December 26, 2024, 10:04 pm

সংবাদ শিরোনাম
প্রবাসীকে হয়রানির অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে প্রবাসীকে হয়রানির অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে বেনাপোল স্থলবন্দর হ্যাল্ডিং শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিবার্ষিক নির্বাচনে নব নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ ঝিকরগাছা উপজেলায় যুব অধিকার পরিষদের কমিটি ঘোষণা শার্শার উলশী ইউনিয়ন ভিত্তিক ৬ষ্ঠ হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত ১১ বছর পর দেশে ফিরলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির আইন সম্পাদক লিয়াকত সাজাভোগের শেষে ভারত থেকে দেশে ফিরলো ২৬ বাংলাদেশি পুরুষ -নারী বেনাপোল থেকে শুভ উদ্বোধন হলো রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের নবজাতককে পাওয়া গেল রাস্তার পাশে ঢাকা সিটির সাংবাদিকদের নিয়প আলোচনা সভা

অব্যাহত অর্থ ফেরতের প্রক্রিয়া

অব্যাহত অর্থ ফেরতের প্রক্রিয়া

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

রিজার্ভের হিসাব থেকে চুরি হওয়া অর্থ ফেরত আনার আইনি প্রক্রিয়া এখনো চলমান বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এ ঘটনার সঙ্গে আন্তর্জাতিক সংঘবদ্ধ চক্রের সম্পৃক্ততার বিষয়টি ইতোমধ্যে বিভিন্ন পক্ষের তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাদের অপরাধ প্রমাণে সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত আছে। চুরি যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের মধ্যে ইতোমধ্যে ফিলিপাইনের আদালতের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংককে ফেরত দেওয়া হয়েছে। বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার ফেরত আনার আইনি প্রক্রিয়া এখন চলমান আছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক ও সহকারী মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদের সই করা এক বিবৃতিতে গতকাল রোববার বলা হয়েছে, এ বিষয়ে ফিলিপাইনের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস সে দেশের আদালতে আইনজীবী নিয়োগ থেকে শুরু করে বাংলাদেশকে সব ধরনের আইনি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে (নিউইয়র্ক ফেড) রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব থেকে মোট ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ২ কোটি ডলার ফেরত পাওয়া গেলেও ফিলিপাইনে পাচার হওয়া অর্থের সিংহভাগ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। রিজার্ভ চুরি যাওয়ার পরপরই গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি) বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও ৭০ হাজার ডলার ফেরত দেয়।

অবশিষ্ট অর্থ উদ্ধারে চারটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফিলিপাইনের সলায়ার ক্যাসিনো থেকে স্থানান্তরিত ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের আদালত জব্দ করেছেন। এ বিষয়টি বর্তমানে সে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন আছে। ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম অংয়ের দুজন কর্মচারীর েিহাবে পাওয়া ১২ লাখ ডলার ফিলিপাইনের আদালতের নির্দেশে জব্দ করা হয়েছে। এ অর্থ আদালতের নির্দেশ ছাড়া অন্য কোথাও স্থানান্তর করা যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংককে এই অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়টি এখন ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলার আঞ্চলিক আদালতে বিচারাধীন আছে।

বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের কাছে থাকা ১ কোটি ৭০ হাজার ডলার উদ্ধারের জন্য ফিলিপাইনের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের (এএমএলসি) সম্পত্তি বাজেয়াপ্তকরণ বিষয়ে মামলা হওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। ইতোমধ্যে ফিলরেমের স্বত্বাধিকারী ব্যক্তিদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে এএমএলসি।

রিজার্ভ চুরির প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার জন্য ফিলিপাইনের আরসিবিসিকেও দায়ী করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, আইনি প্রক্রিয়ায় ফিলিপাইনের আদালতের মাধ্যমে অর্থ উদ্ধারের পর যে পরিমাণ অর্থ অনাদায়ি থাকবে তা আরসিবিসির কাছ থেকে আদায়ের জন্য আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে।

রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধার ও ফেরত আনা এবং বিভিন্ন আইনগত বিষয় আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সুইফটের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভার সূত্রে একটি ত্রিপক্ষীয় বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, যেখানে চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত আনার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়াতে বিশ্বব্যাংক, এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ (এপিজি), এগমন্ট গ্রুপ, ইন্টারপোলের মতো বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

রিজার্ভ চুরির সঙ্গে বিভিন্ন পক্ষের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপাইন, চীন, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশে আলাদা তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানানো হয়েছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। এসব তদন্ত শেষ হওয়ার পরেই অপরাধী শনাক্তকরণ সংক্রান্ত সব তথ্য প্রকাশ করা হবে। তবে অর্থ পাচারের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ফিলিপাইনে ইতোমধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। ফিলিপাইনের সিনেট অধিবেশনের শুনানিতে আরসিবিসির তৎকালীন প্রধান নির্বাহী তাঁর ব্যাংকের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হওয়া সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলেছেন। ইতোমধ্যে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ অভিযোগে আরসিবিসিকে ২ কোটি ১০ লাখ ডলার জরিমানা করেছে। এতে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় আরসিবিসির সংশ্লিষ্ট থাকার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

রিজার্ভ চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চীনে গ্রেপ্তার হওয়া ডিং ঝিজি ও গাও শুহুয়ার বিষয়ে সে দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ অব্যাহত থাকার বিষয়টিও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদে কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এ ধরনের বিভ্রান্তিকর সংবাদ চলমান তদন্ত কার্যক্রমে বিঘœ ও চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর