মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা নেই। শিক্ষাবোর্ড জানেই না, কিন্তু বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বার্ষিক ও অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা নিচ্ছে। শুধু কি তাই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের নিজ বাড়িতে। শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে বাড়িতে পরীক্ষা হলে সবাই দেখে লিখবে। করোনার ঝুঁকি নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলের বেঁধে দেওয়া সময়ে মধ্যে স্কুলের এসে সকল বেতন পরিশোধ করে পরিক্ষার খাতা ও প্রশ্ন সংগ্রহ করতে বাধ্য করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। অধ – বাষিক পরীক্ষার ফিসের নামে প্রতি শিক্ষার্থীকে ৫০০ টাকাসহ অক্টোবর পর্যন্ত সকল বেতন পরিশোধ করতে বাধ্য করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান । কেউ যদি বেতন পরিশোধ করতে না পাচ্ছে তাদের স্কুল থেকে প্রশ্নপত্র ও খাতা দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। টিউশন ফি পরিশোধ ও অধ – বাষিক পরিক্ষা অংশগ্রহণ না করলে পরবর্তী ক্লাসে না উঠানো হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় বাঘাপুর স্কুল এন্ড কলেজে, রাজাবাড়ি স্কুল এন্ড কলেজ, ইস্পাহানি উচ্চ বিদ্যালয়, কামুর চাঁন উচ্চ বিদ্যালয়,
হাজী রফিক চাঁন উচ্চ বিদ্যালয়সহ কেরানীগঞ্জে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নামমাত্র পরিক্ষা নামে শিক্ষার্থী করোনার ঝুঁকিতেও মুঠোফোনে বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে আসছে।
অভিভাবকরা প্রশ্ন রেখেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কী দেশের আইন-নির্দেশনার বাহিরে কিনা। আর প্রতিষ্ঠানগুলোতে বসে থাকা সরকারি কর্মকর্তা কোন সাহসে সরকারের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে মুঠোফোনে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের
ডোকে নিয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে। করোনাকালে অনেক অভিভাবক কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছে। এই আর্থিক সঙ্কট মুহূর্তে শিক্ষকদের চাপে অসহায় হীন হয়ে পড়ছে অভিভাবকরা।
বাঘাপুর স্কুল এন্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে বেতনের জন্য চাপ দিচ্ছে। যারা পরীক্ষা শেষে বেতন পরিশোধ করছে তাদের অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষার খাতা ও নৈবিত্তিক সহ সব বিষয়ের প্রশ্ন একসাথে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেতনের জন্য আমাকে প্রথম দিন বিদ্যালয় থেকে ফিরিয়ে দিয়েছে। করোনার কারণে বাবা কর্মসংস্থান হারিয়েছি তাই উপায় না পেয়ে আম্মু একজনের কাছ থেকে ধার করে এনে বিদ্যালয়ের বেতন পরিশোধ করে খাতা ও প্রশ্ন নিয়ে এসেছি।
হাজী রফিক চান উচ্চ বিদ্যালয় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী জানান,পরিক্ষায় অংশগ্রহণ না করলে যদি পরে শিক্ষকরা জামেলা করে তাই শিক্ষকদের ভয়ে করোনা ঝুঁকি নিয়েও বিদ্যালয়ে গিয়েছি প্রশ্ন এনেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, স্কুলে বেতন ও পরীক্ষার ফিস পরিশোধ করতে পারলে মিলছে পরীক্ষার প্রশ্ন খাতা। তাহলে কি স্কুলের শিক্ষকরা টাকা কালেকশন এর জন্য নামমাত্র পরীক্ষা নিচ্ছে।
সুশীল সমাজের দাবি, সরকার যেখানে অটো-পাশ এর চিন্তাভাবনা করছে। সেখানে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেপ্টেম্বর মাসে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এভাবে পরীক্ষা নিলে ভালো খারাপ ছাত্রদের রেজাল্ট মানদণ্ড কিভাবে করবে। বাসায় পরীক্ষার প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া কতটুকু যৌক্তিক। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কে হয়তো সরকারের দিক নির্দেশনার পর্যন্ত অপেক্ষা করার প্রয়োজন ছিল। জীবিকা নয়, জীবনের জন্য শিক্ষা প্রয়োজন এই বাস্তবতা শিক্ষকদের উপলব্ধি করার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
এই পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে বাঘাপুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, আমি অসুস্থতা জন্য কিছু দিন বিদ্যালয়ে যাই নি।বেতন জন্য যদি কোন শিক্ষার্থীকে ফিরয়ে দেওয়া হয় তাহলে আমি আন্তরিক দুঃখিত।
এ সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত দেবনাথ বলেন, কোন প্রতিষ্ঠান যদি সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এই কাজ করে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বলেছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে।