের প্রতিবেদন জমা দেন। মজুরি বোর্ড পাঁচটি শ্রেণিতে ১৫টি বেতনক্রম নির্ধারণে সুপারিশ করেছে জানিয়ে তখন মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছিলেন, প্রথম তিন গ্রেডে ৮০ শতাংশ এবং শেষের তিন গ্রেডে ৮৫ শতাংশ বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নে কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেলেও আরও কিছু ধাপ বাকি আছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এটি করতে গেলে কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হয়। নতুনভাবে মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করতে হবে। সবার সাথে আলোচনা করতে হবে। আরেকটি বিষয় সাংবাদিক বন্ধুরাই নিয়ে এসেছেন, যেটি আমি মনে করি যৌক্তিক। সেটি হল ওয়েজ বোর্ডে টেলিভিশন সাংবাদিকদের যুক্ত করা। ওয়েজ বোর্ড যখন চালু হয় বিটিভি ছাড়া আমাদের দেশে আর কোনো কিছু ছিল না। সেজন্য ওয়েজ বোর্ডের মধ্যে টেলিভিশনের সাংবাদিকরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। এখন তো টেলিভিশন বিরাট ব্যাপার। অনেক টেলিভিশন, সুতরাং বিষয়টা অন্তর্ভুক্ত হওয়া দরকার। তিনি বলেন, একটা ওয়েজ বোর্ড গঠন করার পর টেলিভিশনের জন্য আবার করা ঠিক হবে, নাকি সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে করা ভালো হবে, এগুলো নিয়ে আলোচনা করে যত দ্রুত সম্ভব ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করা হবে। অনেক সময় দেখা যায় যে ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের কথা বলে সেটি প্রকৃতপক্ষে পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হয় না, সে প্রশ্নও আছে। সেগুলো আমরা সরকারের পক্ষ থেকে দেখভাল করব। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, এই আইন সাংবাদিকদের জন্য নয়, সারাদেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য। সাংবাদিকদের মধ্যে এ বিষয় নিয়ে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়েছে তা দূর করার চেষ্টা করব।