ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার অলিয়ারচালা এলাকায় স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়। এতে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে কন্যাসন্তান প্রসব করে। অবশেষে ডিএনএ টেস্টে ওই স্কুল ছাত্রীর সন্তানের পিতৃ পরিচয় পাওয়া গেছে। ধর্ষক নুর মোহাম্মদ আলী (৫০) গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার অলিয়ারচালা এলাকার মৃত কছিম উদ্দিনের ছেলে। ডিএনএ টেস্টের ফলাফল জানাজানি হওয়ার পর নূর মোহাম্মদ এলাকা ছেড়ে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছে স্কুলছাত্রীর পরিবার।
স্কুলছাত্রীর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই স্কুল ছাত্রী অলিয়ারচালা এলাকার নুর মোহাম্মদ আলীর বাড়ির সামনে দিয়ে যাতায়াত করত।এই সুযোগে নুর মোহাম্মদ বিভিন্ন সময় ওই ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এঘটনার একপর্যায়ে হঠাৎ একদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই ছাত্রীকে জোর করে ঘরে নিয়ে যায় নুর মোহাম্মদ।বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ছাত্রীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে একপর্যায়ে মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে নুর মোহাম্মদ। তবে প্রাণভয়ে সে সময়ে ধর্ষণের এ ঘটনা সে কাউকে জানায়নি। পরে তার শারীরিক পরিবর্তন দেখে পরিবারের সন্দেহ হয়। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি তাকে উপজেলার সফিপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। ওই পরীক্ষায় ধরা পড়ে ছাত্রীটি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তখন তার কাছ থেকে ঘটনাটি জানতে পেরে ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে তার মামা বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা (মামলা নং-৮৬(২)/১৭) দায়ের করেন। ওইদিন দুপুরেই নুর মোহাম্মদকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ওই ছাত্রীকে জোরপুর্বক ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করলেও ওই ছাত্রীর গর্ভের সন্তান তার নয় বলে দাবি করে।
পরে পুলিশ ধর্ষককে জেলহাজতে পাঠায়। কিছুদিন পর সে জেল থেকে জামিনে মুক্তি পায়। এ ঘটনার একপর্যায়ে ছাত্রীটি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। পরে আদালতের নির্দেশে শিশুটির পিতৃপরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষায় শিশুটির পিতা নুর মোহাম্মদ আলীর বলে নিশ্চিত করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশের পর নুর মোহাম্মদ গা ঢাকা দিয়েছে। এমনকি কৌশলে দেশের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছে ওই ছাত্রীর পরিবার। এ বিষয়ে টেলিফোনে নুর মোহাম্মাদ জানায় যে তার বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। শেষ বয়সে বিদেশ গিয়ে কি করব ? শিশুটি আমার কিনা তা নিশ্চিত নই। ডিএনএ টেস্ট সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই।’
কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ আজিম হোসেন জানান, নূর মোহাম্মাদ আলীকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। শুনেছি পরে সে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।