জগন্নাথপুরে আমন ধান কাটার ধুম পড়েছে,মাড়াই-ঝাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
জগন্নাথপুরে কৃষকরা ধান কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াই কাজে ব্যস্ত থাকার ছবি
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধানের আশানুরূপ ফলন হয়েছে। সোনালী ধানের মিষ্টি গন্ধে মেতে উঠেছে উপজেলার গ্রাম-গঞ্জের জনপদ। মাঠে মাঠে এখন রোপা আমন ধান কাটা,মাড়াই ও ঝাড়াই পুরোদমে শুরু হয়েছে। চলতি বছরের চৈত্র মাসে সুনামগঞ্জ জেলার প্রতিটি উপজেলার কৃষকের বোরোধান অকাল বন্যায় তলিয়ে নিয়ে যায়। ফলে এসব অঞ্চলের মানুষের ফসলহানিতে চরম বিপর্যয় দেখা দেয়। সরকারি মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকায় ফসল হারা মানুষ বিপর্যয় কাটিয়ে উঠার চেষ্ট চালিয়ে যাচ্ছে।সড়ক ও বেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে হাওর সমূহে পানি প্রবেশ করার ফলে এসব এলাকার কৃষকের অগ্রাহায়নের রোপাআমন ধান চাষআবাদ ব্যাহত হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে।সকল দুর্যোগময় প্রতিকুলতা উপেক্ষা করে দেশের কৃষি ধানের অন্যতম মৌসম অগ্রাহায়নের রোপাআমন ধান এলাকার কৃষকরা চাষাবাদ করেন।ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকরা এখন মাঠে দিনভর ধান কাটার পাশাপশি মাড়াই-ঝাড়াই কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।এবার রোপা-আমনের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে তৃপ্তির হাসি। কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে জগন্নাথপুর উপজেলায় ৮ হাজার ৫শ’৩২ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল।
জগন্নাথপুরে কৃষকরা ধান কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াই কাজে ব্যস্ত থাকার ছবি
উপজেলার রানীগঞ্জ, পাইলগাঁও, আশারকান্দি, মিরপুর, পাটলী,কলকলিয়া সহ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে পাকা ধান কাটার ধুম পড়েছে। এখানের কৃষকরা ধান কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াই কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষকদের বাড়ির আঙিনা ভরে উঠছে সোনালি ধানে। কৃষকদের মুখে মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, গত বোরো মৌসুমে ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে পরিবারের আহার যোগাতে অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। চলতি আমন মৌসুমের শুরুর দিকে যখন বীজতলা তলিয়ে গেলো মনে হয়েছিল পরিবার নিয়ে পথে বসবো। পরে দ্রুত বীজতলা থেকে পানি নেমে যাওয়ায় কিছুটা আশান্বিত হলাম। সাথে সাথে ধানের চারা রোপন করায় এবার ঘরে ফসল তুলছি। তারা আরো জানান, যথাযথ পরিচর্যা ও সময়মত সার ব্যবহার করায় ফলন আশানুরূপ হয়েছে। এক কৃষক প্রতিনিধিকে জানান, তিন বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছিলাম। ফলন ভাল হয়েছে। এবার দামও ভাল পাবো। প্রতিবছর ধান উঠার সময় দাম পড়ে যায়। কৃষকদের মধ্যে ধানের ধর উঠা নামা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন জানান, বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে সময় উপযোগী পদক্ষেপ নিচ্ছে। আধুনিক চাষাবাদের মাধ্যমে অধিক ফসল উৎপাদনে কৃষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, ফসলের পরিচর্যা ও পর্যাপ্ত সার প্রয়োগের ফলে এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যেই আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকরা আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে সব ধান ঘরে তুলতে পারবেন বলে তিনি জানান।