মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে কাউকে ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া হবে না: রব
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
দেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে কাউকে ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া হবে না বলে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। গতকাল শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক গোলটেবিল আলোচনায় রব এ হুঁশিয়ারি দেন। ‘সিরাজুল আলম খান–এর ১৪ দফা এবং প্রাসঙ্গিক অদলীয় সংগঠন ও রাজনীতি’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে মুক্ত রাজনৈতিক আন্দোলন নামে একটি সংগঠন। আ স ম আবদুর রব বলেন, গু–ামি করে ক্ষমতায় থাকা যাবে না। হিটলার, মুসুলিনি, আইয়ুব–ইয়াহিয়া পারে নাই। এই দেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে ক্ষমতায় থাকবেন সেটা হবে না, হতে দেওয়া হবে না। সরকার একদিকে বলে নির্বাচনে আসো, আবার বলে আমরা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করব। রাষ্ট্র মিছিল করতে দেয় না, মিটিং করতে দেয় না। রাষ্ট্র মানুষ খুন করে। অপহরণ এখন দুই প্রকার। রাষ্ট্রীয় অপহরণ ও অর্থনৈতিক অপহরণ। এ সরকার হলো ডাকাত, সে নাগরিকের সম্পদ লুট করে। কোনো কোর্ট–কাচারিতে বিচার না করে মানুষকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়। ব্যাংকগুলো কীভাবে লুট হয়ে যাচ্ছে। সব টাকা লুট করে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া সেকেন্ড হোম করা হচ্ছে। বর্তমান ব্যবস্থা জনগণকে ক্রীতদাসে পরিণত করেছে। জেএসডি নেতা বলেন, এটা স্বাধীন দেশের উপযোগী সংবিধান হতে পারে না। সংসদ যদি সব শ্রেণি–পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে গণ–অভ্যুত্থান হবে। নির্বাচনী ব্যবস্থায় সব রাজনৈতিক দল ও অদলীয় ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্ব করতে না দিলে এখানে কেউ গণ–অভ্যুত্থান ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। সরকার বা শাসক বদল নয়, রাষ্ট্র পরিচালনার আইন–কানুন, বিধি–ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে হবে। এখানে আসলে জনগণের কোনো অধিকার নেই। বাংলাদেশ স্বাধীন ছিল মাত্র ২৫ দিন, ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। বিসমিল্লাহ থেকে শুরু করে খোদা হাফেজ পর্যন্ত এই সংবিধানে দুটি শব্দ ছাড়া আর কোথাও জনগণের মালিকানা বা অংশীদারিত্ব নেই। রোহিঙ্গা সমস্যা সম্পর্কে আ স ম রব বলেন, অং সান সু চির সঙ্গে কথা বলে কোনো লাভ হবে না। মিয়ানমারের সংবিধান বুঝতে হবে। সেই দেশ চালায় আর্মি। আপনি দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করতে গেছেন। এখানে জাতিসংঘকে কেন রাখেননি? এখন যে মিয়ানমার উল্টো অভিযোগ করছে। বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে ভারত, চীন, রাশিয়াকে চাপ সৃষ্টি করতে হবে। আপনি একা এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারবেন না।’ অদলীয় রাজনীতি সম্পর্কে রব বলেন, হাজার হাজার পেশাভিত্তিক সংগঠন আছে। যাদেরকে রাজনৈতিক দলগুলো ধারণ করে না। দলীয় রাজনীতির পাশাপাশি অদলীয় পেশাজীবীদের প্রতিনিধিত্ব লাগবে। এ জন্য জেএসডি নেতা দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদ, প্রাদেশিক পরিষদ, স্বশাসিত উপজেলা ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের ওপর জোর দেন। সংগঠনের সভাপতি স্বরূপ হাসান শাহীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মিল্টন হোসেন। আলোচনায় আরো অংশ নেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট তাসমিনা রানা, পেশাজীবী পরিষদের সমন্বয়ক ডা. ম রশীদ আহমেদ, ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান, ড. নোভা মেহজাবিন রহমান প্রমুখ।