১৫ দিনের মধ্যে ঢাকার গণপরিবহনে শৃঙ্খলা দৃশ্যমান হবে, আশা ডিএমপি কমিশনারের
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
চালক ও পরিবহনের পাশাপাশি পথচারীদের অবহেলার কারণেও সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেছেন, দুর্ঘটনায় কোনো পথচারীর দোষ পাওয়া গেলে প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ঢাকার গণপরিবহনে শৃঙ্খলা দৃশ্যমান করার আশা ব্যক্ত করেছেন পুলিশ কমিশনার। গতকাল বুধবার ধানম-ি-নিউমার্কেট-আজিমপুর রুটে চক্রাকার বাস সার্ভিস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আছাদুজ্জামান মিয়া। মানুষ আইন না মানায় পুলিশের নানা চেষ্টা এবং আন্তরিকতার পরও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব হয়নি বলে সম্প্রতি আরেকটি অনুষ্ঠানেও মন্তব্য করেছিলেন ডিএমপি কমিশনার। বুধবারের অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি চালকদের পাশাপাশি পথচারীদেরকেও দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দেন। চালকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, গাড়ি বাম পাশে দাঁড় করাবেন, অবশ্যই বাস স্টপেজে দাঁড় করাবেন। জেব্রা ক্রসিংয়ের আগেই গাড়ি দাঁড় করাতে হবে। রেস দিয়ে গাড়ি চালাবেন না। মাঝ রাস্তায় গাড়ি আড়াআড়ি দাঁড় করিয়ে কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করবেন না। পথচারীরাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে দৌড়ে রাস্তা পার হবেন না। শিশু কোলে নিয়ে রাস্তা পার হবেন না। মোবাইলে কথা বলতে বলতে, হেডফোন কানে দিয়ে রাস্তা পার হবেন না। একারণে দুর্ঘটনা ঘটে আর দোষ হয় চালকের। এটা তো হতে পারে না। আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, চালক একা দায়ী না। আমরা ভিডিও করছি- যেখানে চালক দায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব, যেখানে গাড়ি দায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব, তবে যদি পথচারীর কারণে দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে আমরা পথচারীর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেব। সবাকেই আইন মানতে হবে, সচেতন হতে হবে। ঢাকার গণপরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে চূড়ান্ত প্রচেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগে উল্টো পথে বাস যেত, গাড়ি যেত। বিভিন্ন প্রশাসনের স্টিকার লাগিয়ে সিগনাল ভাওয়োলেশন করত। হাইড্রোলিক হর্ন বাজিয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ করত। এসব অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা গেছে সম্মিলিত সবার প্রচেষ্টায়। ‘নো হেলমেট নো ফুয়েল’ স্লোগান নিয়ে মাঠে নেমেছি। এখন শতকরা ৯৭ থেকে ৯৮ শতাংশ মানুষ হেলমেট ব্যবহার করে। একটি জায়গায় এখনও আমরা দৃশ্যমান উন্নয়ন আনতে পারিনি। সেটা হচ্ছে গণপরিবহন সেবায়। সম্প্রতি বড় দুটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর বাইরেও প্রতিদিন ছোট ছোট দুর্ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। গত এক সপ্তাহে কিছু দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। পুলিশ কমিশনার বলেন, ছাত্র, স্টেক হোল্ডর ও নগর কর্তৃপক্ষকে সংযুক্ত করে প্রচেষ্টা চলছে। দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি- ডিএমপি, সিটি করপোরেশন, বিআরটিএর যৌথ ব্যবস্থাপনায় আগামি ১৫ দিনের মধ্যে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা দৃশ্যমান করব। আমরা চাইনা আর একটি লাশ পড়ুক। অহেতুক একটা দুর্ঘটনা ঘটুক। গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে চারশ বাস শাস্তির মুখোমুখি হয়েছে বলে জানান তিনি। ডাম্পিং গ্রাউন্ড না থাকার কারণে লক্কর ঝক্কর বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সমস্যা হচ্ছিল। এখন আমিন বাজারে একটি অস্থায়ী ডাম্পিং গ্রাউন্ড দিয়েছে উত্তর সিটি করপোরেশন। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ঢাকা শহরের চারপাশে চারটি ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি করতে হবে। ফিটনেসবিহীন ও ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীদের যদি ডাম্পিংয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তাহলে শৃঙ্খলা আসবে। ইতোমধ্যেই আসতে শুরু করেছে। পাল্লা দিয়ে বাস চালানো বন্ধ করতে ইতোমধ্যেই ঢাকায় কুইক রিসপন্স টিম ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।