মোস্তফা মিয়া
২০১৬ সালে সুমন হত্যার নামে দায়েরকৃত মামলাটিতে ১২ জন আসামীকে সুনির্দিষ্ট ভাবে চার্জশিটভুক্ত হয়। পরবর্তীতে প্রায় দীর্ঘ সাড়ে এগার মাস পর নতুন করে বিজিবি সদস্য সাজ্জাদুর রহমান (সাজেদুল) (৩৫) যিনি ঘটনার সময় খাগড়াছড়িতে কর্মরত ছিলেন তাকে সহ তার আতœীয় স্বজনসহ মোট ৫ জনকে আসামী করে রংপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিঃ আমলী আদালত পীরগঞ্জে ২১/০৫/২০১৭ তারিখে জি.আর মামলা দায়ের করা হয় যার নং-জি.আর ৬৩/১৭, জি.আর ১৯৫/২০১৬ যার ধারা দন্ডবিধি আইনের ৩০২/৩৪।
এখানে উল্লেখ্য যে, এজাহারভূক্ত আসামীগনকে বাদী যোগসাজসে মোটা টাকার বিনিময়ে আপোষ নামা তৈরী করে তাদের সকলকে জামিনে মুক্ত করার জন্য জোর তদবির চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় একটি সুত্র।
এই মামলার আই.ও কাজী মোঃ কামরুল হাসান সি.আই.ডি অফিস রংপুর জোন নেপথ্যে সকল আইনি পরামর্শ কৌশল শিখিয়ে দিয়ে পরবর্তীতে ৫ জন নিরপরাধ ব্যাক্তিকে হত্যা মামলায় ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে মামলাটি করিয়ছে।
এ ধরনের কর্মকান্ডের ফলে সি.আই.ডি’র সুনাম ক্ষন্ন হতে চলেছে বিধায় সুমন হত্যা মামলাটি একজন ইন্সপেক্টর অথবা এ.এস.পি পদমর্যাদর কর্মকর্তা দ্বারা মামলাটি তদন্ত হলে প্রকৃত দোষীরা সাজা পাবে ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।
বিষয়টি সি.আই.ডি’র উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টিতে আনার জন্যে এজাহারের মুল হু ব হু কপি ও সাড়ে এগার মাস পরের দায়েরকৃত অভিযোগের কপি পাশাপাশি ছাপানো হল যা দেখলেই পরবর্তী মামলার যোগসাজশে সাজানো ষড়যন্ত্র মূলক মামলাটি বলে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য পরবর্তী সাজানো মামলার ১ নং আসামী সাজ্জাদুর রহমান বিজিবি সদস্য তিনি খাগড়াছড়িতে কর্মরত থাকা সত্বেও মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে তাদেরকে চূড়ান্ত ভাবে মামলায় ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র ও নীল নকশা প্রনীত হয়েছে।
দাবি উঠেছে যে, বর্তমান মামলার আই.ও সাব-ইন্সেপেক্টরকে পরিবর্তন করে একজন ইন্সপেক্টর বা সহকারী পুলিশ সুপারকে মামলাটি তদন্তের ভার প্রদান করা হলে সি.আই.ডি’র ভাবমূর্তি উজ্জল হবে। উল্লেখ্য যে, গত ১ বছর অতিবাহিত হলেও মাত্র ২ জন এজহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাকিরা বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ সাড়ে ১১ মাস পর যে ৫ জনের বিরুদ্ধে সুমন হত্যার অভিযোগ আনা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে গত ১ বছর ধরে মিথ্যা প্রবাকান্ডা ছড়িয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে গৃহ ছাড়া করেছে চক্রান্ত কারীরা।
রংপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিঃ আমলী আদালত, পীরগঞ্জ
ধারা দন্ডবিধি আইনের ৩০২/৩৪ঃÑ
হত্যার সাড়ে ১১ মাস পর দায়ের করা নতুন আসামিদের নাম সহ মামলার কপি হুবহু কপি
নিবেদন এই যে, বাদীর ছেলে মোঃ সুমন মিয়া সে পীরগঞ্জ থানাধীন পাটগ্রাম মাজার শরিফ দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। বাদীর ছেলে সুমন মিয়া অত্র পীরগঞ্জ থানাধীন খষ্ট্রি চারমাথা নিউ মডেল ক্লাব সমিতির সদস্য। উক্ত সমিতিতে বাদীর ছেলে সুমন সহ মোট ১৩ জন সদস্য। উক্ত সমিতিতে বাদীর ছেলে ডিসিস্ট সুমন ছিল ক্যাশিয়ার। ঘটনার তারিখ অর্থাৎ ০৩/০৬/১৬ ইং তারিখ বিকাল অনুমান ৪.০০ ঘটিকার সময় সমিতির মিটিং এর কথা বলিয়া বাদীর ছেলে ডিসিস্ট সুমন বাইসাইকেলে বাড়ী হইতে বাহির হইয়া যায়। উক্ত তারিখেই দিবাগত রাত্রি অনুমান ১২.৩০ টার সময় সমিতির সকল সদস্যগন বাদীর বাড়ীতে আসিয়া বাদীর ছেলে সুমন কোথায় আছে তাহা বাদীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে বাদী বলে সুমন আপনাদের সহিত মিটিং এর কথা বলিয়া বাড়ী হইতে ০৩/০৬/১৬ ইং তারিখে বিকাল অনুমান ৪ টার সময় বাহির হইয়া যায়। কিন্তু সুমন এখন পর্যন্ত বাড়ীতে ফিরে নাই এবং সুমনের মোবাইল ফোনে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যাইতেছে।
সমিতির লোকজন বাদীর নিকট হইতে চলিয়া যাওয়ার পর বাদী সুমনকে কিছু লোকজনসহ খোজা খুজি করিতে থাকেন। কিন্তু বাদী সুমনের কোন সন্ধান পান নাই। বিগত ০৪/০৬/১৬ ইং তারিখ বিকাল অনুমান ৭.৩০ টার সময় জনৈক্য চরন মুর্র্ম, পিতা-মঙ্গল মুর্ম, সাং-বড় আলমপুর আদিবাসীপাড়া, থানা-পীরগঞ্জ, জেলা-রংপুর এর মাধ্যমে বাদী জানতে পারেন বড় আলমপুর মৌজাস্থ জনৈক্য ফুল মিয়ার ইউকিপটাস বাগানের মধ্যে একজন ব্যক্তির মৃত্যুদেহ পড়িয়া আছে। বাদী ও তার লোকজন উক্ত স্থানে গিয়া দেখে উহা বাদীর ছেলে সুমনের লাশ। পরবর্তীতে থানা পুলিশসহ স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারগন ঘটনাস্থলে চলিয়া আসিয়া সুমনের লাশ দেখিতে পাইয়া সনাক্ত করেন। পরে পুলিশ সুমনের লাশ পোষ্টমর্টাম করিয়া বাদীকে লাশ ফেরত দেয়। প্রকাশ থাকা একান্ত আবশ্যক যে, ছেলের মৃত্যুর কারণে এবং মুত্যুর শোকে শোকাহত হইয়া বাদীকে কিছু চক্রান্তকারী ব্যক্তি ভুল বুঝাইয়া সমিতির ১২ জন সদস্যকে আসামী করিয়া পীরগঞ্জ থানায় এজাহার দায়ের করে।
উক্ত এজাহার দায়েরের সময় বাদীকে অসুস্থ্য অবস্থায় স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার দুলা মিয়ার দ্বারা স্যালাইন দেওয়া অবস্থায় চক্রান্তকারীরা বাদীকে মেডিকেল চিকিৎসা করানোর নাম করিয়া থানায় যাইয়া বিগত ০৪/০৬/১৬ ইং তারিখে বাদীর টিপসহি লইয়া এজাহার দায়ের করেন। পরবর্তীতে বাদী কিছুটা সুস্থ্য হইয়া লোকমুখে জানতে পারেন যে, নিউ মডেল ক্লাবের সদস্যরা বাদীর ছেলে সুমনকে হত্যা করে নাই। যারা হত্যা করিয়াছে তাহারা অদ্য দায়ের করা মামলার আসামী এবং তাহারাই চক্রান্ত করিয়া বাদীকে দিয়া পূর্বের মামলা দায়ের করিয়া ছিল।
উল্লেখ্য যে, বাদীর ছেলেকে অদ্য দায়ের করা মামলার ১ নং হইতে ৫ নং আসামী খুন করিয়াছে হেতু আইনত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিজ্ঞ আদালতে আসিয়া বাদী অত্র মোকদ্দমাটি দায়ের করিলেন। বাদী দীর্ঘ সময় অসুস্থ্য থাকার কারণে এবং তাহার মৃত্যু ছেলের হত্যাকারীদের সন্ধান পেয়ে অত্র মোকদ্দমাটি করিতে বিলম্ব হইল। উল্লেখ্য যে, বাদীর ছেলে সুমন এর সহিত নিউ মডেল ক্লাবের সদস্যদের কোন রকম ঝগড়া বিবাদ ছিল না। তবে অত্র মোকদ্দমার ২ নং আসামী সাজু মিয়া, পিতা-মোঃ বাদশা মিয়া, বাদীর ছেলে সুমনের নিকট হইতে ৭০,০০০/- টাকা কর্জ লইয়া কয়েক দিনের মধ্যে দিতে চায়। পরবর্তীতে উক্ত ৭০,০০০/- টাকা ২ নং আসামী সাজু মিয়া সময়
মত বাদীর ছেলে সুমনকে না দিলে সাজু মিয়ার সহিত বাদীর ছেলে সুমনের মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয় এবং ১ নং আসামী সাজ্জাদুর রহমান (সাজেদুল) বাদীর ছেলে সুমনকে গত ০৩/০৬/১৬ ইং তারিখে বিকালে বাইসাইকেলে করিয়া পীরগঞ্জ বাজারে লইয়া যায়। সাজ্জাদুর এর সহিত বাদীর ছেলে সুমনকে বাজারে ঘোরাফিরা করিতে অনেকে দেখিয়াছে।
বিধায় প্রার্থনা উপরোক্ত অবস্থামতে বিজ্ঞ আদালত আইনতঃ ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে আরজি বর্ণিত আসামীদের বিরুদ্ধে দন্ড বিধি আইনরে ৩০২/৩৪ ধারা মতে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার আদেশ দিয়া সু-বিচার করিতে মর্জি হয়।