December 27, 2024, 8:15 am

সংবাদ শিরোনাম
মধুপুরে অবৈধভাবে মাটি কাঁটার অপরাধে ৬জনের জেল জরিমানা প্রবাসীকে হয়রানির অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে প্রবাসীকে হয়রানির অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে বেনাপোল স্থলবন্দর হ্যাল্ডিং শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিবার্ষিক নির্বাচনে নব নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ ঝিকরগাছা উপজেলায় যুব অধিকার পরিষদের কমিটি ঘোষণা শার্শার উলশী ইউনিয়ন ভিত্তিক ৬ষ্ঠ হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত ১১ বছর পর দেশে ফিরলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির আইন সম্পাদক লিয়াকত সাজাভোগের শেষে ভারত থেকে দেশে ফিরলো ২৬ বাংলাদেশি পুরুষ -নারী বেনাপোল থেকে শুভ উদ্বোধন হলো রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের নবজাতককে পাওয়া গেল রাস্তার পাশে

বাঙালিকে বাঙালি বলে চিনিয়েছেন যিনি, জন্মদিনে তাঁকেই বাঙালি চেনে না

বাঙালিকে বাঙালি বলে চিনিয়েছেন যিনি, জন্মদিনে তাঁকেই বাঙালি চেনে না

বিরল প্রতিভাধর এই বঙ্গতনয়ের হাতেই রচিত হয়েছিল ‘বৃহৎ বঙ্গ’ (১৯৩৫)-এর মতো গ্রন্থ।

Dinesh Chandra Sen

দীনেশচন্দ্র সেন (১৮৬৬-১৯৩৯)

বাংলা ভাষা, বাংলা সাহিত্য এবং সর্বোপরি বাঙালি জাতির আত্মপরিচয়ের শিকড়ের সন্ধান যে ক’জন হাতে গোনা মানুষের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল ১৯ শতকে, দীনেশচন্দ্র সেন (১৮৬৬-১৯৩৯) তাঁদের মধ্যে অন্যতম। বিরল প্রতিভাধর এই বঙ্গতনয়ের হাতেই রচিত হয়েছিল ‘বৃহৎ বঙ্গ’ (১৯৩৫)-এর মতো গ্রন্থ। যেখানে বাঙালিকে একটা বিশেষ মানচিত্রের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে দীনেশচন্দ্র দেখাতে চেয়েছিলেন বৃহত্তর ভৌগোলিকতার প্রেক্ষিতে। নীহাররঞ্জন রায়ের ‘বাঙ্গালীর ইতিহাস’ (১৯৪৯)-এর পূর্বসূরী হিসেবে এই গ্রন্থকেই বাঙালি চিনেছে। আজও তাই চেনে।

দীনেশচন্দ্র সেন (১৮৬৬-১৮৩৯), ছবি: উইকিপিডিয়া

কেবল মাত্র ইতিহাস সন্ধান নয়, দীনেশচন্দ্রের আরও এক অবদান ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’-র উদ্ধার, সম্পাদনা ও প্রকাশ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের জন্মই তাঁর হাতে। রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ পরিকরবৃত্তে দীনেশচন্দ্র ছিলেন অন্যতম। তাঁর সঙ্গে কবির আশ্চর্য সখ্যের কথা বিশদে জানা যায় দীনেশবাবুর পৌত্র কবি সমর সেনের আত্মজীবনী ‘বাবু বৃত্তান্ত’ থেকে। একই সঙ্গে ভগিনী নিবেদিতার সঙ্গেও ভাব বিনিময়ের সম্পর্ক ছিল দীনেশবাবুর। তাঁরা যেমন ঋদ্ধ করেছেন দীনেশবাবুর জ্ঞানচর্চাকে, তেমনই তাঁরা নিজেরাও সমৃদ্ধ হয়েছেন তাঁর সাহচর্য পেয়ে।

‘বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’ (১৮৯৬), ‘রামায়ণী কথা’ ( ১৯০৪), পৌরাণিকী (১৯৩৪) ইত্যাদি প্রায় ৭০টি গ্রন্থের রয়চিতা দীনেশবাবু জীবনের একটা পর্যায় কাটান উত্তর কলকাতার বিশ্বকোষ লেনে, পরে তিনি বেহালায় বাড়ি করেন। তাঁর বেহালার বাড়িটি হয়ে দাঁড়ায় সেই সময়কার কলকাতার সারস্বত চর্চার একটি উল্লেখযোগ্য পীঠস্থান। মনে রাখতে হবে, এই বাড়িতেই কেটেছিল বাংলা আধুনিক কবিতার অন্যতম দিশারী কবি সমর সেনের যুববেলাও।

সমর সেন (১৯১৬-১৯৮৭), ছবি: ইউটিউব

আজ দীনেশচন্দ্রের ১৫০ তম জন্মদিন, আর এই বছরটি তাঁর নাতি কবি সমর সেনের শতবর্ষ। কিন্তু বেহালার সেই বাড়িটি পড়ে রয়েছে চরম অবহেলায়। অথচ এই বাড়ির ভিতরে পড়ে রয়েছে অসংখ্য দুষ্প্রাপ্য বই, দীনেশবাবুর স্মৃতিবিজড়িত অগণিত অ্যান্টিক। দীনেশবাবুর নাতনি দেবকন্যা সেন জানালেন এই অবহেলার কথা। বাঙালির আত্মপরিচয়কে যিনি স্বহস্তে নির্মাণ করে গিয়েছেন, তাঁকে কী করে ভুলে গেল বাঙালি— এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সেই নির্জন, প্রায় পরিত্যক্ত বাড়ির আনাচে-কানাচে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর