উইন্ডিজের শেষ রক্ষা হলো না ৩৫৬ করেও
ডিটেকটিভ স্পোর্টস ডেস্ক
এভিন লুইসের বিধ্বংসী ১৭৬, আলজারি জোসেফের দুর্দান্ত ৫ উইকেট, স্কোরবোর্ডে ৩৫৬ রানের পাহাড়, শেষ রক্ষা হলো না কোনো কিছুতেই। সিরিজ রক্ষার ম্যাচে প্রবল লড়াই করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ঠিকই জয়ের পথ বের করে নিয়েছে ইংল্যান্ড।
চতুর্থ ওয়ানডেতে বুধবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ৬ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। এক ম্যাচ বাকি রেখে নিশ্চিত করেছে সিরিজ জয়ও।
ওভালে লুইসের অসাধারণ ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তুলেছিল ৩৫৬ রান। ইংল্যান্ড ৩৫.১ ওভারে ৫ উইকেটে ২৫৩ রান তোলার পর বৃষ্টিতে বন্ধ হয় খেলা। সমীকরণে তখন এগিয়ে ইংলিশরা।
আগের ম্যাচে খুনে সেঞ্চুরি করা মইন আলি এদিনও ইংলিশদের নায়ক। শুরুটা দারুণ হলেও আলজারি জোসেফ একাই ৫ উইকেট নিয়ে দমিয়ে দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডকে। জস বাটলারকে নিয়ে মইন শুধু পাল্টা আক্রমণই করেননি, গড়ে দিয়েছেন ম্যাচের ভাগ্য।
মাঠের বাইরের ঝামেলায় এদিন ছিলেন না বেন স্টোকস ও অ্যালেক্স হেলস। ওপেনিংয়ে তাই আবার সুযোগ পান বাজে ফর্মের কারণে বাদ পড়া জেসন রয়। বিশাল রান তাড়ায় ইংল্যান্ডকে পথে রাখেন সেই রয়ই।
উদ্বোধনী জুটিতেই রয় ও বেয়ারস্টো তোলেন ১২৬ রান। তাতে বড় ভূমিকা রয়ের। গত বছর যে মাঠে খেলেছিলেন ১৬২ রানের ইনিংস, সেই মাঠেই ফেরার ইনিংসে করলেন ৬৬ বলে ৮৪ রান।
তবে ইংল্যান্ডের অমন শুরুর পরও ক্যারিবিয়ানদের ম্যাচে ফেরান তরুণ জোসেফ। সিরিজে প্রথমবার মাঠে নামা ফাস্ট বোলার তুলে নেন ৫ উইকেট। রান-বলের সমীকরণে পিছিয়ে পড়ে ইংল্যান্ড।
ষষ্ঠ উইকেটে হিসাব পাল্টে দেন বাটলার ও মইন। পূর্বাভাসে বৃষ্টির সমীকরণ ছিল, বাতাসে ছিল আলামত। সেটি বুঝে ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পথ বেছে নেন দুজন। ৮ ওভারে গড়েন ৭৭ রানের জুটি। তাতেই জয় নিশ্চিত।
৩৫ বলে ৪৩ রানে অপরাজিত বাটলার। আগের ম্যাচে ৫৩ বলে সেঞ্চুরির পর মইন এদিন ২৫ বলে অপরাজিত ৪৮!
ম্যাচের প্রথম ভাগটা ছিল লুইসময়। ক্রিস ওকসের দারুণ বোলিংয়ে ৩৩ রানে ৩ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেখান থেকে দলকে টানেন লুইস।
এমনিতে বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত হলেও এদিন দলের অবস্থা বুঝে লুইস ছিলেন দারুণ নিয়ন্ত্রিত। তবে স্ট্রাইক রেটে সেটির প্রভাব খুব একটা পড়েনি।
চতুর্থ উইকেটে জেসন মোহাম্মদের সঙ্গে গড়েন ১১৭ রানের জুটি। পঞ্চম উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রেকর্ড ১৬৮ রানের জুটি অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের সঙ্গে।
৯২ বলে লুইস স্পর্শ করেন তার দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ছক্কা তার ভীষণ প্রিয় হলেও সেঞ্চুরিতে ছিল না কোনো ছক্কা। তবে এরপরই ফেরেন চেনা রূপে। একের পর এক ছক্কায় দিশাহারা করেন ইংলিশ বোলারদের।
সেঞ্চুরি থেকে দেড়শ যেতে লাগে মাত্র ২৬ বল। এগিয়ে যাচ্ছিলেন ডাবল সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু ওকসের একটি ইয়র্কার ঠিকমত খেলতে না পেরে চোট পান পায়ে। মাঠ ছাড়েন স্ট্রেচারে। নামের পাশে তখন ১৩০ বলে ১৭৬ রান। ১৭টি চারের সঙ্গে ৭টি ছক্কা। ইনিংসের বাকি ছিল তখনও ২২ বল।
লুইস গেলেও ঝড় থামেনি। ১৫ বলে অপরাজিত ২৮ করেন রোভম্যান পাওয়েল। শেষ বলে আউট হওয়া হোল্ডার ৬২ বলে ক্যারিয়ার সেরা ৭৭। শেষ ১০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তোলে ১৩১ রান।
কিন্তু ব্যাটে অমন ঝড়, পরে বল হাতে জোসেফের চেষ্টা; শেষ পর্যন্ত বিফলে গেল সবই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ৩৫৬/৫ (গেইল ২, লুইস ১৭৬ আহত অবসর, হোপ ১১, স্যামুয়েলস ১, মোহাম্মদ ৪৬, হোল্ডার ৭৭, পাওয়েল ২৮*, ওকস ৩/৭১, বল ০/৬৮, প্লাঙ্কেট ১/৬৭, মইন ১/৭০, রুট ০/১০, রশিদ ১/৬৭)।
ইংল্যান্ড: ৩৫.১ ওভারে ২৫৩/৫ (রয় ৮৪, বেয়ারস্টো ৩৯, রুট ১৪, মর্গ্যান ১৯, বাটলার ৪৩*, বিলিংস ২, মইন ৪৮*; টেলর ০/৪৮, হোল্ডার ০/৫২, জোসেফ ৫/৫৬, কামিন্স ০/৪৯, নার্স ০/৩৯, পাওয়েল ০/১০।
ফল: ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ইংল্যান্ড ৬ রানে জয়ী
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ৩-০তে এগিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: এভিন লুইস