September 21, 2024, 5:39 pm

সংবাদ শিরোনাম
দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফর রহমান মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার বন্ধে কুড়িগ্রামে জলবায়ু ধর্মঘট খুলনা দৌলতপুর রেলস্টেশন ও মহসিন মোড় কাঁচাবাজারে এলাকাবাসীর উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা অভিযান সংসার রেখে ডলিতে আসক্ত কয়েছ৷ বিয়ে ছাড়াই এক সাথে বসবাস ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে তিন লাখ জাল টাকা এবং জাল টাকা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদিসহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ যশোরের সাবেক এসপি আশরাফুল সহ ১০ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা কুড়িগ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় প্রভাবশালীদের মৎস্য চাষ প্রতিষ্ঠার পর থেকে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত ক্ষেতলাল পৌরসভার বাসিন্দা উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ সন্ত্রাসী আটক কুড়িগ্রামের চিলমারীতে আশ্রয়নের ঘর বানিজ্য

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ,অভিযোগ থেকে বাঁচতে নানান কৌশল

মোঃ আলমগীর হোসেন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
চৌহদ্দীটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির পাহাড়,শাস্তি না পাওয়ায় ঘটনার পুনরাবৃত্তি,পাঁচ বছরের ব্যবধানে  আবারো প্রধান শিক্ষকের  নানান অনিয়ম  দুর্নীতির বিরুদ্ধে  উপজেলা শিক্ষা অফিসে অভিযোগ, অভিযোগ থেকে বাঁচতে চলছে বিভিন্ন কৌশলচাঁপাইনবাবগঞ্জের চৌহদ্দীটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরান আলীর নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ডুবতে বসেছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষাকার্যক্রম। তার বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসৎ, সেচ্ছাচারিতাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।এছাড়াও সহকারী শিক্ষকের সাথে অসদাচরণ ও অভিভাবকদের সাথে খারাপ আচরণের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক কামরান আলী ও শিক্ষিকা মোর্শেদা পারভীন সীমার বিরুদ্ধে। বুধবার (১৫ জুলাই) এলাকাবাসী ও চৌহদ্দীটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবকগণের সাক্ষরিত অভিযোগটিতে ,প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির বিবরণ এবং এ সকল দুর্নীতির সাথে  প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত রয়েছেন মোর্শেদা পারভীন সিমা নামের একজন শিক্ষিকার নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করা হয় ।এ ছাড়া ও স্কুলের জমিদাতার ছেলে মোঃ ইমরুল কায়েস তিন জন জমিদাতার নাম উল্লেখ করে উপজেলা শিক্ষা অফিসে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে ২০১৫ সালে  অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় চৌহদ্দীটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ”প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির পাহাড়” শিরোনামে খবর প্রকাশ হয়।এসব দুর্নীতির সঠিক বিচার না হওয়ার কারণে নতুন করে ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় লোকজনসহ বিদ্যালয়ের অন্য অন্য  শিক্ষিকাগনের কিছু অংশ। বর্তমানে  অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের শিশু শ্রেণির উপকরণসামগ্রী ক্রয় বাবদ ১০ হাজার টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করে প্রধান শিক্ষক। ভবন সংস্কার ও সাইনবোর্ড স্থাপনের বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করে কোন খাতে ব্যয় করেছেন তার হিসাব নেই, বিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে তার খেয়ালখুশিমতো কাজ করছেন। এমনকি তিনি তার মর্জিমতো স্কুলে যাতায়াত করে থাকেন। এছাড়া জাতীয় দিবস, মা সমাবেশের বরাদ্দ ও শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক। এসব কারণে স্কুলের স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হয়। এর কারণে শিক্ষার গুণগতমান ব্যাহত হচ্ছে। অভিযোগে আরো জানা গেছে- গত ৬ জুলাই জামায়াত নেতা মুনজুর ইসলামকে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য তৈরি করে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বানাতে মরিয়া হয়ে উঠে প্রধান শিক্ষক। এমনকি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়-২ শাখার প্রজ্ঞাপন উপেক্ষা করে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন পদ্ধতিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠে। কমিটি গঠন পদ্ধতিতে শিক্ষক প্রতিনিধি, জমিদাতা সদস্য, অভিভাবক (পুরুষ) ও অভিভাবক (নারী) নেই। এছাড়া সদস্য নির্বাচন ব্যবস্থা কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিনি লটারির মাধ্যমে অসদ উপায় অবলম্বন করে  সদস্য নির্বাচিত করার চেষ্টা করেন  এবং মনোনয়নপত্র  বিক্রয়কৃত টাকাও আত্মসাৎ করে প্রধান শিক্ষক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের সহকারী শিক্ষক বলেন, শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৩শ’ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে বিদ্যালয়টিতে রয়েছেন ৭ জন শিক্ষিকা। প্রধান শিক্ষক আমাদের হুমকি দেন তার বিরুদ্ধে কোনো কিছু বললে আমাদের এসি আরে খারাপ রিপোর্ট  দিবেন। এমন কি ইতিপূর্বে এমন ঘটনার সৃষ্টি করেন। এছাড়াও আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। নিয়ম অনুযায়ী স্কুলের যেকোনো বিষয়ে অন্যান্য শিক্ষদের সাথে পরামর্শ করা কিন্তু আমাদের প্রধান শিক্ষক একক সিদ্ধন্ত নেন। এছাড়াও আমাদের হেয়প্রতিপন্ন করেন।এমন কি উপজেলা শিক্ষা অফিসে অভিযোগ করায়, যেখানে পাবে খুন করবে বলে হুমকি দেওয়ায়,  প্রধান শিক্ষক কামরান আলী এবং তার ভাই আলী ও মো: মোতালেব হোসেনসহ তিন জনকে আসামি করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন জমিদাতার ছেলে মোঃ ইমরুল কায়েস। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী  প্রধান শিক্ষক কামরান আলী নিজেকে বাঁচাতে কৌশলে ২১ জুলাই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের ডেকে নিয়ে,নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সব শিক্ষিকাদের  সাক্ষার নেয়। এ বিষয়ে শিক্ষিকাদের কাছে জানতে চাইলে তারা ভয়ে মুখ খুলতে চাই না ,কারণ এর আগে ২০১৫ সালে প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে তারা কোন বিচার না পাওয়ায় এবং এ,সি,আর খারাপ লিখার ভয়ে বাধ্য হয়েছি সাক্ষর দিতে বলে মন্তব্য করেন কয়েকজন শিক্ষিকা ।এর আগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ কয়েকটি অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের অভিযোগের সত্যতা পান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। তবে অভিযোগের কথা অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক কামরান আলী ০১৭১৩৬৪৬৫০১ নম্বরে জানান, আমি কোনো অনিয়ম করিনি। এলাকার কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে যার কোন ভিত্তি নেই। প্রধান শিক্ষকের এ কথার জবাবে, জানতে চাওয়া হয়, তাহলে তিনি গোপনে স্কুলের শিক্ষিকাদের সাক্ষার নেওয়া কারণ কি ? এর জবাবে প্রতিবেদক কে তিনি বলেন এটি আমাদের অফিসের গোপনীয় বিষয়,যা আপনাকে বলা যাবে না । তাছাড়া বিষয়টিকে চাপা দেওয়ার জন্য তিনি প্রতিবেদকে বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের দ্বারা প্রভাবিত করার অপচেষ্টা ও করেন। বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান ০১৭৩৬৫৮১০০৪ নম্বরে মুঠোফোনে জানান, প্রায় ১৫ থেকে ২০দিন আগে একটি সভা হয়েছিল। সভায় যেহেতু অভিভাবকের সংখ্যা বেশি, সেহেতু ভোটের মাধ্যমেই সদস্য নির্বাচিত হবে।কিন্তু প্রধান শিক্ষকের মতামত অনুযায়ী লটারির কারণে এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে ।  উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর-উন-নাহার রুবিনার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন পদ্ধতির অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি।তাছাড়া অভিযোগের আগের দিন উপজেলা শিক্ষা কমিটির একটি মিটিং করা হয় এবং সে মিটিং এ প্রধান শিক্ষক মোঃ কামরান আলী জমি দাতার  তথ্য গোপন এবং মনোনীত ব্যক্তি কে দাতা হিসেবে নিযুক্ত  করায় তাকে ব্যাখা তলব করা হয়েছে, এবং ব্যাখ্যার জবাবের  সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে জমা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।সাথে ঘটনাটির সঠিক তদন্তের জন্য  দুইজন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে । তদন্তের সত্যতা  সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/৩০ জুলাই ২০২০/ইকবাল
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর